জাফলংয়ে হচ্ছে ‘পর্যটন জোন’, বসানো হবে কেবলকার, উঁচু টাওয়ার

Jaflongডেস্ক রিপোর্টঃ প্রকৃতি অপারহস্তে সাজিয়েছে সিলেটকে। নান্দনিক সৌন্দর্য্যরে এক কল্পিত রাণী যেন সিলেট। আর জাফলং হচ্ছে সিলেটের অন্যতম প্রধান সৌন্দর্য্যরে লীলাভূমি। বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা) এই জাফলং এলাকাতেই ‘পর্যটন জোন’ গড়ে তোলার উদ্যোগ নিয়েছে।

জাফলং এলাকাতে বিদেশি পর্যটকদের আকর্ষণ করতে কেবলকার এবং উঁচু টাওয়ার বসানোর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। তাছাড়া আন্তর্জাতিকমানের পর্যটক মোটেলও নির্মাণ করা হবে। সার্বিক অবস্থা যাচাইয়ে সম্প্রতি বেজার’র চেয়ারম্যান পবন চৌধুরীর নেতৃত্বে চার সদস্যের একটি দল জাফলং এলাকা ঘুরে গেছে।

সিলেট শহর থেকে প্রায় ৫৯ কিলোমিটার দূরে ভারতের মেঘালয় প্রদেশের সীমান্তঘেঁষে জৈন্তাপুর জাফলংয়ের অবস্থান। মেঘালয়ের বিস্তৃত সুউচ্চ পাহাড়চূড়া জাফলংকে দিয়েছে ভিন্নমাত্রা। জাফলং এলাকায় আঁকাবাঁকা সড়কপথ পার্বত্য অঞ্চলের কথা মনে করিয়ে দেয়। পাশেই রয়েছে তামাবিল জিরো পয়েন্ট।

জাফলং এলাকাতেই রয়েছে গ্রিন পার্ক, খাসিয়াপুঞ্জি, জুমচাষ, সাতকরা ঝোম, কমলা বাগান, পিকনিক সেন্টার, পাথর কোয়ারি। রয়েছে উঁচু-নীচু অসংখ্য পাহাড়চূড়া, চা বাগান, পাখপাখালিদের কলতান। স্বচ্ছ নীলাভ জলের পিয়াইন নদী তো রয়েছেই। জাফলংয়ের আশপাশেই রয়েছে জৈন্তার রাজবাড়ি, সবুজাভ পাহাড়ে ঘেরা আর পাথুরেনদীর বিছনাকান্দি।

সারাবছর জাফলং এলাকা থাকে পর্যটকে মুখরিত। শীত, গ্রীষ্ম, বর্ষা কোনো নির্দিষ্ট সময় নেই; পুরো বছরই, সব মৌসুমে জাফলং ও আশপাশের মনোহরিণী সৌন্দ্যর্যের টানে হাজার হাজার পর্যটক ছুটে আসেন। এই এলাকার পর্যটনের অপার সম্ভাবনার বিষয়টি মাথায় রেখেই বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা) পর্যটন জোন গড়ে তোলার উদ্যোগ নিয়েছে।

জানা গেছে, জাফলং এলাকাকে সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনার আওতায় নিয়ে আসবে বেজা। এখানকার অবকাঠামোকে ঢেলে সাজানো হবে।

এ ব্যাপারে জৈন্তাপুর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) শেখ শহিদুল ইসলাম বলেন, জাফলং ও বিছানাকান্দির প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগের জন্য প্রতিদিন গড়ে এক থেকে দেড় হাজার পর্যটক আসেন। পুরো এলাকাকে ব্যবস্থাপনার আওতায় আনতে পারলে এখানে প্রচুর বিদেশি পর্যটকের দৃষ্টি আকর্ষণ করা সম্ভব হবে।

জাফলংকে পরিকল্পিত পর্যটন শিল্পের আওতায় আনা প্রসঙ্গে বেজার চেয়ারম্যান পবন চৌধুরী গণমাধ্যমকে বলেছেন, এ এলাকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য বিদেশি পর্যটকদের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য ব্যপক সম্ভাবনাময়। শুধু পরিকল্পনার অভাবে সরকার এ রকম একটি সম্ভাবনায়ময় শিল্পের অর্থনৈতিক মূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

তিনি বলেন, রাস্তাঘাট উন্নয়নের পাশাপাশি পর্যটকদের চিত্তবিনোদনের জন্য কেবলকার, সীমানার ওপাশের ভারতীয় পাহাড় দেখার জন্য উঁচু টাওয়ার, আন্তর্জাতিক মানের পর্যটন মোটেল তৈরির মাধ্যমে পুরো এলাকাকে পরিকল্পনার আওতায় আনার জন্য খুব শিগগিরই উদ্যোগ নেবে বেজা। এ ছাড়া পুরো এলাকার পাথর ভাঙার প্রক্রিয়াকেও প্রস্তাবিত জোনের অধীনে আনা হবে। যততত্র পাথর ভাঙার প্রক্রিয়াকে সমন্বয়ের মাধ্যমে সরকারিভাবে একটি বৃহৎ জোনের আওতায় আনলে সেটিও পর্যটকদের কাছে দর্শনীয় একটি স্থানে পরিণত হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।