ওসমানীনগরে পিতাকে পাগল সাজিয়ে হাসপাতালে ভর্তি! অবশেষে বৃদ্ধকে উদ্ধার করলো পুলিশ

abdul khalikসুরমা টাইমস ডেস্কঃ ওসমানীনগরে পুত্রের বিরুদ্ধে মামলা করায় পিতা কে পাগল সাজিয়ে জোরপূর্বক মানসিক হাসপাতালে ভর্তি করার ঘটনায় মামলা দায়ের ও একাধিক সংবাদ মাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হওয়ার পর অবশেষে শুক্রবার বিকালে পিতা আব্দুল খালিককে উদ্ধার করেছে পুলিশ।

সিলেটের উপশহরস্থ মনোরোগ হসপিটালে আব্দুল খালিককে উদ্ধার করার জন্য শক্রবার ওসমানীনগর থানার এ্স আই রাকিবুল হাসানের নেতৃত্বে একদল পুলিশ সেখানে গেলে প্রথমে হসপিটাল কর্তৃপক্ষ পুলিশ কর্মকর্তার সাথে অসহযোগিতা মূলক আচরন করে। পরবর্তীতে শাহজালাল ফাড়িঁ পুলিশ ও গোয়েন্দা পুলিশ ও অতিরিক্ত পুলিশ সদস্যরা হাসপাতালে উপস্থিত হয়ে আব্দুল খালিককে উদ্ধার করতে সক্ষম হন।

ওসমানীনগর থানার এস আই রাকিবুল হাসান উদ্ধারের সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, আব্দুল খালিককে উদ্ধারের জন্য মনোরোগ হসপিটালে যাওয়ার পর প্রথমে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জামেলা করে। খবর পেয়ে শাহজালাল ফাঁড়ি পুলিশসহ অতিরিক্ত পুলিশ সদস্যরাও ওই হাসপাতালে আসলে যৌথ অভিযানে বৃদ্ধ কে হাসপাতাল থেকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসা হচ্ছে।

স্থানীয় সূত্র জানা যায়, উপজেলার সাদীপুর ইউনিয়নের গজিযা গ্রামের আব্দুল খালিক (৬০) কে দীর্ঘদিন ধরে শারিরিক ও মানুষিক নির্যাতন করে আসছে তাঁর মাদকাসক্ত পুত্র আব্দুল কাহের (৩৩)। পিতার সাথে এমন আচরন করার জন্য গজিয়া গ্রামবাসী একজোট হয়ে আবুল কাহের কে থানা পুলিশের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরন করে। পিতার সাথে কখন অসদাচরন করবে না বলে আদালতে মুসলেকা প্রদান করে জেল থেকে বেরিয়ে এসে কাহের। পূর্বের ন্যায় আবারো পিতাকে নির্যাতন করতে শুরু করে।

গত ৫ অক্টোবর বিকালে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে আবুল কাহের তাহার বৃদ্ধ পিতা আব্দুল খালিক কে ধারালো অস্ত্র দিয়ে মারপিট করে মারাত্বক আহত করে। স্থানীয়রা এগিয়ে এসে আব্দুল খালিককে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য উপজেলা হাসপাতালে ভর্তি করেন। এ ঘটনায় আব্দুল খালিক বাদি হয়ে গত ৭ অক্টোবর পুত্র আব্দুল কাহেরকে আসামী করে সিলেট আদালতে মামলা দায়ের করেন। মামলা নং ১৯৪/২০১৫। আদালত মামলাটি এফআইআর করার জন্য ওসামানীনগর থানার ওসি কে নির্দেশ দেন।

এদিকে মামলা দায়ের এর খবর পেয়ে গত ১৯ অক্টোব্র ফকিরাবাদ এলাকা থেকে জোরপূর্বক পিতা আব্দুল খালিককে ধরে লাইটেস যোগে সিলেটে নিয়ে যায় কাহের। পরবর্তীতে ওসমানী হাসপাতালের মনোরোগ বিভাগের প্রধান ও সিলেট উপশহরস্থ সিলেট মনোরোগ হসপিটাল এর চেয়ারম্যান ডা: গোপাল শংকর দে এর অধিনে মনোরোগ হাসপাতালে ভর্তি করে আসে বৃদ্ধকে। খবর পেয়ে আব্দুল খালিক এর অনান্য আত্বীয়-স্বজনরা উপশহরস্থ মনোরোগ হসপিটালে গেলে একমাত্র পুত্র আব্দুল কাহের ছাড়া অন্য কার সাথে আব্দুল খালিকের দেখা করার সুযোগ দেয়নি ওই হাসপাতাল কৃতপক্ষ।

এ ঘটনায় আব্দুল খালিককে হাসপাতাল থেকে উদ্ধারের জন্য মামলা দায়ের এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত হওয়ার পর শক্রবার বিকালে ওসমানীনগর থানার এস আই রাকিবুল হাসানের নেতৃত্বে একদল পুলিশ সিলেট উপশহরস্থ মনোরোগ হাসপাতালে গিয়ে বৃদ্ধ খালিককে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে।