সিলেট সংস্কৃতি কেন্দ্রের হিজরী নববর্ষ উদযাপন

সিলেট সংস্কৃতি কেন্দ্রের হিজরী নববর্ষ উদযাপন উপলক্ষ্যে আলোচনা সভায় বক্তারা

মুসলিম জাতিসত্ত্বার ক্রমবর্তমান বিকাশধারায় বিশ্বনবী (সা:)- এর হিজরত ও হিজরী নববর্ষ গুরুত্বপুর্ন ভুমিকা পালন করে

Sylhet Sangskrity Kendro Hijri NoboBorso Programme Photi-16-10-15হিজরী নববর্ষ ১৪৩৭ হিজরী উদযাপন উপলক্ষ্যে অনুষ্ঠিত আলোচনায় বক্তারা বলেছেন, ঐতিহাসিক কাল ধরেই মহররম মাস গুরুত্ব ও তাৎপর্য বহন করে আসছে। এ মাসেই আল্লাহর নির্দেশে মানবতার মুক্তিদুত মহানবী হযরত মোহাম্মদ (সাঃ) মক্কা থেকে মদীনায় হিজরত করেন। হিজরী নববর্ষের শুরুতে মুসলিম মিল্লাতের সামনে হাজির হয় আনন্দ ও বেদনা ভারাক্রান্ত ঐতিহাসিক ঘটনাবলীর কথা। হৃদয়ের স্মৃতিপটে ভেসে উঠে কারবালার মর্মান্তিক দৃশ্যপট। ইয়াজিদের বর্বরতা আর সীমারের নিষ্ঠুরতার ঘটনায় আজো মানুষ শিউরে ওঠে মর্মবেদনা প্রকাশ করে। ইসলামের ইতিহাসে তারা রচনা করেছিল কলঙ্কজনক অধ্যায়ের। ইসলামের ইতিহাসে মহররম মাস খুবই তাৎপর্যপূর্ণ। আল্লাহ তায়ালা যে চারটি মাসে যুদ্ধ বিগ্রহ হারাম ঘোষণা করেছেন তার মধ্যে মহররম মাস অন্যতম। এ মাসের দশম দিন পবিত্র আশুরা। এদিন রাসূল (সাঃ) এর দৌহিত্র ইমাম হোসাইন বিন আলী (রাঃ) সঙ্গী সাথীদের নিয়ে ইয়াজিদের সৈন্যদের হাতে কারবালার মরুপ্রান্তরে নির্মমভাবে শাহাদাত বরণ করেন। তাই মুসলিম জাতিসত্ত্বার ক্রমবর্তমান বিকাশধারায় হিজরত ও হিজরী নববর্ষ গুরুত্বপুর্ন ভুমিকা পালন করে। আজ দেশে বিদেশে ইসলাম, মুসলমান ও ইসলামী সংস্কৃতির বিরুদ্ধে দেশী-বিদেশী শক্তির বহুমুখী ষড়যন্ত্র চলছে। আধিপত্যবাদী ও সাম্রাজ্যবাদী শক্তির সকল ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ে তোলার বৃহৎ স্বার্থে ইসলামের সুমহান আদর্শ তরুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে হবে।
গতকাল শুক্রবার হিজরী নববর্ষ ১৪৩৭ উদযাপন উপলক্ষে সিলেট সংস্কৃতি কেন্দ্র আয়োজিত “হিজরতের গুরুত্ব ও তাৎপর্য শীর্ষক” আলোচনা সভায় উপস্থিত নেতৃবৃন্দ উপরোক্ত কথাগুলো বলেন। সিলেট সংস্কৃতি কেন্দ্রের সভাপতি অধ্যক্ষ কবি কালাম আজাদ-এর সভাপতিত্বে ও পরিচালক জাহেদুর রহমান চৌধুরীর পরিচালনায় অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ড. এটিএম মাহবুবে এলাহী।
বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জালালাবাদ টিচার্স ট্রেনিং কলেজের অধ্যক্ষ হাসমত উল্লাহ। মুখ্য আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন সিলেট ক্যাডেট মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল ড. এএইচএম সুলায়মান। বক্তব্য রাখেন অধ্যাপক কবি বাছিত ইবনে হাবীব, লেখক কলামিষ্ট আবু মালিহা, অধ্যাপক ছুরাব আলী, কবি নাজমুল আনসারী, প্রভাষক জিন্নুরাইন চৌধুরী, শিশু সংগঠক এডভোকেট জুনেদ আহমদ, সীমান্তিকের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য বশির আহমদ প্রমুখ।
সভাপতির বক্তব্যে কবি কালাম আজাদ বলেন, আমাদের তরুন প্রজন্ম ইসলামের সুমহান আদর্শমন্ডিত ইতিহাস আজ ভুলতে বসেছে। পাশ্চাত্য সাংস্কৃতির আগ্রাসনে হিজরী সন পালনে আমাদের সমাজ আজ অনেক পিছিয়ে রয়েছে। অথচ বাংলা নববর্ষ ও ইংরেজী নববর্ষ উদযাপনের নামে আমাদের যুবসমাজকে অশ্লীলতা নৈতিক অবক্ষয়ের দিকে ঠেলে দেয়া হচ্ছে। এ থেকে উত্তরনের জন্য মুসলিম জাতিসত্ত্বার মৌলিক ইতিহাস জানতে তরুন প্রজন্মকে উদ্ধুদ্ধ করতে হবে।