কুশিয়ারা নদী দিয়ে পাচার হচ্ছে অবৈধ বাঁশ

bamboo-osmaninagar-sylhet-5-7-2014ওসমানীনগর প্রতিনিধিঃ ওসমানীনগরের শেরপুর এলাকা হয়ে বয়ে যাওয়া কুশিয়ারা নদী পথে প্রতিনিয়ত অবৈধভাবে বাঁশ পাচার করছেন ব্যবসায়ীরা। এসব অবৈধ বাঁশ পাচার নিয়ে ইতিমধ্যে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে সংবাদ পরিবেশেন করা হয়। এরপর কিছুদিন বাঁশ পাচার বন্ধ থাকলেও বনবিভাগের উধ্ধর্তন কর্তৃপরে যোগসাজসে সরকারি বন জঙ্গল উজার করে অবৈধ পথে আনা বাঁশ আবারও প্রতিদিন পাচার হচ্ছে। কুশিয়ার নদী পথে বাঁশসহ বিভিন্ন সরকারী মালামাল পাচার বন্ধ করতে ওসমানীনগরের সীমান্তবতী এলাকার মুনুমুখ ফরেষ্ট চেক ষ্টেশন স্থাপন করা হলেও ষ্টেশন কর্মকর্তারা পাচারকারীদের কাছ থেকে বড় অংকের টাকা আদায় করে নিজেরাই রক সেজে গেলেও কোন ব্যবস্থা নেয়নি সংশ্লিষ্ট বিভাগের উর্ধ্বতন কর্তৃপ।
গত জুন মাসে প্রায় ৩৫ হাজার অবৈধ জাই ও বরুয়া জাতের বাঁশ ও ২৭ হাজার মুলি বাশঁ কুশিয়ারা নদীর এ এলাকা দিয়ে নিয়ে যাওয়ার পথে আটকের পর অর্থিক সুবিধা নিয়ে ছেড়ে দিয়েছেন মুনুমুখ ফরেষ্ট চেক ষ্টেশনের ইনর্চাজ মুহিবুর হোসেন, গার্ড ইছা নুর। বাশঁ পাচারে সহযোগিতার জন্য স্থানীয় রাশিদ নামের এক মৎস্য ব্যবসায়ীকে লাটিয়াল বাহিনীর প্রধান করে সরকারী অফিসের দিন-রাত বসিয়ে রাখেন ঐ কর্মকর্তারা। পাচার কালে এলাকাবাসী কেউ প্রতিবাদকারী হয়ে উঠলে রাশিদ গাঁেয়র জোরে তা সমাধান করে দেন।
ষ্টেশন ইনচার্জ মুহিবুর হোসেন বিভিন্ন অযুহাতে জেলা শহরের আবাসিক হোটেলে অবস্থান করে সপ্তাহে ১ দিন মুনুমুখ চেক ষ্টেশন অফিসে এসে গার্ড ইছানুর ও অলিখিত চাকুরীজিবী রাশিদের কাছ থেকে সমস্ত সপ্তাহের অর্থকরীা হিসাব বুঝে নেন। ইছা নুর মনুমুখ ফরেষ্ট চেক ষ্টেশন অফিসে যোগদানের পর থেকে প্রতিনিয়ত ভাবে অবৈধ বাঁশ ছেড়ে দিচ্ছেন যা এখন স্থানীয় মানুষের মুখরোচক হয়ে দাড়ালে বন বিভাগের উধ্বর্তন কর্মকতাতাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছেনা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বাঁশ ব্যবসায়ীরা জানান, রাতের বেলা কুশিয়ারা নদি দিয়ে বাঁশ নিয়ে যেতে হলে মুনুমুখ চেক ষ্টেশনের ইছা নুর ও তাদের লাটিয়াল বাহিনী রাশিদ উল্যাকে মোটা অংকের ঘুষ দিতে হয়। ইছানুর ও রাশিদকে টাকা দিলে অবৈধ বাঁশ ও বৈধ হয়ে যায়। টাকা না দিতে পারলে তারা আমাদের অশ্লালিন ভাষায় গালিগালাজ শুরু করে বাঁশ আটক করে।
