নিউইয়র্কে বাংলাদেশ কনস্যুলেট থেকে প্রধানমন্ত্রীর ছবি উধাও, তীব্র প্রতিক্রিয়া
সুরমা টাইমস ডেস্কঃ নিউ ইয়র্কে বাংলাদেশ কনস্যুলেট অফিস থেকে আকস্মিকভাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি উধাও হবার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় প্রবাসীদের মাঝে চলছে নানা গুঞ্জন। স্থানীয় আওয়ামীলীগসহ মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের নেতা-কর্মিরা এ ঘটনার নিন্দা জানিয়েছেন। নেতা-কর্মিদের মাঝে তীব্র প্রতিক্রিয়া বিরাজ করছে। নিউ ইয়র্কের স্থানীয় সময় দুপুর আড়াইটার দিকে ম্যানহাটানে বাংলাদেশ কনস্যুলেট অফিসে থেকে টাঙানো প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবিটি হঠাৎ উধাও হয়ে যায়। এ সময় কনসাল জেনারেল শামীম আহসান অফিসের কাজে বাইরে ছিলেন। দ্রুত বিষয়টি ডেপুটি কনসাল জেনারেল শাহেদুল ইসলামকে জানানো হয়। গত শুক্রবার হওয়ায় দুপুর একটার পর কনস্যুলেট অফিসের একজন নারী কর্মকর্তা ও দুজন স্টাফ ছাড়া অন্যরা মধ্যহ্ন বিরতিতে জুমার নামাজ পড়তে বাইরে মসজিদে যান। অফিসে তখন ভিসা সংক্রান্ত কাজে আসা কয়েকজন দর্শনার্থী ছিলেন। নামাজ শেষে দুপুর আড়াইটার দিকে কনস্যুলেটের একজন স্টাফ ফিরে এসে দেখেন অফিসে ঢোকার মুখে টাঙানো বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের পাশে টানানো প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবিটি নেই। ডেপুটি কনসাল জেনারেল শাহেদুল ইসলাম নামাজ শেষে অফিসে ফিরে এলে তাকে ঘটনাটি জানানো হয়। প্রশাসনিক কর্মকর্তা সুলতানা পারভিন চৌধুরী এবং পরে শাহেদুল ইসলাম কনসাল জেনারেল শামীম আহসানকে ঘটনা অবহিত করেন। এসময় কনসাল জেনারেল সোনালী এক্সচেঞ্জের একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে অফিসের বাইরে ছিলেন। পরে স্টেট ডিপার্টমেন্টসহ হোম ল্যান্ড সিকিউরিটিকে বিষয়টি জানানো হয় । প্রধানমন্ত্রীর ছবি খোয়া যাওয়ার পরপর অফিসের ভেতরে ও বাইরে বিভিন্ন স্থানে তারা সন্ধান করতে থাকেন। এক পর্যায়ে কনস্যুলেটের একজন স্টাফ দেখতে পান বিল্ডিংয়ের পেছনে নিচে প্রধানমন্ত্রীর ছবিটি পড়ে আছে। ছয়তলার বাথরুমের পাশে বাইরে যাওয়ার সিড়ির কাছে জানালা দিয়ে কেউ ছবিটি নিচে ফেলে দিয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। কারণ প্রধানমন্ত্রীর ছবির ফ্রেমের কাঁচটি ভেঙে গেছে। ছবিটি পরে তুলে আনা হয় এবং নতুন একটি ছবি পুনঃস্থাপন করা হয়েছে বলেও জানায় কন্স্যুলেট কর্তৃপক্ষ। কনস্যুলেট অফিস সূত্র জানায়, ঘটনাটি বিল্ডিং কর্তৃপক্ষকেও জানানো হয়েছে। সোমবার পর্যন্ত সরকারি ছুটি থাকায় মঙ্গলবার ছয়তলার সিসি ক্যামেরার ফুটেজ পরীক্ষা করে দেখা হবে বলে জানায় সূত্রটি। হোমল্যান্ড সিকিউরিটিকে জানানোর পর তারাও নিউইয়র্ক পুলিশ ডিপার্টমেন্টকে বিষয়টি অবহিত করেছে। হোমল্যান্ড সিকিউরিটি এবং পুলিশও ঘটনা তদন্তে মঙ্গলবার কনস্যুলেট পরিদর্শন করবে বলে দায়িত্বশীল সূত্রটি নিশ্চিত করেছে। এ বিষয়ে কনসাল জেনারেল শামীম আহসান সাংবাদিকদের বলেন, তিনি ঘটনাটি শোনার সাথে সাথেই বিল্ডিং কর্তৃপক্ষ, স্টেট ডিপার্টমেন্ট স্বাগতিক দেশের সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সংস্থা কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছেন। সত্য উদঘাটনে তিনি সচেষ্ট রয়েছেন। ঘটনাটি দেশ, সরকার কিংবা কনস্যুলেটকে হেয় করার জন্যই কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠী ঘটিয়েছে। যে বা যারাই করুক অসৎ উদ্দেশ্য নিয়েই করেছে। কন্স্যুলেট আরেকজন দায়িত্বশীল একজন কর্মকর্তার মতে, এটি একটি স্যাবোটাজ ছাড়া কিছুই নয়। খুব শিগগিরই ঘটনার রহস্য উদঘাটিত হবে বলে তিনি মনে করেন। উল্লেখ্য, সম্প্রতি ম্যানহাটানের সেকেন্ড এভিনিউ থেকে নিউইয়র্কের কনস্যুলেট অফিসটি সিক্স এভিনিউয়ের ৩৩ স্ট্রিটে স্থানান্তর করা হয়। নতুন হওয়ায় অফিসটিতে এখনো ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা বসানো হয়নি। এ বিষয়ে, কন্সাল জেনারেল শামীম আহসান বলন, কিছু অসুবিধার কারণে সুবিধাজনক জায়গায় অফিস স্থানান্তরের জন্য নতুন ভবন খুঁজছে বাংলাদেশ কন্স্যুলেট। এ ঘটনায় প্রবাসীদের মাঝে চলছে নানা গুঞ্জন। স্থানীয় আওয়ামীলীগসহ মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের নেতাকর্মিরা এ ঘটনার নিন্দা জানিয়েছেন। নেতা-কর্মিদের মাঝে তীব্র প্রতিক্রিয়া বিরাজ করছে।