নির্মাণাধীন বৈদ্যুতিক প্লান্টে ভারি মালামাল পরিবহন: স্রোতে ভেসে গেল বাঁধ

6899সুরমা টাইমস ডেস্কঃ হবিগঞ্জের শাহজিবাজারে নির্মাণাধীন বৈদ্যুতিক প্লান্টে ভারি মালামাল পরিবহনের জন্য হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জ নতুন ব্রিজের পাশে খোয়াই নদীর উপর নির্মিত অস্থায়ী বাঁধটি উজান থেকে নেমে আসা পানির তোড়ে ভেসে গেছে। একই সাথে নদীর প্রতিরক্ষা বাঁধে ভাঙ্গন শুরু হয়েছে। এতে শায়েস্তাগঞ্জ পৌরসভার কুঁটিরগাওসহ ২০/২৫টি গ্রামের লোজকন আতঙ্কে রয়েছেন। তবে বাঁধ ভেঙ্গে যাওয়ায় নদীপাড়ের বাসিন্দারা বন্যা থেকে রক্ষা পেয়েছেন বলে দাবি করছেন এলাকাবাসী। তা না হলে নদীর প্রতিরক্ষা বাঁধ ভেঙ্গে যাওয়ার আশঙ্কা ছিল।

জানা যায়, মৌলভীবাজার জেলার শেরপুর থেকে ৩৩০ মেগাওয়াট শাহজীবাজার পাওয়ার প্লান্ট প্রকল্প বাস্তবায়নের লক্ষ্যে খোয়াই নদীর উপর দিয়ে ১২০ চাকার ট্রাকে করে ২২০ মেট্রিক টন ওজনের জেনারেটর পরিবহনের প্রয়োজন হয়। কিন্তু নদীর উপর নির্মিত ব্রিজ দিয়ে এতো ভারী মালামাল পরিবহন অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় প্রকল্পের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান এবান্ট লজিস্টিক কারো অনুমতি না নিয়েই নদীর মাঝ বরাবর বাঁধ নির্মাণ শুরু করে।

গত ২৬ মে বিষয়টি প্রশাসনের নজরে এলে প্রশাসন বাঁধের নির্মাণ কাজ স্থগিত করেন। ২৮ মে তৎকালীন জেলা প্রশাসক জয়নাল আবেদীন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে নদীতে অবৈধ বাঁধ দেয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করে এটি অপসারণের জন্য কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন।

পরে ৭ জুন জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে শাহজিবাজারে ৩৩০ মেগাওয়াট বিদ্যুত পাওয়ার প্লান্ট প্রকল্প বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ও খোয়াই নদীর শায়েস্তাগঞ্জ ব্রিজের ৫০ মিটার ডাউন স্ট্রীমে অস্থায়ী বাইপাস/ক্রস ড্যাম নির্মাণ সংক্রান্ত মতবিনিময় সভায় শর্তসাপেক্ষে অস্থায়ী বাঁধ নির্মাণের মাধ্যমে মালামাল পরিবহনের অনুমতি দেয় প্রশাসন। সভায় সিদ্ধান্ত হয় অস্থায়ী বাঁধ নির্মাণের পর খোয়াই নদী পানি বৃদ্ধির ফলে প্রতিরক্ষা বাঁধ ভেঙ্গে জেলায় বন্যা দেখা দিলে এবং হবিগঞ্জবাসী ক্ষতির সম্মুখীন হলে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান এবান্ট লজিস্টিক ক্ষতিপূরণ দেবে। এ বিষয়ে ৫ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়। প্রশাসনের সাথে লিখিত চুক্তির পর আবারও কাজ শুরু করে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। ক্ষতিপূরণের প্রতিশ্রুতি রেখে কাজ করলেও প্রাকৃতিক দুর্যোগের আশঙ্কা থেকেই গিয়েছিল।

গত কয়েকদিন ধরে জেলায় প্রবল বৃষ্টিপাত হলে খোয়াই নদীর পানি বৃদ্ধি পায়। একই সাথে উজান থেকে পাহাড়ি ঢল নামতে শুরু করে। এক পর্যায়ে রোববার দিবাগত রাতে এ বাঁধ ভেঙ্গে যায়। একই সাথে প্রতিরক্ষা বাঁধে ভাঙ্গন দেখা দেয়। তবে রক্ষা পেয়েছেন বাঁধের উজানে থাকা লোকজন। বাঁধ ভেঙ্গে না পড়লে পানি উপচে এলাকায় বন্যা দেখা দেয়ার আশঙ্কা ছিল বলে দাবি করছেন স্থানীয় লোকজন। এদিকে, অস্থায়ী বাঁধ ভেঙ্গে পড়ার পর এরপর থেকে বাঁধ নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠানের কাউকে আর ওই এলাকায় দেখা যায়নি।