ঘুষ নিয়ে ঘুষাঘুষি ॥ দক্ষিণ সুরমা থানার ওসি-এসআই বদলি
সুরমা টাইমস ডেস্কঃ দক্ষিণ সুরমা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খায়রুল ফজল ও দক্ষিণ সুরমা পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই শফিকুল ইসলাম খানকে বদলী করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার তাদেরকে বদলী করা হয়। বদলীর অনেক কারণ থাকলেও মহানগর পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বলছেন, স্বাভাবিক নিয়মেই তাদের বদলী করা হয়েছে।
সূত্র জানায়, দক্ষিণ সুরমার কদমতলী সাইফুল ইসলাম পলাশকে অপহরণ মামলার আসামি পলাশের স্ত্রী লিনা বক্সকে রিমান্ডে নেয়ার জন্য আদালতে আবেদন করেন এসআই শফিকুল ইসলাম খান। ১০ দিনের রিমান্ড চাইলে আদালত ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। অপহরণের ঘটনাকে ভিন্নখাতে প্রভাবিত করার জন্য আসামি পক্ষ পুলিশকে মোটা অঙ্কের টাকা দেয়। যার কারণে রিমান্ড মঞ্জুর হলেও লিমাকে গতকাল মঙ্গলবার পর্যন্ত রিমান্ডে আনা হয়নি। আর এই টাকার ভাগাভাগি নিয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ ও থানার ওসির মাঝে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এরপর বিষয়টি মহানগর পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তা পর্যন্ত গড়ায়। বদলি করা হয় ওসি খায়রুল ফজলকে দক্ষিণ সুরমা থানা থেকে। তাকে এয়ারপোর্ট ইমিগ্রেশনে সংযুক্ত করা হয়। আর ফাঁড়ির ইনচার্জকে পুলিশ হেডকোয়াটারে সংযুক্ত করা হয়।
অবশ্য এ বিষয়ের সাথে ভিন্নমত প্রকাশ করে মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (দক্ষিণ) জেদান আল মূসা গণমাধ্যমকে জানান, স্বাভাবিক নিয়মেই তাদেরকে বদলী করা হয়েছে। ওসি খায়রুল ফজলকে এয়ারপোর্ট ইমিগ্রেশনে ও ফাঁড়ির ইনচার্জকে পুলিশ হেডকোয়াটারে বদলী করা হয়েছে। তাদের মাঝে কোনো বাকবিতান্ডা হয়নি বলে দাবি করেন তিনি। জেদান আল মূসা বলেন, দাক্ষিণ সুরমা থানার নতুন ওসি হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে সিটিএসবি ইন্সিপেকটর আতাউর রহমানকে। আর ফাঁড়ির দায়িত্ব এখনও কাউকে দেয়া হয়নি।
এদিকে, ফাঁড়ির ইনচার্জ শফিকুল ইসলাম খান ও থানার ওসি খায়রুল ফজলকে বদলির পেছনে রয়েছে নানা কারণ।
জানা গেছে, গত বছর ২৮ নভেম্বর দক্ষিণ সুরমা থানার তৎক্ষালিন ওসি মো. মুরসালিনকে বদলি করে থানার নতুন ওসির দায়িত্ব দেয়া হয় খায়রুল ফজলকে। ওইদিন রাত ও পরদিন দিনে ওসি মুরসালিনের কাছ থেকে দায়িত্ব বুঝে নেন ওসি খায়রুল ফজল। জনশ্রুতি রয়েছে ওসি খায়রুল আওয়ামী লীগের এক শীর্ষ নেতার তদবিরে দক্ষিণ সুরমা থানার দায়িত্ব পান। দায়িত্ব নেয়ার ৪ মাসের মাথায় নানা কারণে তিনি পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তা এমনকি থানা জুনিয়র অফিসারদের কাছে বিতর্কিত হন। সম্প্রতি খায়রুল একটি মামলা সংক্রান্ত ব্যাপার নিয়ে পুলিশের এক উর্ধ্বতন কর্মকর্তার সাথেও তর্কে জড়িয়ে পড়েন।
তিনি দক্ষিণ সুরমা থানায় যোগদানের পর একেরপর এক নাশকতা, চুরি, ছিনতাই ও ডাকাতি হয়। চলমান সরকার বিরোধী আন্দোলনকে ঘিরে থানা এলাকায় আড়াই মাসে ১৪টি নাশকতার ঘটনা ঘটে। দুটি ডাকাতিসহ প্রতিদিনই ঘটছে সন্ত্রাসী কর্মকান্ড। পেট্রল বোমায় তেতলি আহমদপুর এলাকায় এক সিএনজি চালিত অটোরিকশা চালক শ্রমিকলীগ নেতা শাহজাহান মারা যান। আহত হন আরো অনেকেই।