নগর যুবলীগে বিদ্রোহ : একতৃতীয়াংশ সদস্য অভিযুক্ত!
অহী আলম রেজাঃ প্রায় একযুগ পর সিলেট মহানগর যুবলীগের কমিটি ঘোষনার পরও শ্বস্তি নেই। কমিটি নিয়ে দেখা দিয়েছে বিদ্রোহ। এ নিয়ে আওয়ামীলীগ নেতাকর্মীরা বিব্রত। ভেতরে বিরাজ করছে অসন্তুষ্টি। চলছে যুবলীগের একাংশে চাপা ক্ষোভ। বাদপড়া নেতাকর্মীরা বলছেন সম্মেলন না করে ও অভিযুক্তদের দিয়ে অর্থমন্ত্রী তার আত্বীয় স্বজন দিযে কমিটি করেছেন। ৬১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটির একতৃতীয়াংশই বিভিন্ন অপরাধের সাথে জড়িত থাকলেও তাদের কমিটিতে স্থান দেওয়া হয়েছে। আর এ নিয়ে দেখা দেয় বিদ্রোহ। অবিলম্বে এ কমিটি বাদ দিয়ে ত্যাগী ও পরীক্ষিত নেতাকর্মীদের দিয়ে কমিটি করার দাবি তুলেছেন নেতাকর্মীরা। সোমবার তারা নগরীতে অর্থমন্ত্রী ও দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. আহমদ আল কবিরের বিরুদ্ধে ঝাড়ু মিছিল করেন। কমিটিতে স্থান পাওয়া ও না পাওয়াদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে অভিযোগের সত্যতা নিয়ে অনুসন্ধ্যান করা হয়। এতে বেশ কয়েকজন আহবায়ক কমিটির সদস্যের বিরুদ্ধে নানা তথ্য পায়।
সূত্রমতে, নব গঠিত মহানগর যুবলীগের সদস্য কলিন্স সিংহ পূবালী ব্যাংক’র ২২ লাখ টাকা লুটসহ একাধিক মামলার আসামি। কবির আহমদ শাহজাহানও মামলার সাজাপ্রাপ্ত আসামি। বর্তমানে তিনি জামিনে আছেন। এছাড়া সাহেদ আহমদ নগরীর তালতলায় ট্রাভেলস ব্যবসায়ী মখলিছুর রহমান হত্যামামলাসহ একাধিক মামলার আসামি, জুনেদ আহমদ ফেন্সিডিল মামলার আসামি, সুলতান আলী মনসুর একাধিক মামলার আসামি, বিপ্লব পুরকায়স্থের বিরুদ্ধে মদন মোহন কলেজে ভর্তি বাণিজ্যের অভিযোগ রয়েছে। আরও কয়েকজন সদস্যের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা ও সাজা রয়েছে।
গত রোববার সিলেট মহানগর যুবলীগের কমিটি ঘোষনার পর বাদপড়া নেতাকর্মীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেন। সোমবার বিকেলে মহানগর যুবলীগের এ কমিটি প্রত্যাখান করে নগরীতে ঝাড়ু মিছিল করেন একাংশের নেতারা। মিছিলকারীরা অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিতের বিরুদ্ধে স্লোগান দেওয়ার পাশাপাশি মিছিল পরবর্তী সমাবেশে যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. আহমদ আল কবীরকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেন। নগরীর রেজিস্টারি মাঠ থেকে একটি মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি চৌহাট্টায় গিয়ে শেষ হয়।
মিছিল পরবর্তী সমাবেশে মহানগর যুবলীগের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সুদীপ দে বলেন, অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত ও তার ভাগ্নি জামাই যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য আহমদ আল কবিরকে নিয়ে পকেট কমিটি গঠন করেছেন। ত্যাগী নেতাকর্মীদের বাদ দিয়ে অর্থমন্ত্রীর পকেট কমিটি যুবলীগ নেতাকর্মীরা প্রত্যাখান করেছেন। অবিলম্বে সম্মেলনের মাধ্যমে নতুন কমিটি গঠনের উদ্যোগ না নিলে কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। সমাবেশ থেকে সিলেটে ড. আহমদ আল কবীরকে সিলেটে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়।
সমাবেশে বক্তব্য রাখেন- মহানগর যুবলীগের নব গঠিত আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক এম এ হান্নান, সাবেক ক্রীড়া সম্পাদক বিধান পাল, সাবেক আইন সম্পাদক ছাদিকুর রহমান, সাবেক সাংস্কৃতিক সম্পাদক গৌতম চক্রবর্তী, যুবলীগ নেতা আব্দুর রহমান, পিযুষ কান্তি দে, শাহনেওয়াজ আলম পলাশ প্রমুখ।
যুবলীগের ঝাড়ু মিছিল সম্পর্কে আওয়ামী লীগের প্রবীণ নেতা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুজহির চৌধুরী সুফিয়ান ােভ প্রকাশ করে বলেন, কি মতামত দিব বুঝতে পারছিনা ? মতামত দিলে ঝাড়ু মিছিল হয়।
এছাড়া একাধিক আওয়ামীলীগ নেতা কমিটি গঠনের ব্যাপারে বক্তব্য দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন। প্রসঙ্গত, গত রোববার কেন্দ্রীয় যুবলীগের সভাপতি ওমর ফারুক চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশীদ সিলেট মহানগর যুবলীগের কমিটি নিয়ে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের কার্যালয়ে যান। এ সময় নেতৃবৃন্দ অর্থমন্ত্রীর কাছে ৬১ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি জমা দেন। পরে সেখান থেকে কমিটি ঘোষণা করা হয়।