বালাগঞ্জে জাপা নেতৃবৃন্দের বিবৃতি ও গণপদত্যাগের হুমকি
বালাগঞ্জ প্রতিনিধিঃ বালাগঞ্জ উপজেলা জাতীয় পার্টির আহবায়ক কমিটি গঠন করা নিয়ে পদ বঞ্চিত এবং আহবায়ক কমিটির নেতাকর্মীদের মধ্যে নতুন করে গ্রুপিং-কোন্দল আর মনোমালিন্যের সৃষ্টি হয়েছে।
এ ব্যাপারে উপজেলার সবকটি ইউনিয়ন জাপার দায়িত্বশীল নেতৃবৃন্দ এবং উপজেলা জাপার আহবায়ক কমিটির নেতৃবৃন্দরা একটি লিখিত বিবৃতি দিয়েছেন। গনমাধ্যমে দেয়া প্রায় শতাধিক সাক্ষর সম্বলিত বিবৃতিতে উলেখ করা হয়েছে গত ২০ ডিসেম্বর এক সাধারন সভার মাধ্যমে উপজেলা জাপা’র আহবায়ক কমিটি গঠন করা হয়। এতে সিলেট-২ আসনের এমপি জাতীয় পার্টির কেন্দ্রী যুগ্ন সাংগঠনিক সম্পাদক ও সিলেট-২ আসনের জাপা’র সমন্বয়কারী ইয়াহইয়া চৌধুরীর এহিয়ার প্রতিনিধি হিসেবে সিলেট জেলা জাতীয় পার্টির সাবেক সহ-সভাপতি সুফি মাহমুদ প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। উপজেলার ৬টি ইউনিয়ন জাতীয় পার্টির সভাপতি-সাধরন সম্পাদক এবং সাংগঠনিক সম্পাদকের প্রত্যক্ষ ভোটের মাধ্যমে উপজেলা জাপার আহবায়ক পদে শেখ মো: ফজলু মিয়া এবং হরেশ চন্দ্র দাসকে সদস্য সচিব পদে নির্বাচিত করা হয়।
এর মধ্যে আহবায়ক পদে শেখ মো: ফজলু মিয়া ১৮টি ভোটের মধ্যে সবকটি ভোট তিনি পান। সভায় উপস্থিত নেতৃবৃন্দের সম্মুখে ভোটের ফলাফল ঘোষনা এবং আহবায়ক কমিটি ঘোষনা করার পর এই কমিটিকে পুর্ন সমর্থন জানিয়ে একটি লিখিত রেজুলেশনে উপস্থিত সকলে সাক্ষরও করেন। এর মধ্যে প্রথম সাক্ষরটি করেন উপজেলা জাপার গঠিত আহবায়ক কমিটির সদস্য ছালেহ আহমদ। পরবর্তীতে আহবায়ক কমিটি বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশ করা হয়। বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে, উপজেলা জাপার আহবায়ক কমিটির সদস্য ছালেহ আহমদ ১০ জানুয়ারী সিলেটের একটি স্থানীয় প্রত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিয়ে একটি প্রতিবাদ দিয়েছেন।
৫ জানুয়ারী উপজেলা জাপার দ্বি-বার্ষিক সম্মেলন এবং শেখ মো. ফজলু মিয়া উপজেলার জাপা’র কোন আহবায়ক নেই বলে প্রতিবাদে উল্লেখ করা হয়েছে। বিবৃতি দাতারা ছালেহ আহমদকে ‘নিরক্ষর ও উন্মাদ’ উলেখ করে বলেন, ৫জানুয়ারীর জরুরী সভায় আমরা দ্বি-বার্ষিক সম্মেলন করিনী।
কেননা জরুরী সভার মাধ্যমে দ্বি-বার্ষিক সম্মেলন করার গঠনতান্ত্রিক নিয়ম বাংলাদেশের আর কোন সংগঠনের গঠনতন্ত্রে আছে কি না? তা আমাদের জানা নেই। সেটা ছালেহ আহমদের ভাল জানা থাকতে পারে কারন সে ‘নিরক্ষর নাকি উন্মাদ’ সেটি এখন দেখার বিষয় হয়ে উঠেছে। ছালেহ আহমদ সত্য গোপন করছেন নাকি কোন ধরনের কৌশল অবলম্বন করছেন তা আমাদের বোধগম্য নয়। কেননা ছালেহ আহমদ সাক্ষরিত প্রকাশিত প্রতিবাদে উপজেলা জাপা’র আহবায়ক কমিটি কিংবা সদস্য সচিবের বিষয়ে কোন ধরনের প্রতিবাদ করেননী। আমরা ভোট দিয়ে শেখ মো. ফজলু মিয়াকে আহবায়ক নির্বাচিত করেছি। কিন্তু সংবাদ পত্রে প্রতিবাদ দিয়ে একজন নির্বাচিত আহবায়ককে অস্বীকার করার এখতিয়ার ছালেহ আহমদের নেই। বিবৃতি দাতারা বলেন, উপজেলা জাপা’র সভাপতি হাবিবা বেগম দেশের বাইরে যাওয়ার সুবাদে অস্থায়ী ও অলিখিত ভাবে ছালেহ আহমদ ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হয়েছিলেন। ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হওয়ার বিষয়ে জেলা কমিটির কোন লিখিত নির্দেশ ছিল না এমনকী উপজেলা কমিটি এ ব্যাপারে কোন ধরনের রেজুলেশনও করেনী। তাই ছালেহ আহমদের ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব নেয়া ছিল “গঠনতন্ত্রের পরিপন্থি”। আহবায়ক কমিটি গঠনের পর ছালেহ আহমদ নিজেকে ‘ভারপ্রাপ্ত সভাপতি’ দাবী করে অপ-প্রচার চালাচ্ছে উলে¬খ করে তারা বলেন, আমাদের দৃঢ় বিশ্বাষ ছালেহ আহমদ বালাগঞ্জে জাতীয় পার্টিতে কোন্দলের মাধ্যমে গ্রুপিং সৃষ্টি করতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন। তার এহেন রহস্য জনক আচরনে আমাদের ধারনা হচ্ছে, সে বালাগঞ্জে জাতীয় পার্টিতে কোন্দল সৃষ্টি করে ত্যাগী নেতাকর্মীদের দুরে সরিয়ে দেয়ার মাধ্যমে একক আধিপত্য বিস্তার করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছেন। শুধু তাই নয় দলের ত্যাগী নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে অপ-প্রচার চালিয়ে এবং তাদেরকে দুরে সরিয়ে দিয়ে সে স্থানীয় এমপির নাম ভাঙ্গিয়ে বিভিন্ন যায়গায় তদবির-বানিজ্য করে আসছে এমন অভিযোগে সংগঠনের দুর্নাম হচ্ছে। যারা অতিতে পার্টির দু:সময়ে অর্থ দিয়ে শ্রম দিয়ে আজ পর্যন্ত পার্টির হাল ধরে রেখেছেন তাদেরকে ছালেহ আহমদ তার ‘গলার কাটা’ মনে করছেন। এ জন্যই তার ভয় হচ্ছে পার্টির ত্যাগী নেতা কর্মীদের দিয়ে কেননা ত্যাগীরা দলে থাকলে ছালেহ আহমদ ব্যক্তি স্বার্থ হাছিল করতে পারবেন না। আহবায়ক কমিটি গঠনের প্রসঙ্গ টেনে বিবৃতি দাতারা বলেন, ভোট না পাওয়ার ভয়ে সে আহবায়ক পদে প্রার্থী হয়নী এবং সে প্রার্থী হলে নিশ্চিত তার পরাজয় হত। আহবায়ক হতে না পারায় সে পাগল হয়ে গেছে তাই নির্বাচিত আহবায়ক এবং আহবায়ক কমিটির বিরুদ্ধে অপ-প্রচার চালিয়ে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে। সিলেট-২ আসনের সমন্বয়কারী এবং জেলার নেতৃবৃন্দের প্রতি জোর দাবী জানিয়ে বিবৃতি দাতারা বলেন, ছালেহ আহমদের মত স্বার্থপর এবং ধান্দাবাজ-প্রতারক লোককে জাতীয় পার্টিতে ভবিষ্যতে স্থান দেয়া হলে বালাগঞ্জ উপজেলা জাপার সিনিয়র নেতৃবৃন্দ সহ প্রতিটি ইউনিয়নের নেতাকর্মীরা জাতীয় পার্টি থেকে, সেচ্ছায় পদ ত্যাগ করতে বাধ্য হবে। ছালেহ আহমদ এখন আর বালাগঞ্জের জাতীয় পার্টির কেউ নয় উলেখ করে তারা বলেন, আজ থেকে আমরা তাকে বালাগঞ্জ জাতীয় পার্টি থেকে ‘অবাঞ্চিত’ ঘোষনা করলাম। জেলা এবং কেন্দ্রের নেতৃবৃন্দের কাছে আমাদের জোর দাবী হচ্ছে আদর্শহীন মামলাবাজ ছালেহ আহমদকে অনতিবিলম্বে দল থেকে ‘বহিস্কার’ করতে হবে। তার মতো স্বার্থপর ও ধান্দাবাজ লোক দলে থাকলে কোন দিনই উন্নয়ন হবে না বরং মন্দ নিশ্চিত।