জাতিসংঘে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ ৩০ সেপ্টেম্বর : সংবর্ধনা ২৭ সেপ্টেম্বর

ওবামার রিসেপশনে আমন্ত্রিত : ৬ দিনের ব্যস্ত কর্মসূচি

সাংবাদিক সম্মেলনে বক্তব্য রাখছেন স্থায়ী প্রতিনিধি ড. এ কে মোমেন। ছবি- এনা।
সাংবাদিক সম্মেলনে বক্তব্য রাখছেন স্থায়ী প্রতিনিধি ড. এ কে মোমেন। ছবি- এনা।

নিউইয়র্ক থেকে এনা: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতিসংঘের ৭০তম সাধারণ অধিবেশনে ভাষণ দেবেন আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর। এছাড়াও প্রধানমন্ত্রী জাতিসংঘের পোস্ট সামিট ২০১৫ তে ভাষণ দেবেন আগামী ২৭ সেপ্টেম্বর। এই সামিটে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামাও ভাষণ দেবেন। এ ছাড়াও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জাতিসংঘের ব্যস্ততম ৬ দিনের কর্মসূচির মধ্যে দুটো এওয়ার্ড গ্রহণ করবেন। সর্বজনীন নাগরিক সংবর্ধনায় ভাষণ দেবেন আগামী ২৭ সেপ্টেম্বর। ২৮ সেপ্টেম্বর পিস কিপিং সামিটে বাংলাদেশ কো- হোস্ট এবং প্রেসিডেন্ট ওবামা মডারেটরের দায়িত্ব পালন করবে। আমেরিকার প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার রিসেপশনে যোগ দেবেন ২৮ সেপ্টেম্বর দুপুরে। গত ১৮ সেপ্টেম্বর (নিউইয়র্ক সময়) বিকেলে জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনের প্রতিনিধি এবং রাষ্ট্রদূত ড. এ কে মোমেন মিশনে এক সাংবাদিক সম্মেলন এ সব তথ্য প্রদান করেন।
জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশন চলাকালে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ সঙ্গে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ওবামার সঙ্গে পাঁচবার দেখা হচ্ছে বলে জানান জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ড. এ কে মোমেন। স্থায়ী প্রতিনিধি আরো জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতিসংঘের ৭০তম সাধারণ অধিবেশনে যোগ দিতে আগামী ২৩ সেপ্টেম্বর রাত ১০টা জেএফকে এয়ারপোর্টে পৌঁছাবেন। যদিও অন্য একটি সূত্রে জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২২ সেপ্টেম্বর লন্ডনের উদ্দেশ্যে ঢাকা ত্যাগ করবেন। তিনি ২৩ সেপ্টেম্বর লন্ডন থেকে নিউইয়র্ক পৌঁছাবেন। ড. মোমেন আরো জানান, প্রধানমন্ত্রী নিউইয়র্ক পৌঁছাতে পৌঁছাতে ২৪ সেপ্টেম্বরও হয়ে যেতে পারে। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ড. মোমেন জানান, প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী হিসাবে আসছেন শতাধিক লোকজন। যার মধ্যে রাজনৈতিক নেতা, ব্যবসায়ী, সাংবাদিক, কূটনৈতিক, কবি রয়েছেন। এ ছাড়াও ১১৯ জন ব্যবসায়ী আসছেন। যারা নিজ খরচে আসছেন। অন্য একটি সূত্রে জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী হিসাবে রয়েছেন প্রায় দুই শতাধিক লোকের বিশাল বহর। প্রধানমন্ত্রী সফরসঙ্গী না হলেও অধিবেশনে অংশ নিতে আরো আসছেন স্পীকার শিরিন শারমিন, স্থানীয় সরকারমন্ত্রী মোশাররফ হোসেন, মন্ত্রী আমির হোসেন আমু, সাবের হোসেন চৌধুরী এমপি প্রমুখ।
