মিয়ানমারের ‘অপহৃত’ দুই সৈন্য বাংলাদেশ উদ্ধার

technafসুরমা টাইমস রিপোর্টঃ প্রতিবেশী দেশ মিয়ানমারের ‘অপহৃত’ দুই সেনাসদস্যকে বাংলাদেশ সীমান্তের ভেতর থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। বুধবার বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আজিজ আহমেদ এই তথ্য জানিয়ে বলেছেন, উদ্ধার দুই সেনা সদস্য অসুস্থ থাকায় তাদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। পরে তাদের ফেরত পাঠানো হবে। মিয়ানমার সেনাবাহিনীর ডেপুটি সার্জেন্ট নাইং টুন এবং প্রাইভেট খিন ল্যাট কোথা থেকে, কবে অপহৃত হয়েছিলেন, কারা তাদের অপহরণ করেছিল, সে বিষয়ে কোনো তথ্য দেননি বিজিবি প্রধান।
তবে বিবিসি বাংলার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই দুজনকে কিছুদিন আগে একটি আরাকানি মিলিশিয়া গ্রুপ অপহরণ করে। তাদের বাংলাদেশের সীমান্তের দিকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলেও তাদের কাছে খবর ছিল। বিষয়টি তারা বাংলাদেশের কর্তৃপক্ষকেও জানায়। এরপর বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও বিজিবি এই দুজনকে উদ্ধারে তৎপর হয়।
বিজিপির এক সদস্যকে গত মাসে মিয়ানমারের সীমান্ত রক্ষীরা ধরে নিয়ে যাওয়ার এক মাসের মধ্যে ওই দেশের অপহৃত দুই সৈন্যকে উদ্ধার করল বাংলাদেশের নিরাপত্তা বাহিনী। বিজিবির নায়েক আব্দুর রাজ্জাককে ধরে নেওয়া নিয়ে দুই দেশের মধ্যে কয়েকদিনের টানাপড়েনের পর ২৬ জুন তাকে ফেরত দেয় মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ। বুধবার দুপুরে মিয়ানমারের দুই সৈন্যকে উদ্ধারের খবরটি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেন মেজর জেনারেল আজিজ।
তিনি বলেন, “গত ৫ থেকে ১৪ জুলাই টানা অভিযান চালিয়ে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও বিজিবি মিয়ানমারের দুই অপহৃত সেনা সদস্যকে উদ্ধার করেছে। “তাদের অসুস্থ অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে। প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। শিগগিরই তাদের হস্তান্তর করা হবে।”
পরে বিজিবি সদর দপ্তর থেকে জানানো হয়, বান্দরবানে মিয়ানমার সীমান্তে গত ৫ থেকে ১৪ জুলাই সেনাবাহিনী ও বিজিবির অভিযানের সময় ওই দুই সৈন্যকে উদ্ধার করা হয়। বিজিবির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “সন্ত্রাসীরা দুজনকে অপহরণ করেছিল। যৌথ অপারেশন দলের উপস্থিতি টের পেয়ে তাদের ফেলে রেখে চলে যায়। পরবর্তীতে তারা জানায়, তারা মিয়ানমার সেনাবাহিনীর সদস্য।”
দুজনকে দ্রুত ফিরিয়ে নিতে মিয়ানমার সরকারকে অনুরোধ জানানো হয়েছে বলে বিজিবি জানায়। প্রতিবেশী দেশের দুই সৈন্যকে উদ্ধারের বিষয়ে বিস্তারিত বলতে অস্বীকৃতি জানিয়ে বিজিরি বাহিনীর উপ-মহা পরিচালক খোন্দকার ফরিদ হাসান গণমাধ্যমে বলেন, “অপারেশন সংক্রান্ত বিষয়ে অনেক নিরাপত্তামূলক বিষয় জড়িত থাকে। তাই উদ্ধারকারীদের নাম, পরিচয়, ছবি ইত্যাদি প্রকাশ করতে পারব না।”
এই দুজন কবে অপহৃত হয়েছিলেন, তাও জানাতে রাজি হননি তিনি। মিয়ানমারের সঙ্গে বাংলাদেশের ২৭১ কিলোমিটারের সীমান্ত রয়েছে, যার মধ্যে প্রায় দেড়শ কিলোমিটার পাহাড়ি এলাকা অরক্ষিত। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, মিয়ানমারের সীমান্ত রক্ষী বাহিনী ও সেনাবাহিনীর সঙ্গে প্রায়ই সে দেশের বিভিন্ন বিচ্ছিন্নতাবাদী অস্ত্রধারী দলের সংঘর্ষ হয়ে থাকে। “সীমান্ত এলাকায় এ সব বিচ্ছিন্নতাবাদী দলের ব্যাপারে গোয়েন্দা ও আভিযানিক সহায়তাদানের জন্য বিজিপি ও ঢাকা ও মিয়ানমারের দূতাবাস মাঝে মধ্যে আমাদের (বিজিবি) সহযোগিতা কামনা করে থাকে।”
গত ৫ থেকে ১৪ জুলাই বান্দরবান সীমান্তের মেইন পিলার ৬৭ হতে ট্রাইজংশন পর্যন্ত এলাকায় বিশেষ অভিযান পরিচালনা করা হয় বলে বিজিবি জানিয়েছে।