নিজ বাসায় গোলাম আযমের লাশ, নিরাপত্তা জোরদার : শনিবার জানাজা
সুরমা টাইমস রিপোর্টঃ মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে ৯০ বছর কারাদণ্ডাদেশ পাওয়া জামায়াতে ইসলামীর সাবেক আমির গোলাম আযমের মরদেহ পোস্ট মর্টেমের পর তাঁর পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।শুক্রবার সকাল ৭টা ২০ মিনিটে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারা কর্তৃপক্ষ ময়নাতদন্ত শেষে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গ থেকে পরিবারের কাছে লাশ হস্তান্তর করেন।পরিবারের পক্ষ থেকে এসময় গোলাম আযমের লাশ গ্রহণ করেন তার বড় ছেলে আব্দুল্লাহিল আযমী। পরে তার লাশ রাজধানীর মগবাজারে নিজের বাসায় নেয়া হয়।যেখানে আগে থেকেই শত শত লোক তাকে একনজর দেখার জন্য অপেক্ষা করছিলেন।পরিবারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, আজ তাঁর জানাযা হচ্ছে না। বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে চিকিত্সাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়।
পরিবারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, মগবাজারের বাসায় লাশ গোসল শেষে পরিবারের সদস্য ও আত্মীয়স্বজনরা দেখার পর লাশবাহী গাড়িতে বাসায়ই রাখা হবে। তার অন্যান্য ছেলেরা দেশে ফিরলে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হবে।
গোলাম আযমের মৃত্যুর পর শুক্রবার সকাল থেকে মগবাজারে জামায়াতের কেন্দ্রীয় কার্যালয় ও এর আশপাশের এলাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।
পুলিশের দায়িত্বরত উপ-পরিদর্শক (এসআই) মহিউদ্দিন জানান, যে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর পরিস্থিতি ঠেকাতে এই এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আব্দুল মজিদ ভুইয়া গোলাম আজমের মৃত্যুর খবর জানান। বিএসএমএমইউয়ের আইসিইউর সামনে গোলাম আযমের আত্মীয় স্বজনেরা ভিড় করেন।
গোলাম আযমের ব্যক্তিগত ব্যবস্থাপক আবুল কালাম আজাদ রাত পৌন ১১টায় বলেন, ‘স্যার আর নেই।’
কখন মারা গিয়েছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি সঠিক সময়টা বলতে পারব না। কারণ আমি তখন আপসেট ছিলাম। তবে আধা ঘণ্টারও বেশি সময় হয়েছে।’
এর আগে বৃহস্পতিবার রাতে বিএসএমএমইউর পরিচালক আবদুল মজিদ ভূঁইয়া বলেছিলেন, শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় গোলাম আযমকে কৃত্রিম শ্বাস-প্রশ্বাস যন্ত্রে রাখা হয়েছে। তিনি জানিয়েছিলেন, আজ বিকেল থেকে গোলাম আযমের শারীরিক অবস্থার কিছুটা অবনতি হয়।
এদিকে সুপ্রিম কোর্টে দণ্ডাদেশের বিরুদ্ধে করার গোলাম আযমের আপিলের বিষয়ে শুনানি আগামী ২ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হবে। একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধকালে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে গত বছরের ১৫ জুলাই গোলাম আযমকে ৯০ বছরের কারাদণ্ডাদেশ দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১। তাঁর অপরাধ মৃত্যুদণ্ড পাওয়ার যোগ্য হলেও বয়স ও শারীরিক অবস্থা বিবেচনায় তাঁকে এই দণ্ড দেওয়া হয়। এই রায়ের বিরুদ্ধেও খালাস চেয়ে ওই বছরের ৫ আগস্ট আপিল করেন গোলাম আযম। আর সর্বোচ্চ শাস্তি চেয়ে গত বছরের ১২ আগস্ট রাষ্ট্রপক্ষ আপিল করে।
মরহুমের ছেলে আব্দুল্লাহ হিল আমান আযমী জানান, শনিবার তার বাবার নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। দাফনের আগ পর্যন্ত মরদেহ মগবাজারের বাসায় লাশবাহী গাড়িতেই রাখা হবে। শনিবার কখন জানাজা এবং দাফন হবে তা পরে জানানো হবে বলে জানান আমান আযমী। তবে গোলাম আযমকে মগবাজারে পারিবারিক কবরস্থানে দাফনের পরিকল্পনা রয়েছে বলে তিনি সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছেন। এদিকে গোলাম আযমের লাশ দেখতে জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীরা তার বাসায় জড়ো হচ্ছেন। এর আগে সকাল ৭টা ২০ মিনিটে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার কর্তৃপক্ষ পরিবারের কাছে তার লাশ হস্তান্তর করে।