অনুসন্ধানে জানা যায়, গত ৬ জুন আদমপুরের এলাকার বাঁশ ব্যবসায়ী আব্দুল মতিন এর ৫ হাজার ও ৭ জুন জাঁই বড়–য়া ১ হাজার বাশঁ, ৮ জুন আদমপুরের ব্যবসায়ী আরজান আলীর ৮শ জাঁই বড়–য়া বাশঁ, ৯ জুন ননাইরপাড়ের ব্যবসায়ী মকিদের জাঁই-বড়–য়া ১৪শ বাশ, ১০ জুন নন্দাই পাড়ারের ব্যাবসায়ী জাঁই-বড়–য়া ২২শ বাশঁ, ১১ জুন অপর এক ব্যবসায়ী জাঁই বড়–য়া ১ হাজার বাশঁ, ১৩ জুন ঝাই-বড়–ঁয়া ১ হাজার বাঁশ, ১৬ জুন লাকাই ব্যবসায়ী আরজান আলীর, ৯ হাজার মুলি বাঁশ, ১৭ জুন লাকাইর বাঁশ ব্যবসায়ী কাউয়ুম এর ৭ হাজার মুলি বাঁশ, ১৮ জুন লাকাইর ব্যবসায়ী মজিবের ১১ হাজার মুলি বাশঁ, ২৮ জুন আদমপুরের বাঁশ ব্যবসায়ী আব্দুল হান্নান ঝাই-বড়–য়া জাতের ১২শ বাঁশ, নন্দাই পাড়ের বাঁশ ব্যবসায়ী রফিক মিয়ার ৪ হাজার বাঁশ নদীপথে বহন করা হয়। কুশিয়ারা নদীপথে যাওয়ার পথে বাঁশসহ লোকজনদের নৌকা মাঝি নরুল ইসলাম ও মুনু মুখ ফরেষ্ট ষ্টেশনের সোর্স কামাল মিয়া উপস্থিতিতে ষ্টেশন কর্মকর্তা মুহিবুর হোসেন, গার্ড ইছানুর এসময় বাঁশ গুলো অবৈধ দেখিয়ে জদ্ব করেন। পরে ব্যবসায়ীদের আটক করে ষ্টেশনে নিয়ে যান । পরবর্তীতে টাকার বিনিময়ে প্রায় ৫ ল টাকার বাঁশ তিনি ছেড়ে দেন।
মনুমুখ ফরেষ্ট চেক অফিসের ইনচার্জ মুহিবুর হোসেনের সাথে যোগাযোগ করা হলেও তিনি জেলা শহরে আবাসিক হোটেলে অবস্থান করে চাকুরী করার সত্যতা স্বীকার করে বলেন আমি অধিকাংশ সময়ে বাইরে থাকতে হয় এগুলো নিয়ন্ত্রন করে ইছানুর ও রাশিদ । এসময় রাশিদের পরিচয় সর্ম্পকে জানতে চাইলে তিনি লাইন কেটে দেন।
মৌলভীবাজার বন সংরন কর্মকর্তা সাজ্জাদুর রহমান মুনুমুখ চেকষ্টেশন কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে আগে একাধিক অভিযোগের সত্যতা স্বীকার করে বলেন বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।
এব্যাপারে সিলেট বিভাগীয় ফরেষ্ট কর্মকর্তা দিলোওয়ার হোসেন বলেন, মনুমুখ চেক ষ্টেশনে এ রকম হয়ে থাকলে আমার জানা নেই। তদন্তক্রমে এগুলোর সত্যতা পাওয়া গেলে জড়িতদের বিরুদ্ধে অবশ্যই বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।