নবীগঞ্জে চাঞ্চল্যকর বেলাল হত্যাকান্ড : আসামীরা এখনো পুলিশের ধরাছোয়ার বাহিরে?

থামছে না বেলালের মা ও নববধূর আহাজারি

Belal_Nobigonjউত্তম কুমার পাল হিমেল, নবীগঞ্জ(হবিগঞ্জ) থেকে ॥ নবীগঞ্জের চাঞ্চল্যকর সিএনজি চালক বেলাল মিয়া হত্যাকান্ড ঘটনার মামলা দায়েরের ১২ দিন এবং ঘটনার ১৪ দিন অতিবাহিত হলেও আসামী আফছর মিয়া ব্যতিত পুলিশ অন্য কোন আসামীকে গ্রেফতার করতে পারেনি। তবে পুলিশের দাবী আসামীদের গ্রেফতারে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বাহুবল ও নবীগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করেও কাউকে পাওয়া যায় নি। গ্রেফতার অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানিয়েছেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা। এদিকে সন্ত্রাসীদের হাতে ছোট ছেলে বেলাল খুন, অপর বড় ছেলে হেলাল মিয়ার চোখঁ নষ্ট হয়ে যাওয়ায় পিতা ফারুক মিয়া চরম হতাশায় জীবন যাপন করছেন। পাশাপাশি বেলাল হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তÍমূলক শাস্তির দাবী করেছেন তিনি।

ঘটনার বিবরনে জানাযায়, গত ২৬ এপ্রিল বিকালে শহরের শেরপুর রোডস্থ মা-হোটেলের ও মাইওয়ান ব্যবসা প্রতিষ্টানের সামনে দাড়ানো অবস্থায় প্রতিপক্ষ ছাত্রদল নেতা রায়েছ চৌধুরী ও সামছু মিয়া’র নেতৃত্বে একদল অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী সিএনজি শ্রমিক বেলাল মিয়া কে কুপিঁয়ে রক্তাক্ত জখম করে। মূমুর্ষ অবস্থায় তাকে প্রথমে নবীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে প্রচুর রক্তকরণ হওয়ায় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে দ্রুত সিলেট নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন। পরে স্বজনরা সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে বেলাল মিয়ার মৃত্যু ঘটে। নিহত বেলাল মিয়া পৌর শহরের নোয়াপাড়া গ্রামের সাবেক পত্রিকার হকার ও সিএনজি ম্যানাজার ফারুক মিয়ার ছেলে এবং পত্রিকার এজেন্ট মোশাহিদ আলী ও মিয়াধন মিয়ার ভাতিজা। ঘাতকদের গ্রেফতার ও ফাঁিসর দাবীতে সিএনজি শ্রমিক ইউনিয়ন কপিন নিয়ে শহরে মৌন মিছিল ও শোক র‌্যালী বের করে। ২৭ এপ্রিল সোমবার বিকালে জানাযার নামাজ শেষে তাকে নোয়াপাড়াস্থ পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। এ ঘটনায় নিহতের পিতা ফারুক মিয়া গত ২৮ এপ্রিল রাতে ২৮ জনের নাম উল্লেখ্য করে এবং অজ্ঞাতনামা আরও ৭/৮ জনকে আসামী করে নবীগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা নং ৪১ তাং ২৮/০৪/২০১৫ইং দায়ের করেন। উক্ত মামলার আসামীরা দেশের বিভিন্ন স্থানে আত্মগোপনে চলে যায়। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই নজরুল ইসলাম আসামীদের গ্রেফতারে বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়েও গ্রেফতার করতে পারে নি। গত ১ লা মে ভোর রাত ৪ টার দিকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গল থানা পুলিশের সহযোগিতায় তদন্ত কর্মকর্তার নেতৃত্বে একদল পুলিশ শ্রীমঙ্গল সদরের রূপসীপুর এলাকাস্থ বোনের বাসায় অভিযান চালিয়ে আফছর উদ্দিনকে গ্রেফতার করে নবীগঞ্জ থানায় নিয়ে আসে। এরপর হবিগঞ্জ জেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়েও কাউকে না পেয়ে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। এদিকে বেলাল হত্যাকান্ডের আগের দিন সংঘর্ষে গুরুতর আহত নিহত বেলালের বড় ভাই হেলাল আহমদ’র একটি চোখ নষ্ট হওয়ার পথে। বর্তমানে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা নিয়ে যাওয়ার জন্য পরামর্শ দিয়েছেন সংশ্লিষ্ট ডাক্তার। রির্পোট লেখা পর্যন্ত নিহত বেলালের পরিবারে চলছে শোকের মাতম। কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে বেলালের মা বার বার মুর্চা যাচ্ছেন। সদ্য বিবাহিত বিধবা স্ত্রী’র আহাজারিতে এলাকার বাতাস ভাড়ি হয়ে উঠছে। শোর্কাত পরিবারের লোকজন অনতিবিলম্বে খুনিদের গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবী করেছেন। তারা বলেন, ঘাতকরা অনেকেই নবীগঞ্জসহ হবিগঞ্জের বিভিন্ন স্থানে আত্মগোপনে রয়েছে।
আসামীদের গ্রেফতার অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানিয়েছেন তদন্ত কর্মকর্তা এস আই নজরুল ইসলাম।