সিলেটে বিএনপির সম্মেলন : প্রবাস থেকে জামানের ভিডিওবার্তা (ভিডিওসহ)
ডেস্ক রিপোর্টঃ আগামী ৭ ফেব্রুয়ারি সিলেটে জেলা ও মহানগর বিএনপির সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। সিলেটের কেন্দ্রীয় মুসলিম সাহিত্য সংসদের শহীদ সোলেমান হলে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন- বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ কেন্দ্রীয় নেতারা।
এদিকে সম্মেলনে সিলেট জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক পদে মনোনয়ন কিনেছেন সিলেট জেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক, স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি সামসুজ্জামান জামানের অনুসারীরা। যদিও তিনি বর্তমানে প্রবাসে অবস্থান করছেন। আর সেখান থেকেই বসে তিনি বিপ্লবের ডাক দিয়েছেন। এক ভিডিওবার্তায় তিনি বিএনপিকে ‘মুক্তিকামী মানুষের শেষ আশ্রয়স্থল উল্লেখ করে নেতাকর্মীদের এ বিপ্লবে সামিল হওয়ার আহবান জানান।
জামান গত মঙ্গলবার ইউটিউবে ‘বিপ্লব’ আহবানের ভিডিওবার্তাটি প্রকাশ করেন। নিজ জিমেইল অ্যাকাউন্ট থেকে নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে শেয়ার করা ভিডিওবার্তায় সামসুজ্জামান জামান সিলেট জেলা ও মহানগর বিএনপির আসন্ন সম্মেলনকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, ‘নেতৃত্ব নির্বাচনে তৃণমূলের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠিত হলে সংগঠন শক্তিশালী হবে।’
‘বিশেষ কারণে’ তাকে (জামান) বাইরে অবস্থান করতে হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘কারণটা সকলেরই জানা। বিগত বছরগুলোতে যখনই কর্তব্য পালনের ডাক এসেছে, পৃথিবীর যে প্রান্তেই থাকি না কেন, সাধ্যমতো আপনাদের পাশে থাকার চেষ্টা করেছি। নিকট ভবিষ্যতেও আপনাদের পাশে থাকার আকাঙ্খা লালন করি।’
সামসুজ্জামান বলেন, ‘গুম, খুন আর অপশাসনের বিরুদ্ধে চলমান আন্দোলনে পূণ্যভূমি সিলেট সবসময়ই পথিকৃৎ হয়ে আলো ছড়িয়েছে বাংলাদেশে। আজকের বিভীষিকাময় আতঙ্কের পরিবেশ থেকে উদ্ধার পেতে হলে শক্তিশালী রাজনৈতিক সংগঠনের বিকল্প নেই।’
জাতীয় সংকটে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহবান জানিয়ে জামান বলেন, ‘আমাদের দৃষ্টিভঙ্গির পার্থক্য থাকতেই পারে, নেতৃত্বের প্রতিযোগিতা থাকতেই পারে, ব্যক্তিগত পছন্দ-অপছন্দ থাকতেই পারে। কিন্তু জাতীয় সংকটে যদি পরস্পর পরস্পরকে আকড়ে ধরে না থাকতে পারি, তাহলে দানবীয় শক্তির পদপৃষ্ঠে আমরা নির্মূল হয়ে যাবে।’
সামসুজ্জামান বলেন, ‘জিয়াউর রহমানের পরিবারের প্রতি, তার সন্তানদের প্রতি এই স্বৈরাচারী সরকার কি আচরণ করেছে! আমাদের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে কিভাবে তার বাড়ি থেকে উচ্ছেদ করে দেয়া হয়েছে! সারা বাংলাদেশে বেছে বেছে আমাদের মেধাবী নিবেদিতপ্রাণ নেতাকর্মীদের মাথার উপর মৃত্যুর পরোয়ানা ছুঁড়ে দেয়া হয়েছে। গুপ্ত হত্যা আর গুম-খুনের মাধ্যমে দলকে নেতৃত্বশূন্য করার ঘৃণ্য প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে।’
বিএনপি নেতা ‘নিখোঁজ’ ইলিয়াস আলী প্রসঙ্গে সামসুজ্জামান বলেন, ‘আমাদের নেতা, বৃহত্তর সিলেটের নয়নের মনি জননেতা এম. ইলিয়াস আলীকে গুম করে রাখা হয়েছে। শাহজালাল (রহ.) পূণ্যভূমির সন্তান ইলিয়াস আলীকে গুম করে বৃহত্তর সিলেটের মানুষকে চরমভাবে অপমান করা হয়েছে। আমাদের আন্দোলন, আমাদের আবেদন-নিবেদন কোনো কিছুই সরকারের কর্ণগুহরে প্রবেশ করেনি। ইলিয়াস আলী আপনাদের সন্তান, আপনাদের ভাই, সিলেট বিভাগের জননন্দিত নেতা। যতোক্ষণ আমরা ইলিয়াস আলীকে ফিরে পাবো না, সিলেটের মানুষ ইলিয়াস আলীকে ফিরে পাওয়ার আন্দোলন স্তব্দ হতে দেবে না।’
জামান বলেন, ‘আমাদের নেতা, মজলুম জননেতা তারেক রহমান আজ মাতৃভূমি থেকে নির্বাসিত। নির্যাতন-নিপীড়ন করে তাকে দেশান্তরী করে দেয়া হয়েছে। একের পর এক মিথ্যে মামলা দিয়ে তাকে ও তার পরিবার-পরিজনকে হেনস্থা করে বর্বরতা চরম দৃষ্টান্ত স্থাপন করা হয়েছে। সারা বাংলাদেশ আজ দানবীয় শক্তির নিষ্ঠুর পদভারে এক বিভীষিকার রাজ্যে পরিণত হয়েছে। নিরাপত্তাহীন, শান্তিহীন, স্বস্তিহীন এ পরিবেশ থেকে আমাদের মুক্তি পেতে হবে। ঐক্যবদ্ধভাবে ঘুরে দাঁড়াতে হবে।’
নেতাকর্মীদের প্রতি ‘বিপ্লব’র ইঙ্গিত দিয়ে সামসুজ্জামান বলেন, ‘বিপ্লব কোনো সময়ে কিংবা কোনো নির্দিষ্ট স্থানের জন্য নির্ধারিত নয়। বিপ্লব যেকোনো সময়, যেকোনো স্থান থেকে সংঘটিত হতে পারে। জাতীয়তাবাদী দল মাটি ও মানুষের দল। বিএনপি মুক্তিকামী মানুষের শেষ আশ্রয়স্থল। মানুষের মনে আমাদের কর্মকান্ড নিরাশার জন্ম দিচ্ছে। ত্যাগী, নিবেদিতপ্রাণ নেতাকর্মীরা হতাশ হয়ে আজ হারিয়ে যাচ্ছে। এই অবস্থার পরিবর্তন হতেই হবে। তাই আসুন, পূণ্যভূমি সিলেট থেকে ‘বিপ্লব’র সূচনা করি।’