ইসরাইলী গণহত্যার বিরুদ্ধে অপরাধীদের জাতিসংঘের বিচারের মুখোমুখী করা উচিত

বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ড. এ কে মোমেন

এনা: গত ৬ আগষ্ট (নিউইয়র্ক সময়) বুধবার জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে গাজা বিষয়ে আলোচনা অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ড.এ.কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, প্যালেস্টাইনে ইসরাইলী গণহত্যা এবং ‘মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধীদের’ জাতিসংঘের বিচারের মুখোমুখী করা উচিত। সাধারণ পরিষদের এই আলোচনায় বাংলাদেশসহ জাতিসংঘের পঞ্চাশটির মত সদস্য রাষ্ট্র অংশগ্রহণ করে। আলোচনায় জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি মুন, জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের সভাপতি জন এ্যাশ, ইউএন হাইকমিশনার ফর হিউম্যান রাইটস নাভী পিলাই, ইউএন আন্ডার সেক্রেটারী জেনারেল ভেলরী আমুস ও গাজায় অবস্থানরত ইউএনডিপি কান্ট্রি রিপ্রেজেনটেটিভ বক্তব্য রাখেন।
আলোচনায় ড.এ.কে আব্দুল মোমেন প্যালেস্টাইনে ইসরাইলী গণহত্যায় মানবিক বিপর্যয়ে বিশ্ব নেতৃত্বের ব্যর্থতার অভিযোগ না আনলেও উদাসীনতার কথা স্পষ্ট করে বলেছেন। প্রসঙ্গত তিনি বলেন, ১৮৫০ প্যালেস্টাইনী ও ৩ জন ইসরাইলী সিভিলিয়ান নিহত হওয়ার বিষয়টি সত্যিই দুঃখজনক, অমানবিক এবং যুদ্ধ বিষয়ক আন্তর্জাতিক আইন ও জেনেভা কনভেনশন বিরোধী। এভাবে নির্বিচারে নারী, শিশু ও বেসামরিক সাধারণ মানুষ হত্যা সভ্যতা বিরোধীও বটে। কোন অজুহাতেই ইসরাইল গাজায় সুসজ্জিত সামরিক আক্রমণের দায় এড়াতে পারে না।
জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূত ড.এ.কে আব্দুল মোমেন আরও বলেন, আমাদেরকে আজ এক হৃদয় ভারাক্রান্ত মনে এখানে কথা বলতে হচ্ছে। জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্র ইসরাইল কর্তৃক আন্তর্জাতিক সকল বিধি-নিষেধ অমান্য করে ফিলিস্তিনিদের উপর অমানবিক ধ্বংসযজ্ঞ চালানো হচ্ছে। জাতিসংঘ নির্মম এই হত্যাযজ্ঞ ও আগ্রাসী তৎপরতাকে ‘মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ’ হিসাবে গণ্য করে সময় উপযুক্ত কাজ করেছে। এ কারণে প্যালেস্টাইনে ইসরাইলী গণহত্যা এবং মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধীদের জাতিসংঘের বিচারের মুখোমুখী করা উচিত বলে তিনি দাাব করেন। স্থায়ী প্রতিনিধি প্যালেস্টাইনীদের প্রতি বাংলাদেশ সরকার ও জনগণের সহমর্মিতা, ভ্রাতৃত্ববোধ ও অকুন্ঠ সমর্থন পূনর্ব্যক্ত করেন।
স্থায়ী প্রতিনিধি ড.এ.কে আব্দুল মোমেন তাঁর বক্তব্যে নিরীহ প্যালেস্টাইনীদের উপর ইসরাইলী হত্যাযজ্ঞ বন্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নিরাপত্তা পরিষদ ও বিশ্ব নেতৃত্বকে জোর অনুরোধ জানান। কারণ দরিদ্র ও নিরস্ত্র প্যালেস্টাইনীদের এবং একইসঙ্গে ইসরাইলীদের সমভাবে, স্বাধীনভাবে এবং নিরাপদে বাঁচার অধিকার রয়েছে। বিশ্ব জনমত কখনোই কোন ধরনের আগ্রাসী তৎপরতা সমর্থন করে না। যা ইসরাইল গাজার উপর চালিয়ে যাচ্ছিল। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন যে, নিরাপত্তা পরিষদ প্যালেস্টাইনীদের উপর ইসরাইলী ধ্বংসযজ্ঞ বন্ধে এবং ইসরাইল-প্যালেস্টাইন সমস্যার দীর্ঘস্থায়ী রাজনৈতিক সমাধানের জন্য নিরপেক্ষ মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা পালন করবে যাতে করে ইসরাইল ও প্যালেস্টাইন দুটি স্বাধীন দেশ হিসেবে শান্তিপূর্ণভাবে সহাবস্থান করতে পারে। এতে জাতিসংঘের প্রতি বিশ্ববাসীর বিশ্বাস ও আস্থা দৃঢ় থেকে দৃঢ়তর হবে।