গোপালপুরে ষড়যন্ত্রের শিকার সাংবাদিক এ কিউ রাসেল

সুরমা টাইমসঃ স্থানীয় একটি কুচক্রী মহলের নানা ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছেন টাঙ্গাইলের গোপালপুরের ভোরের কাগজের সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মী এ কিউ রাসেল। ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে জেলা ও বিভিন্ন উপজেলায় কর্মরত গণমাধ্যম ও মানবাধিকার কর্মীরা।
জানা যায়, গোপালপুর উপজেলার আলমনগর ইউনিয়নের মাদারজানী গ্রামের ইমাম আলীর পুত্র ও ইউনিয়ন ছাত্রলীগের যুগ্ম সম্পাদক সেলিম মিঞা (১৮) ও তার ভাই আব্দুস সালাম (২২) দীর্ঘ দিন যাবৎ একই গ্রামের প্রয়াত জসিম উদ্দিনের ছেলে কৃষক সাইফুল ইসলাম মানিক (৪৫) এর নিকট ২ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করে আসছিল। দাবিকৃত ওই টাকা না দেওয়ায় গত ২রা জানুয়ারি তারিখ বেলা ১০টার দিকে ওই এলাকার আব্দুল করিমের দোকানের নিকট হতে মানিকের পুত্র সুজন (১৬) কে ধরে নিয়ে বেধড়ক প্রহার ও সেলিম মিঞার নেতৃত্বে গত ৮ই এপ্রিল মঙ্গলবার বেলা ২টার দিকে মানিকের মেয়ে আলমনগর ইউনিয়ন বালিকা বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির মেধাবী ছাত্রী শান্তা (১৩) কে জোর পূর্বক অপহরণ করে। গত ৩০শে মে শুক্রবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে চাঁদার দাবিতে ওই গ্রামের ইমাম আলী (৫৫) এর হুকুমে আসামী সেলিম মিঞা (১৮), আব্দুস সালাম (২২), পল্টু (১৮), মুক্তার (৩৫), জীবন (১৮), মাজহারুল (২৫), বাদশা মিঞা (১৮) গংরা পরিকল্পিত ভাবে অনধিকার ভাবে বাড়িতে প্রবেশ করে বসত ঘরে হামলা ও ভাঙচুর চালিয়ে লক্ষাধিক টাকার ক্ষয়ক্ষতির করে। জীবন ভয়ে পরিবার পরিজন নিয়ে পালিয়ে বেড়ানো কৃষক সাইফুল ইসলাম মানিক টাঙ্গাইল জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আমলী আদালত, গোপালপুর-টাঙ্গাইলে ৮ জনকে অভিযুক্ত করে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলা নং-১০৫, তারিখ : ০৪ জুন ২০১৪ইং। আদালত ১৮ জুলাইয়ের মধ্যে ঘটনার তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করার জন্য গোপালপুর থানার ওসিকে নির্দেশ দেন।
এ ঘটনায় গত ৭ জুন জাতীয় এবং স্থানীয় একাধিক দৈনিক পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ হয়। সংবাদ প্রকাশের পর হতেই আসামীরা ক্ষুব্ধ হন গোপালপুর প্রেসক্লাবের সদস্য, ভোরের কাগজের সাংবাদিক ও বাংলাদেশ মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থা গোপালপুর উপজেলা শাখার সম্পাদক এ কিউ রাসেলের উপর। তাকে হত্যাসহ নানা ধরণের হুমকি ধামকি দিতে থাকে আসামী আব্দুস সালাম। এরই ধারাবাহিকতায় সাংবাদিক এ কিউ রাসেলের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র মূলক কয়েকটি ভিত্তিহীন অভিযোগ এনে গত ৭ই জুলাই গোপালপুরে ৩/৪জন সাংবাদিকের উপস্থিতিতে একটি সংবাদ সম্মেলন করেন আসামীরা। সম্মেলন শেষে ‘গোপালপুরে বানোয়াট খবর ছেপে টাকা দাবির অভিযোগে মিডিয়া কর্মীর বিরুদ্ধে সাংবাদিক সম্মেলন’ শিরোনামে একটি সংবাদ তৈরি করে অন-লাইন সংবাদপত্রসহ বিভিন্ন পত্রিকায় একটি সংবাদ প্রকাশ করেন।
এ ব্যাপারে সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মী এ কিউ রাসেল বলেন, ‘মামলার বাদি সাইফুল ইসলাম মানিক নানা ভাবে হয়রানির শিকার হচ্ছে। আর তার কন্যা শান্তার জন্ম (আলমনগর ইউনিয়ন পরিষদের জন্ম সনদ মোতাবেক) ৫ ফেব্র“য়ারি ২০০১ইং। অর্থাৎ শান্তার বয়স ১৩ বছর। আমি সংগঠনের কাজে একদিন সন্ধ্যায় ওই এলাকা সরজমিন পরির্দশন করি। এ ঘটনায় আমার কোন কাগজে এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়নি। আব্দুস সালাম আমার কাছে ভোরের কাগজে প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদের প্রতি কলাম ইঞ্চির বিল রেট জানতে চাইলে তাকে তিন হাজার ২শত টাকা আমি জানিয়ে দেই। যে প্রতিবেদন সংবাদপত্র গুলোতে প্রকাশ হয়েছে তা আদালতে যে মামলা হয়েছে তার বরাত দিয়েই প্রকাশিত হয়েছে। আর ১৩বছরের কিশোরী অপহরণের বিষয়টি নারী-শিশু নির্যাতনের দমন আইনের মধ্যে পড়ে। আর সেই মামলার দ্বিতীয় আসামী কি ভাবে একটি মনগড়া সংবাদ সম্মেলন করেছে তা নিয়ে আমার যথেষ্ট প্রশ্ন রয়েছে। আর সেই সম্মেলন নিয়ে ‘গোপালপুরে বানোয়াট খবর ছেপে টাকা দাবির অভিযোগে মিডিয়া কর্মীর বিরুদ্ধে সাংবাদিক সম্মেলন’ শিরোনামে সংবাদই প্রমাণ করে আমার বিরুদ্ধে চলমান ষড়যন্ত্রের একটি অংশ।’
বাংলাদেশ মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থা গোপালপুর উপজেলা শাখার সভাপতি মোঃ আব্দুল লতিফ জানান, ‘প্রথিতযশা সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মী এ কিউ রাসেল এর নামে উদ্দেশ্য প্রনোদিত ভাবে তার সুনাম ক্ষুন্ন করার লক্ষ্যে একটি মহল ষড়যন্ত্র মূলক অপপ্রচার অব্যহৃত রেখেছে। বিষয়টি তারই ধারাবাহিকতার একটি অংশ। সংবাদ সম্মেলনের লিখিত বক্তব্য পাঠকারী আব্দুস সালাম আদালতকে অসম্মানসহ সাংবাদিক রাসেলের নামে মিথ্যাচার করেছে। অবিলম্বে আমরা তাকে গ্রেফতারের দাবি জানাচ্ছি।’