জমি, টাকা সরকারের, কার্যালয় আ.লীগের

Tahirpur_27.10.15সুরমা টাইমস ডেস্কঃ সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে সরকারি জমিতে। কার্যালয়ের জন্য আধা পাকা ঘর তৈরি ও আসবাব কেনা হয়েছে টেস্ট রিলিফের (টিআর) টাকায়। একজন সরকারি কর্মকর্তা বলছেন, ওই জমি বন্দোবস্ত নেওয়া হয়নি। তবে স্থানীয় সাংসদের দাবি, বন্দোবস্ত নিয়েই কার্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলা পরিষদ ভবনের উত্তর দিকে একটি বড় সরকারি পুকুর। পুকুরটির উত্তর-পূর্ব কোণে পাকা সড়ক। সড়কের পাশে একটি বড় আধা পাকা ঘর। এটাই উপজেলা আওয়ামী লীগের বর্তমান কার্যালয়। দেয়ালে লেখা: ‘কার্যালয়, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, তাহিরপুর উপজেলা শাখা’। কার্যালয়টি ২০১২ সালের আগস্টে উদ্বোধন করেন সুনামগঞ্জ-১ আসনের (তাহিরপুর-জামালগঞ্জ-ধরমপাশা) ক্ষমতাসীন দলের সাংসদ মোয়াজ্জেম হোসেন।
স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা জানান, উপজেলা সদরের কেন্দ্রে হওয়ায় বর্তমানে এখানে এক শতক জমি দুই থেকে আড়াই লাখ টাকায় বিক্রি হয়। আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের আধা পাকা ঘরটি আনুমানিক আড়াই থেকে তিন শতক জমির ওপর নির্মিত।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০১০-২০১১ অর্থবছরে টিআরের চার লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয় ‘বঙ্গবন্ধু স্মৃতি পরিষদ’-এর নামে। কাগজে-কলমে এই বরাদ্দ দিয়ে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি পরিষদের ঘর নির্মাণ ও আসবাব কেনার কথা উল্লেখ রয়েছে। কিন্তু এই টাকায় নির্মাণ করা হয় উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়। টিআরের এ প্রকল্পের সভাপতি ছিলেন তাহিরপুর সদর ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা আবদুল জলিল তালুকদার।
আবদুল জলিল বলেন, তিনি বর্তমানে উপজেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা। তাঁর তত্ত্বাবধানেই কার্যালয়ের এ ঘরটি নির্মাণ করা হয়। এতে আট লাখ টাকা ব্যয় হয়েছে। বাড়তি টাকা দলের নেতা-কর্মীরা দিয়েছেন। বরাদ্দ বঙ্গবন্ধু স্মৃতি পরিষদের নামে। এর কার্যালয় কোথায়, জানতে চাইলে জলিল বলেন, ‘আওয়ামী লীগের এই কার্যালয়ের ভেতরেই বঙ্গবন্ধু স্মৃতি পরিষদ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ—সব আছে।’
তাহিরপুর সদর ইউনিয়নের সহকারী ভূমি কর্মকর্তা মাসুদ আহমদ বলেন, যেখানে আওয়ামী লীগের কার্যালয়টি নির্মাণ করা হয়েছে, সেটি সরকারি জমি। জমিটি কাউকে বন্দোবস্ত দেওয়া হয়নি। তবে আওয়ামী লীগের একজন নেতা বলেছেন, ওই জমি বন্দোবস্ত নিতে তাঁরা আবেদন করবেন।
সরকারি জমির ওপর দলীয় কার্যালয় নির্মাণের বিষয়টি স্বীকার করে সাংসদ মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, ‘আমরা এই জমি সরকারের কাছ থেকে বন্দোবস্ত নিয়েই দলীয় কার্যালয় করেছি।’