মৃত্যুর আগে ছাত্রদল নেতা জিল্লুর লেখা হৃদয়বিদারক চিটি
ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছিলেন আদ্যপান্ত- মৃত্যুর আগেই খুনের হুমকী পেয়েছিলেন জিলু
সুরমা টাইমস ডেস্কঃ গোবিন্দগঞ্জ ডিগ্রী কলেজ ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি, সিলেট জেলা ছাত্রদল নেতা জিল্লুল হক জিলুর দাফন সম্পন্ন হয়েছে। শনিবার বিকেলে পালপুর জালালিয়া আলিম মাদ্রাসা মাঠে ২য়দফা যানাজা শেষে পারিবারিক গোরস্থানে তার দাফন সম্পন্ন হয়। দলীয় কোন্দলে খুন হওয়া ছাত্রদল নেতা জিল্লুল হক জিলু মৃত্যুর আগেই হুমকী পেয়েছিলেন প্রাণনাশের। তার বিরুদ্ধে দলেরই একটি সংঘবদ্ধ চক্র কাজ করছিল বলে জানিয়েছিলেন তিনি। নিজের ফেসবুক স্ট্যাটাসে তিনি লিখেছিলেন এ বিষয়ে।
তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে জিলু লিখেছিলেন, সুবিদবাজার অঞ্চলের সিলেট মহানগর বি এন পির এক নেতা এবং তার সাঙ্গ পাঙ্গদের মিথ্যা অপপ্রচার, হুমকি এবং ষড়যন্ত্রে করনীয় কি? এই আলোকে আমার এ লিখা।
আমার আপনজন ও শুভাকাংক্ষীরা বলে অপপ্রচার ও হুমকি প্রদানকারীদের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দেয়ার জন্য । আমার মতামত, যে সরকারের অধীনে দেশে এম ইলিয়াস আলী,চৌধুরী আলম সহ শত গুমের সুরাহা নাই। আইন প্রয়োগকারীদের হাতে প্যানেল মেয়র নজরুল সহ নারায়ণগঞ্জ ট্রাজেডি, আওয়ামীলীগ নেতা নিজাম হাজারী এবং জয়নাল হাজারীদের হাতে উপজেলা চেয়ারম্যান একরামকে পুড়িয়ে হত্যা, ফেনী ট্রাজেডি, প্রতিদিন খুন রাহাজানি, সেখানে আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার ও মৃত্যুর হুমকি নিয়ে মানহানির অভিযোগ একেবারে হাস্যকর মনে হয়। বিধায় আমার এ লেখাকে আমি সাধারন ডায়েরী (জি ডি) হিসাবে ধরে নিলাম।
বন্ধুরা আপনার নিশ্চয় অবগত আছেন যে, অনেক দিন হতে একটি মহল আমার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অপরিচিত ফেইসবুক আইডি থেকে আমার মানহানির উদ্দেশ্যে অপপ্রচার চালাচ্ছে। তারই অংশ হিসাবে অল্প কিছুদিন ধরে লিখছে আমি নাকি ঢাকায় ছিনতাই প্রাক্কালে অস্ত্রসহ পুলিশের হাতে গ্রেফতার হই। আরো লিখছে আমি নাকি নারী নিয়ে গ্রেফতার হয়ে ধোলাই খেয়ে ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি। কি বলিব, আপনারাই বলুন।
যাইহোক কিছুদিন আগে রাজনৈতিক কর্মকান্ডে আদর্শজনিত কারনে গ্রুপ পরিবর্তন করি। গ্রুপ পরিবর্তনের পর একটি মহলের চক্ষুশুল হয়ে গেছি। এর পর উল্লেখিত নেতা হুমকি দিয়ে খবর পাঠায় আমাকে অস্ত্র দিয়ে গ্রেফতার করাবেন। আমাকে মেরে নাকি লাশ গুম করে ফেলবেন। উপমা প্রদান করে বলেন-কালা জামাল নাকি তার কথার অবাধ্য হয়েছিল তাই নিজ হাতে অস্ত্র রেখে তাকে র্যাব দিয়ে অস্ত্র মামলায় জেলে পাঠিয়েছেন। পরে ওই নেতার পায়ে পড়ে তার সাথে রাজনীতি করবে এই শর্তে নাকি জেল থেকে বের হয়ে আসে। এখন সে যা বলে কালা জামাল তাই করে। আমারও একই অবস্থা হবে বলে হুমকি দিচ্ছে।
বন্ধুরা শুনেন আরেক কাপুরুষিত ষড়যন্ত্রের খবরঃ কিছুদিন পুর্বে আমার এলাকা ছাতকের আনোয়ার হোসেন রাজু নামের একটি ছেলেকে কিছু লোক গনধোলাই দিয়ে মারাত্মক আহত করে। ঘটনার আগের দিন থেকেই আমি ঢাকায় ছিলাম, বাস্তবতা পর্যালোচনায় জানা যায় আনোয়ার হুসেন রাজু বিসারেব (ইউনিপে টু ইউ) এর কোম্পানির একজন কর্মকর্তা ছিল। এই হায় হায় কোম্পানীর মাধ্যমে সে সাধারণ সরলমনা মানুষের অনেক টাকা আত্মসাত করে। পরবর্তীতে ভুক্তোভুগী পাওনাদারেরা একজোট হয়ে তাকে গনধোলাই দিয়ে আহত করে। ঘটনার দিনে আমি ঢাকায় ছিলাম উপযোক্ত প্রমাণাদি থাকার পরও সেই নেতা প্রকৃত সত্যকে আড়াল করে আমাকে ১ নং আসামী করে মামলা প্রদান করে। আমি ঢাকায় থেকেও মামলার আসামী বিষয়টা কত হাস্যকর এবং নাজুক। শুধুমাত্র নেতার উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য আরো কতকিছু যে ঘটতে পারে তা বেমালুম।
হায়রে দেশের রাজনীতি! ছিঃ ছি ছিঃ
শুনেন, মামলায় আমার নাম কি জানেন? জিল্লুল হক জিলু অরফে কালু জিলু অরফে ডাকাত জিলু, আকেরজনের নাম লিখেছে নুরুল অরফে ডাকাত নুরুল নামে। বিমানবন্দর থানায় আনোয়ার হুসেন রাজুর ছোট ভাই মনোয়ার হুসেন মঞ্জুকে বাদী করে থানায় এজহার পাঠায়। নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে শেখ হাসিনার পুলিশ লীগ কর্মীরা মামলা নেয়। মামলায় মহানগর বি এন পি নেতার সাঙ্গ পাঙ্গদের মধ্যে সর্বোত্তম ব্যক্তি ২ জন (আনোয়ার হুসেন রাজুর বন্ধু) (১) কামাল আহমদ (২)মফিজ কে মামলার রাজ সাক্ষী করা হয়। আমাদেরকে ডাকাত উল্লেখ করে মামলা দিয়েছে,অথচ জানেন নেতার আশীর্বাদ পুষ্ট মামলার বাদী এবং সাক্ষীদের পরিচয়? মামলার বাদী মনোয়ার হুসেন মঞ্জু (আনোয়ার হুসেন রাজুর ছোট ভাই) বিমানবন্দর থানার ছিন-াই মামলার আসামী ছিল। আর মামলার রাজসাক্ষী কামাল আহমদের নামে কোতয়ালী থানায় তিনের অধিক ছিনতাই মামলা ছিল। আর মফিজ অস্ত্র মামলায় সাজা প্রাপ্ত, দির্ঘদিন সাজাভোগের পর বের হয়ে ওই নেতার গুনদর কর্মী হয়েছে। মফিজের নামে কয়েকটি ছিনতাই মামলাও আছে।
শুনলেনতো নেতার সাঙ্গ পাঙ্গদের মধ্যে সর্বোত্তম তিনজনের কাহিনী। বাকিরা কেমন তা বুঝে নিন। তিনজনই ছিনতাই ও অস্ত্র মামলায় জেল খেটেছেন। প্রয়োজনে তাদের ছিনতাই মামলার কপিগুলো ও অস্ত্র মামলার সাজাভোগের কপি নিয়ে সাংবাদিক সম্মেলন করব। নেতার সাঙ্গ- পাঙ্গদের চরিত্র দেখেই বুঝা যায় নেতার চরিত্র কেমন। অথচ মামলার এজাহারে তারা আমাকে বলে ডাকাত। বিষয়টা এমন যে “চোরের মায়ের বড় গলা”।
হায় হায় কোম্পানির মাধ্যমে টাকা আত্মসাৎকারী আনোয়ার হুসেন রাজু’র উপর ভুক্তভুগী পাওনাদারেরা আইন নিজ হাতে তুলে নিয়ে যে হামলা করেছে তার তীব্র নিন্দা জানাই। পাশাপাশি হায় হায় কোম্পানির হাতে সহায়-সম্বলহীন ভুক্তভুগীদের সমস্যা সুরাহার জন্য মাননীয় অর্থমন্ত্রী মহুদয়কে অনুরোধ করছি। সাথে সাথে আমাকে নিয়ে কুচক্রবাহিনী যে ঘৃণ্য খেলায় লিপ্ত হয়েছেন তা বন্ধ করার আহ্বান জানাচ্ছি। অন্যথায় এই কুচক্রী বাহিনীর সকল কু-কর্মের বিরুদ্ধে লিখতে বাধ্য হবো।
আমাকে মামলা- হামলা আর ষড়যন্ত্রের ভয় দেখাবেন না। আমি কচুরিপানার মত ভেসে আসিনি যে ইচ্ছে হলেই আমাকে উপড়ে ফেলবেন। আগে আমি এবং আমার পারিবারিক ঐতিহ্য সম্পর্কে জানুন তারপর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হোন নতুবা হিতে বিপরীত হতে পারে। আমার পরিবার আমাকে অভদ্রতা শেখায়নি। প্লিজ প্লিজ আমাকে বাধ্য করবেননা।