‘৩০০ সিনেমা হল ডিজিটাল হবে’

hasina-142814সুরমা টাইমস ডেস্কঃ চলচ্চিত্রের বিকাশের লক্ষ্যে দেশের ৬৪ জেলায় ৩০০টি সিনেমা হল ডিজিটালাইজ করা হবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
শনিবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার-২০১৩ বিতরণী অনুষ্ঠানে এ কথা জানান প্রধানমন্ত্রী।
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে ১৯৭৫ সালে হত্যার পর চলচ্চিত্রেও বিপর্যয় নেমে আসে। চলচ্চিত্র শিল্পে অশ্লীলতা স্থান করে নেয়।আগে বিনোদনের একটা জায়গা ছিল। ধীরে ধীরে পরিবার-পরিজন নিয়ে সিনেমা দেখার পরিবেশ হারিয়ে যেতে থাকে।এই বৈরি অবস্থার মধ্যেও আমাদের কিছু তরুণ এগিয়ে আসে। তারা কিছু নান্দনিক চলচ্চিত্র উপহার দেয়।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘২০০৯ সালে আমরা চলচ্চিত্র শিল্প বিকশিত করার কাজে হাত দেই। ডিজটাল পদ্ধতি ও আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে যাতে চলচ্চিত্রের বিকাশের কাজে হাত দিয়েছি। আমরা একটা ফিল্মসিটি করার জন্য একটা মাস্টারপ্ল্যান করেছি। এফডিসি জাতির পিতা করেছিলেন। এটার আরো আধুনিকায়কন করা হবে। প্রতিবছর চলচ্চিত্র নির্মাণের জন্য অনুদান বাড়ানো হচ্ছে। এ পর্যন্ত আট কোটি টাকার বেশি অনুদান দেওয়া হয়েছে। এ টাকা সামান্য। এটা বাড়ানো হবে। আমাদের শিশুদের মেধা বিকাশের উপযোগী চলচ্চিত্র নির্মাণ করা উচিৎ।’
শেখ হাসিনা বলেন, পর্যায়ক্রমে ৩০০টি সিনেমা হল ডিজিটালাইজ করা হবে। যারা সিনেপ্লেক্স নির্মাণ করবেন, তারা কর অব্যাহতি পাবেন। ৬৪ জেলায় তথ্য কমপ্লেক্স নির্মাণ করা হবে। আকাশ সংস্কৃতির যুগে প্রতিযোগিতায় তাল মেলাতে হলে, টিকে থাকতে হলে প্রযুক্তি গ্রহণ করতে হবে। সরকার এ ব্যাপারে সব রকম সহযোগিতা করবে।’
দেশের চলচ্চিত্র শিল্পে গৌরবোজ্জ্বল ও অসাধারণ অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ ২৫টি ক্ষেত্রে পুরস্কার দেওয়া হয়েছে।
জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার-২০১৩ এর ২৫টি ক্যাটাগরির মধ্যে ১৭টিতে জিতেছে ইমপ্রেস টেলিফিল্মের ছবি। শ্রেষ্ঠ ছবি হিসেবে পুরস্কার পেয়েছে ইমপ্রেসের প্রযোজনায় গাজী রাকায়েত পরিচালিত `মৃত্তিকা মায়া` ছবিটি। এ ছবির জন্য শ্রেষ্ঠ প্রযোজক ফরিদুর রেজা সাগর, শ্রেষ্ঠ পরিচালক গাজী রাকায়েত, শ্রেষ্ঠ অভিনেতা, শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী, শ্রেষ্ঠ পার্শ্ব অভিনেতা, শ্রেষ্ঠ পার্শ্ব অভিনেত্রী, শ্রেষ্ঠ খলনায়কসহ সিংহভাগ পুরস্কার পেয়েছে।
পুরস্কারের পূর্ণাঙ্গ তালিকা হলো-
শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র প্রযোজনা গাজী রাকায়েত ও ফরিদুর রেজা সাগর [মৃত্তিকা মায়া], শ্রেষ্ঠ প্রামাণ্য চলচ্চিত্র সারা আফরীন [শুনতে কি পাও], শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র পরিচালক, গাজী রাকায়েত [মৃত্তিকা মায়া], শ্রেষ্ঠ অভিনেতা প্রধান চরিত্রে-তিতাস জিয়া [মৃত্তিকা মায়া], শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী প্রধান চরিত্রে [যৌথভাবে]-মৌসুমী [দেবদাস] ও শর্মিমালা [মৃত্তিকা মায়া], শ্রেষ্ঠ অভিনেতা পার্শ্বচরিত্রে-রাইসুল ইসলাম আসাদ [মৃত্তিকা মায়া], শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী পার্শ্বচরিত্রে-অপর্ণা [মৃত্তিকা মায়া], শ্রেষ্ঠ অভিনেতা/অভিনেত্রী খলচরিত্রে-মামুনুর রশীদ [মৃত্তিকা মায়া], শ্রেষ্ঠ শিশুশিল্পী-স্বচ্ছ [একই বৃত্তে], শিশুশিল্পী শাখায় বিশেষ পুরস্কার-সৈয়দা অহিদা সাবরিনা [অন্তর্ধান], শ্রেষ্ঠ সংগীত পরিচালক [যৌথভাবে]-এ কে আজাদ [মৃত্তিকা মায়া], শওকত আলী ইমন [পূর্ণদৈর্ঘ্য প্রেম কাহিনী], শ্রেষ্ঠ গায়ক-চন্দন সিনহা [পূর্ণদৈর্ঘ্য প্রেম কাহিনী], শ্রেষ্ঠ গায়িকা [যৌথভাবে]-রুনা লায়লা [দেবদাস], সাবিনা ইয়াসমিন [দেবদাস], শ্রেষ্ঠ গীতিকার-কবির বকুল [পূর্ণদৈর্ঘ্য প্রেম কাহিনী], শ্রেষ্ঠ সুরকার-কৌশিক হোসেন তাপস [পূর্ণদৈর্ঘ্য প্রেম কাহিনী], শ্রেষ্ঠ কাহিনীকার-গাজী রাকায়েত [মৃত্তিকা মায়া], শ্রেষ্ঠ চিত্রনাট্যকার-গাজী রাকায়েত [মৃত্তিকা মায়া], শ্রেষ্ঠ সংলাপ রচয়িতা-গাজী রাকায়েত [মৃত্তিকা মায়া], শ্রেষ্ঠ সম্পাদক-মো. শরিফুল ইসলাম রাসেল [মৃত্তিকা মায়া], শ্রেষ্ঠ শিল্প নির্দেশক-উত্তম গুহ [মৃত্তিকা মায়া], শ্রেষ্ঠ চিত্রগ্রাহক-সাইফুল ইসলাম বাদল [মৃত্তিকা মায়া], শ্রেষ্ঠ শব্দগ্রাহক-কাজী সেলিম [মৃত্তিকা মায়া], শ্রেষ্ঠ পোশাক ও সাজসজ্জা-ওয়াহিদা মলি্লক জলি [মৃত্তিকা মায়া], শ্রেষ্ঠ মেকআপম্যান-মো. আলী বাবুল [মৃত্তিকা মায়া]।