মক্কায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১০৭, আহত ৪০ বাংলাদেশি

mekkhah3সুরমা টাইমস ডেস্কঃ সৌদি আরবের পবিত্র মক্কা নগরের হারাম শরিফে ক্রেন ভেঙে পড়ার ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১০৭ জনে পৌঁছেছে। আহত হয়েছেন ২৩৮ জন। আহত ব্যক্তিদের মধ্যে ৪০ বাংলাদেশি রয়েছেন।
শনিবার বিবিসি অনলাইনের প্রতিবেদনে জানানো হয়, মক্কার স্থানীয় সময় গতকাল শুক্রবার বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে। বিশালাকারের ক্রেনটি নির্মাণকাজে ব্যবহৃত হচ্ছিল।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী বাংলাদেশি নাগরিক শামসুদ্দিন আহমেদ বলেন, “মাগরিবের আগে প্রচণ্ড বালু ঝড় হয়। এ সময় ক্রেইনটি ভেঙে পড়ে। আমাদের চোখের সামনে বহু মানুষকে আহত নিহত হতে দেখেছি।”
প্রতি বছর ৩০ থেকে ৪০ লাখ মুসলমান হজ পালন করতে বিশ্বের সর্ববৃহৎ এই মসজিদে সমবেত হন। এবার প্রায় এক লাখ বাংলাদেশির হজে অংশ নেওয়ার কথা রয়েছে।
আল আরাবিয়া টেলিভিশনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রবল ঝড়ের কারণে ক্রেইন উল্টে পড়লে হতাহতের এ ঘটনা ঘটে। গত কয়েক দিন ধরে সৌদি আরবের পশ্চিমাঞ্চলে শক্তিশালী বালু ঝড় বইছে।
জেনারেল সুলাইমান আল-আমর স্থানীয় একটি টেলিভিশনকে বলেন, ঝড়ে গাছ উপড়ে পড়ায় ক্রেইন স্থানচ্যুত হয়ে আছড়ে পড়ে। টুইটারে ছড়িয়ে পড়া কয়েকটি ছবিতে দেখা যায়, হজের ইহরাম পরিহিত রক্তাক্ত বহু মানুষের দেহ কংক্রিটের স্তূপের মধ্যে পড়ে আছ। ছাদ ভেঙে নেমে আসা লাল রঙের একটি বিশাল ক্রেইনের অংশবিশেষও এসব ছবিতে দেখা যাচ্ছে।
একসঙ্গে ২২ লাখ হাজির স্থান সঙ্কুলানের জন্য গতবছর মসজিদের এলাকা ৪ লাখ বর্গমিটার সম্প্রসারণের কাজ শুরু করে সৌদি সরকার। এই নির্মাণ কাজের জন্য ভারী কয়েকটি ক্রেনও সেখানে রাখা ছিল বলে রয়টার্সের এক ছবিতে দেখা যায়।
এক প্রত্যক্ষদর্শীর বরাত দিয়ে আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়, পৌনে ৬টার দিকে একটি ক্রেইন মসজিদের পূর্ব অংশের চতুর্থ তলার ওপর আছড়ে পড়ে। হজে আসা মুসল্লিরা মাগরিবের নামাজের আগে জড়ো হওয়ায় সে সময় ওই অংশটি ছিল বহু মানুষে পূর্ণ।
সৌদি আরবের সিভিল ডিফেন্সের প্রধান এক বিবৃতিতে জানান, হতাহত সবাইকে দুর্ঘটনাস্থল থেকে সরিয়ে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।
গত চল্লিশ বছরে সৌদি আরবে হজ করতে গিয়ে বিভিন্ন দুর্ঘটনা ও রোগ ভুগে অন্তত তিন হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে।

২০০৬ সালে কাবা শরিফের কাছে একটি বহুতল হোটেল ভবন ধসে ৭৬ জন নিহত হন। নিকট অতীতে হজ মৌসুমে সবচেয়ে হতাহতের ঘটনা ঘটে ১৯৯০ সালের ২ জুলাই। ওই ঘটনায় একটি সুড়ঙ্গে পদদলিত হয়ে ১ হাজার ৪২৬ জনের মৃত্যু হয়।