রাজনগর উপজেলা নির্বাচনের চিত্র বদলে যাচ্ছে : আওয়ামীলীগের ভরাডুবির আশংকা
মৌলভীবাজার প্রতিনিধিঃ ১৪ দলীয় সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উপজেলা নির্বাচনে একক প্রার্থী দেয়ার স্পষ্ট নির্দেশনা দিলেও, মৌলভীবাজার সদরের মত রাজনগর উপজেলা নির্বাচনে আভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বে আওয়ামীলীগের একাধিক প্রার্থী থাকার কারনে রাজনগর উপজেলায় ও সরকার দলের ভরাডুবির আশংকা করছে সাধারণ মানুসজন।আর আওয়ামীলীগের দলীয় কোন্দল ও দ্বন্ধকে কাজে লাগিয়ে এ উপজেলায় জামায়াত সমর্থিত প্রাথী জয়ী হবার ব্যাপারটি উড়িয়ে দেয়া যাচ্ছেনা। এদিকে বিএনপির জেলা সভাপতি নাসের রহমানের সাথে জামায়াতের দ্বন্ধ থাকার কারণে মৌলভীবাজার সদর উপজেলায় জামায়াত সমর্থকরা জেলা বিএনপির সেক্রেটারী খালেদা রব্বানী গ্রুপের ভিপি মিজানকে সমর্থন করায় বিপুলভোটে নির্বাচিত মিজানের বিজয়ের ব্যাপারটি এখন রাজনগরের সর্বত্র আলোচনায় আসছে। বিজ্ঞজনদের ধারনা মৌলভীবাজার সদরে জামায়াত সমর্থকরা ভিপি মিজানকে সমর্থন করায় রাজনগরে খালেদা রব্বানী বলয়ের নেতা কর্মীরা জামায়াতে ইসলামীর সমর্থক আব্দুল মান্নানের পক্ষে কাজ করছে।ফলে এ উপজেলায় জামায়াতের বিজয় অনেকটা নিশ্চিত।এদিকে রাজনগর উপজেলায় নির্বাচনী প্রতীক বরাদ্বের পর প্রথমে সমাজকল্যাণ মন্ত্রী সৈয়দ মহসিন আলী বলয়ের রাজনগর উপজেলা আওয়ামীলীগের সেক্রেটারী মুক্তিযোদ্ধা আছকির খানের নির্বাচনী মাঠে জোয়ার লক্ষ্য করা গেলেও দিনে-দিনে তা হ্রাস পাচ্ছে বলে সাধারণ ভোটাররা মন্তব্য করেছেন।এর কারন হিসাবে জানা গেছে মুক্তিযোদ্বা আছকির খান নির্বাচনী প্রচারনার কাজে আওয়ামীলীগের তৃনমুল পর্যায়ের ত্যাগী ও নির্যাতিত নেতা কর্মীদের মুল্যায়ন না করে তিনি মুল্যায়ন করছেন দলছুট নেতাদের। আর এসব দলছুট বিতর্কিত নেতাদের কারনে দলের ত্যাগী নেতা-কর্মীরা নাখোশ।তাদের কথা দুর্দিনে যাদেরকে কাছে পাইনা, সুদিনে আজ তারা দলের কান্ডারীর মত ভাব দেখাচ্ছে। এদিকে আওয়ামীলীগের দলীয় প্রার্থী হিসাবে দাবীকৃত রাজনগর উপজেলার সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মিছবাহুদ্দোজ্জা ভেলাই ভোটারদের দ্বারে-দ্বারে গিয়ে তার অতীত সকল ভুলের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করে জীবনের শেষ উপজেলা নির্বাচনে ভোট ভিক্ষা চাইছেন।মুরব্বি এ মানুসের এসব কথা-বার্তায় বরফের মত সাধারন মানুসের মন গলে যাচ্ছে।যারা ২/১ দিন আগেও মুক্তিযোদ্বা আছকির খানের পক্ষে মিছিল-মিঠিং করতে দেখা গেছে,তারা এখন কথা বলছে মিছবাহুদ্দোজ্জা ভেলাই,র পক্ষে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রাজনগর উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের কয়েকজন প্রবীন নির্যাতিত আওয়ামীলীগ নেতা জানান,আমরা সবাই এতদিন মুক্তিযোদ্বা আছকির খানের পক্ষে মাঠে কাজ করেছি।কিন্তু এখন অনেক কিছু চিন্তা-ভাবনা করছি।কারন হিসাবে তারা জানান,ফতেপুর ইউনিয়নে বিগত দিনে বিরোধীদলের কাছে স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতা-কর্মীরা অনেক নির্যাতিত হয়েছে।কয়েকদফা হামলায় স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতাকর্মীদের দোকান-পাট ভাংচুর,লুটপাট করেছে বিএনপি নামধারী কিছু চিহ্নিত সন্ত্রাসীরা।গত কদিন আগেও সন্ত্রাসীদের হামলায় ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শাহীন নিহত হয়েছে।কিন্তু আজ মুক্তিযোদ্বা আছকির খান যাকে নির্বাচনী প্রচার-প্রচারনায় অধিক মুল্যায়ন করছেন,সেই আব্দুল কাহির চৌধুরী বাবু ওরফে বাবু মেম্বার আওয়ামীলীগের নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে তার দোকান ভাংচুরের ঘটনায় থানায় এজাহার দিয়েছিলেন।গত বিএনপি সরকার আমলে তিনি আওয়ামীলীগ ছেড়ে বিএনপিতে যোগদান করে ঠিকাদারী করে কোটি-কোটি টাকা কামিয়েছেন।কিন্তু এখন তিনি বড় আওয়ামীলীগ হয়ে স্থানীয় আওয়ামীলীগের কান্ডারীর ভাব দেখাচ্ছেন।আর মুক্তিযোদ্বা আছকির খান তাকেই মুল্যায়ন করছেন।তারা বিষয়টি মাননীয় সমাজকল্যাণ মন্ত্রীর নজরে আনার ইঙ্গিত দিয়েছেন। ১৪ দলীয় জোট থেকে রাজনগর উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি ও বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান মিসবাহুদ্দোজা ভেলাই প্রার্থী হলেও ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে রাজনগর গার্লফ কমিউনিটি সেন্টারে উপজেলার সকল ইউপি আওয়ামীলীগ ও এর অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা সভাপতির অনুপস্থিতিতে সাধারণ সম্পাদক আছকির খানকে নিয়ে উপজেলা নির্বাচনের সকল পদে প্রার্থীতা বাছাই করে মতামত দেন। ১১ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় সমাজকল্যাণমন্ত্রী সৈয়দ মহসিন আলী রাজনগরে এক সভায় আছকির খানকে উপজেলা চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী ঘোষণা করেন। প্রার্থী ঘোষণাকে কেন্দ্র করে গত ১২ ফেব্রুয়ারি উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান মিসবাহুদ্দোজা ভেলাই সংবাদ সম্মেলনে সমাজকল্যাণমন্ত্রীর এ ঘোষণাকে কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগের নির্দেশনার পরিপন্থী বলে দাবি করেন। ১৪ দলীয় জোটের আহবায়ক জেলা পরিষদের প্রশাসক বীর মুক্তিযোদ্ধা আজিজুর রহমান জানান, উপজেলা নির্বাচন নির্দলীয় নির্বাচন হিসেবে পূর্বে থেকে পরিগণিত হলেও বর্তমানে তা দলীয়ভাবে চিন্তা করা হচ্ছে। কেন্দ্রীয় নির্দেশ মোতাবেক আওয়ামীলীগ প্রার্থী নির্বাচন করেছে।