বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে ঝিনাইদহে ৩ কোটি টাকার ফুল বিক্রি হবে
আহমেদ নাসিম আনসারী: ১৪ এপ্রিল বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে ফুল সরবরাহে ব্যাপক তোড়জোড় চলছে ঝিনাইদহে। গত কয়েক মাস ধরে নতুন নতুন প্রজাতির ফুল গাছ রোপন ও পরিচর্যার জন্য দিনরাত পরিশ্রম করে চলেছেন এখানকার চাষিরা। ইতিমধ্যে বাংলা নববর্ষ ফুলের বাজার ধরতে সব রকমের প্রস্তুতি নিয়েছেন তারা। এবছর ফুল উৎপাদন, চাহিদা ও দামÑসবই বেশি হওয়ায় ২.৫-৩ কোটি টাকার ফুল বিক্রি হবে বলে আশা করছেন ফুলচাষি ও ব্যবসায়ীরা।
কালীগঞ্জের বড় ঘি ঘাটি গ্রামের ইনতাজ আলী বলেন, এক সময় ভারত থেকে আমাদের দেশে ফুল আমদানি হতো। আশির দশকের শেষদিকে প্রথম আমাদের এলাকায় ফুলের আবাদ শুরু হয়। তার থেকে ফুলের এ বিস্তৃতি। এখন আর ভারত থেকে ফুল আমদানি করতে হয় না। আমরাই দেশের চাহিদা মিটিয়ে থাকি। ফলে এখানকার চাষীরা ফুলের চাষ বানিজ্যিকভাবে করছে।
কালীগঞ্জ উপজেলার কালিয়াডাঙ্গা গ্রামের কুতুব উদ্দীন জানান, এক মাস আগে এক গুচ্ছ ফুল বিক্রি হত ১২০-১৪০ টাকা। সেখানে বর্তমান বিক্রয় হচ্ছে ১৮০-২০০ টাকা। দাম পেয়ে চাষীরা খুশী।
কোটচাাঁদপুর উপজেলার এলাঙ্গী গ্রামের স্বপন বিশ্বাস বলেন, আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ফুলের উৎপাদনও হয়েছে বেশি। ১ বিঘা জমিতে ফুলের চাষ করতে খরচ হয় ১২-১৫ হাজার টাকা। এবারের বাজারে চাষীরা এক বিঘা জমি থেকে ৫৫-৬০ হাজার টাকার ফুল বিক্রি করতে পারবেন বলে তাদের আশা।
ঝিনাইদহের ফুল ব্যবসায়ী মনিরুল ইসলাম জানান, এ অঞ্চলের শত শত কৃষক তাদের উৎপাদিত ফুল বিক্রির জন্য সদরের গান্না বাজার, কালীগঞ্জের বালিয়াডাঙ্গা, কোলাবাজার কোটচাঁদপুরের এলাঙ্গী ও মহেশপুরের শ্যামকুরের পাইকারি বাজারে নিয়ে আসেন। ব্যবসায়ী ও ফড়িয়ারা ওই ফুল কিনে সড়ক পথে দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করেন। এসব বাজার থেকে বিভিন্ন জাতের ফুল রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে যায়।
ঝিনাইদহ জেলা ফুল ব্যবসায়ী সমিতির সাধারন সম্পাদক জামির উদ্দীন জানান, দেশের রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা, হরতাল অবরোধের কারণে কৃষক ও ব্যবসায়ীরা মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখিন হন। এবছর ফুল উৎপাদন, চাহিদা ও দামÑবেশি হওয়ায় বাংলা নববর্ষে ফুল বিক্রি গত বছরের চেয়ে দ্বিগুণ ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা করছেন। এবারে জেলার বিভিন্ন বাজার থেকে অন্তত ২.৫-৩ কোটি টাকার ফুল বিক্রি হবে বলে তিনি জানান।