মহানগর বিএনপির নেতারা ‘দালাল’, ওয়ার্ড কমিটির নামে ‘পকেট কমিটি’ করছেন!
সুরমা টাইমস ডেস্কঃ ‘সিলেট মহানগর বিএনপির বর্তমান আহ্বায়ক কমিটির বেশিরভাগ নেতা ‘ওয়ান ইলেভেনের দালাল’। ১/১১-তে বিএনপির দুঃসময়ে এরা যৌথ বাহিনীর দালালী করে নিজেদেরকে রক্ষার পাশাপাশি দলের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে। সরকার বিরোধী বিগত আন্দোলনেও ওইসব নেতাদের ভূমিকা ছিল প্রশ্নবিদ্ধ। আন্দোলন থেকে দূরে থাকতে কেউ স্বেচ্ছায় কারাবরণ করেছেন, আবার কেউ ছিলেন আত্মগোপনে। মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি দলকে সুসংগঠিত করার পরিবর্তে ধ্বংসের পায়তারায় লিপ্ত।’
শনিবার দুপুরে নগরীর ভাতালিয়ায় সিলেট মহানগর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবদুল কাইয়ূম জালালী পংকীর কার্যালয়ে তৃণমূল নেতাকর্মীর ব্যানারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ বক্তব্য তুলে ধরা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে তৃণমূল বিএনপির পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সিলেট শহর বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মো. কামাল মিয়া।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়- ২০১৪ সালের ৮ নভেম্বর কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দকে ভুল বুঝিয়ে কিছু সুবিধাভোগী, স্বার্থান্বেষিমহল ১/১১ এর দালালদের দিয়ে মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি গঠন করেন।
বিগত দিনে খালেদা জিয়া ঘোষিত অবরোধ ও ৫ জানুয়ারির নির্বাচন বিরোধী আন্দোলনে যারা রাজপথে জীবনবাজি রেখে সক্রিয় ছিল তাদেরকে এই কমিটি থেকে বাদ দেয়া হয়। পক্ষান্তরে কমিটিতে স্থান পান আন্দোলনবিমূখ, প্রবাসী, সুবিধাবাদী এবং তাদের ব্যক্তিগত কর্মচারী ও অনুসারী ব্যবসায়ী পার্টনাররা।
১/১১ এর সময় সিলেট বিএনপি যখন কোথাও দাঁড়াতে পারছিল না, তখন মহানগর বিএনপির তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক আবদুল কাইয়ূম জালালী পংকী বিএনপির দলীয় কর্মকান্ডের জন্য তার কাউন্সিলর অফিসটি ছেড়ে দিয়েছিলেন। ওই সময় তিনি রাজপথেও ছিলেন সক্রিয়। কিন্তু আহ্বায়ক কমিটিতে তাকে যথাযথ মূল্যায়ন করা হয়নি।
মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি ঘোষিত ২৭টি ওয়ার্ড কমিটি অবৈধ দাবি করে সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়- গঠনতন্ত্র অনুযায়ী ওয়ার্ড কমিটি গঠনের এখতিয়ার আহ্বায়ক কমিটির নেই। গঠনতন্ত্র অনুযায়ী মহানগর বিএনপি থানা কমিটি গঠন করবে। থানা কমিটি ঘোষণা করবে ওয়ার্ড কমিটি। কিন্তু বর্তমান আহ্বায়ক কমিটি গঠনতন্ত্রের তোয়াক্কা না করে ত্যাগী নেতাকর্মীদের বাদ দিয়ে ওয়ার্ড কমিটির নামে ‘পকেট কমিটি’ করেছেন।
এতে দলের তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের মাঝে হতাশা ও ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে। তাই তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীরা সংঘটিত হয়ে মহানগরীর ২৭টি ওয়ার্ডের মধ্যে ২৩টিতে নতুন কমিটি গঠন করেছেন। কেন্দ্রকে কমিটির বিষয়টি অবহিত করার জন্য মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবদুল কাইয়ুম জালালী পংকীর কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
লিখিত বক্তব্যে আরও বলা হয়- ১/১১ এর সময় যারা যৌথ বাহিনীর কমান্ডিং অফিসারের সাথে আতাঁত করে দলের তৎকালীন মহাসচিব খন্দকার দেলোয়ার হোসেনকে সিলেট আসতে বাধা দিয়েছিল তারাই মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটিতে মূল্যায়িত হয়েছেন। এদের নেতৃত্বে কমিটি ঘোষণা করায় তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের মাঝে ক্ষোভ বিরাজ করছে।
সংবাদ সম্মেলনে মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি ও তাদের ঘোষিত ওয়ার্ড কমিটিগুলো বাতিল করে ত্যাগী ও পরীক্ষিত নেতাকর্মীদের দিয়ে নতুন কমিটি ঘোষণার দাবি জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- সিলেট মহানগর বিএনপির সাবেক সদস্য আশরাফ উদ্দিন, ২নং ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক সভাপতি সোলেমান হোসেন, ৩নং ওয়ার্ডের সাবেক সভাপতি সামছুদ্দিন আহমেদ, জালালাবাদ থানা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক সেলিম আহমদ, ২৬নং ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক দুলাল আহমদ, শাহপরাণ থানা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক লায়েছ আহমদ, মুক্তিযোদ্ধা দল সিলেট মহানগরের যুগ্ম আহ্বায়ক খসরুজ্জামান খসরু, জেলা ছাত্রদলের সাবেক সমাজসেবা সম্পাদক হুমায়ূন আহমদ, জেলা যুবদলের প্রতিষ্ঠাতা সহ সভাপতি হারুনুর রশীদ সংগ্রাম, ৮নং ওয়ার্ডের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সিরাজ খান, এডভোকেট আকতার বকস জাহাঙ্গীর, ৩নং ওয়ার্ডের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক রাজিব কুমার দেব রাজু, এম এ লাহিন, সাবেক ছাত্রদল নেতা হেলাল আহমদ, আলী আহমদ ফারুক, হাফিজ নূরুল ইসলাম, ২নং ওয়ার্ডের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মাসুদ আহমদ, ১৩নং ওয়ার্ডের প্রদীপ পাল প্রমুখ।