প্রধানমন্ত্রী আগামী ২৫ সেপ্টেম্বর থেকে জাতিসংঘের বিভিন্ন অধিবেশনে যোগদান করবেন। ২৫ সেপ্টেম্বর সকাল ১০টায় প্রধানমন্ত্রী পোপ যখন ভাষণ দেবেন তখন উপস্থিত থাকবেন। সকাল ১১টায় জাতিসংঘের ডেভেলপমেন্ট সামিট ২০১৫ তে অংশগ্রহণ করবেন। দুপুর ১টা ৩০ মিনিটে ওয়াল্ডঅপ এস্টোরিয়া হোটেলে বিজনেস কাউন্সিল ফর আইউতি যোগদান করবেন। বিকেল ৫টায় কলম্বিয়া ইউনিভার্সিতে ওয়ার্ল্ড লিডারশীপ ফোরামে যোগ দেবেন। ২৬ সেপ্টেম্বর সকাল ১০টায় ইন্টারইক্টভ ডায়ালগ অন শাসটেইনেবল ইকোমিক গ্রোথতে কো- চেয়ারের দায়িত্ব পালন করবেন। বিকেল ৬টায় ওয়ার্ল্ডঅপ এস্টোরিয়ায় ৩/৫ জন কংগ্রেসমান প্রধানমন্ত্রীর সাথে সাক্ষাত করবেন। একই দিন সন্ধ্যা ৭টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইন্টারন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন এওয়ার্ড গ্রহণ করবেন। যা প্রদার করবে জাতিসংঘের একটি সংগঠন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছাড়াও এই পুরস্কার আরো ৮টি দেশের সরকার প্রধান গ্রহণ করবেন। ২৭ সেপ্টেম্বর সকাল ৯টায় জাতিসংঘের সামিট ২০১৫ তে কো- হোস্টের দায়িত্ব পালন করবেন। এই সামিটে প্রেসিডেন্ট ওবামাও ভাষণ দেবেন। ২৭ সেপ্টেম্বর দুপুর ২টায় প্রবাসী নাগরিক সংবর্ধনায় প্রধানমন্ত্রী অংশগ্রহণ করবেন। এই সংবর্ধনা অনুষ্ঠিত হতে ম্যানহাটনের হিলটন হোটেলে। একই দিন সন্ধ্যায় ৭টায় প্রধানমন্ত্রী লিডাশীপ অন দা আর্থ এওয়ার্ড গ্রহণ করবেন। ২৮ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী জাতিসংঘের মহাসচিব বানকি মুনের রিসেপশনে, জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশের ওপেনিং এ এবং সামিট অন পিস কিং- এ বাংলাদেশ কো-হোস্টের দায়িত্ব পালন করবে। এই অধিবেশনে প্রেসিডেন্ট ওবামা মডারেটরের দায়িত্ব পালন করবেন। এ ছাড়াও এই দিন প্রেসিডেন্ট ওবামার রিসেপশনে অংশ নেবেন দুপুরে। ২৯ সেপ্টেম্বর ভায়লেন্ট এক্সট্রিজমের উপর কাউন্সিলিং এ মডারেটরের দায়িত্ব পালন করবেন প্রেসিডেন্ট ওবামা। এই অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রীও অংশ নেবেন। ৩০ সেপ্টেম্বর সকাল ৯টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে ভাষণ দেবেন এবং বিকেল চারটায় স্থায়ী মিশনে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হবেন। ১ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী লন্ডনের উদ্দেশ্যে নিউইয়র্ক ত্যাগ করবেন।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি এবং অঙ্গসংগঠন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে প্রতিরোধের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। যেখানে হাসিনা সেখানেই প্রতিরোধ। এই কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির সাবেক সভাপতি আব্দুল লতিফ স¤্রাট, সাবেক সাধারণ সম্পাদক জিল্লুর রহমান জিল্লু, সাবেক সিনিয়র সহ সভাপতি গিয়াস আহমেদ, অধ্যাপক দেলোয়ার হোসেন, কোষাধ্যক্ষ জসীম ভুইয়া প্রমুখ।
অপরদিকে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভ্যর্থনা জানাতে ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে।