জুড়ীতে টিলায় ফাঁটল-২শ’ পরিবারের ঝুঁকিপূর্ণ বসবাস

Juri Tila (1)বিশ্বজিৎ রায়, কমলগঞ্জ প্রতিনিধি : কয়েক দিনের বৃষ্টিতে মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলার সদর জায়ফরনগর ইউনিয়নের গুচ্ছগ্রাম এলাকায় ‘ভজিটিলা’ নামের একটি টিলায় বড় ফাটলের সৃষ্টি হয়েছে। এ অবস্থায় ওই টিলার নিচে ঝুঁকি নিয়ে অন্তত ২শ’ পরিবার বসবাস করছে। এছাড়া মাটি কেটে বিক্রি করায় একই টিলার কালীনগর এলাকায় কয়েকটি বাড়ি ঝুঁকির মুখে পড়েছে। এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, ভজিটিলা ঘিরে তিনটি গ্রাম পড়েছে। সেগুলো হলো, গুচ্ছগ্রাম, মনতৈল ও কালীনগর। সাত-আট দিন ধরে বৃষ্টি হওয়ায় গুচ্ছগ্রামে টিলার মাঝামাঝি অংশে ফাটলের সৃষ্টি হয়। সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, গুচ্ছগ্রামের ফাটল ধরা অংশের আশপাশে আরও কিছু ফাটল রয়েছে। টিলার নিচে বেশ কিছু বাড়িঘর। গ্রামের বাসিন্দা মোবারক আলী বলেন, প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে বৃষ্টিতে টিলাটি একটু একটু করে ধসে পড়ে। বড় ফাটল দেখা দেওয়ায় তাঁরা আতংকে রয়েছেন। টিলার নিচে টিন-বাঁশের তৈরি ঘরে বসবাসকারী দিনমজুর পারভিন বেগম বলেন, ‘রাইতে ঘুম অয় না। ভয়ে থাকি কোন সময় যে টিলাটা ধসি পড়ে। বাড়ি ছাড়ি যাইমু কই।’ নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি অভিযোগ করেন, এলাকার কিছু দরিদ্র লোক প্রতিদিন টিলার বিভিন্ন স্থানে মাটি খুঁড়ে ছোট ছোট পাথর বের তা বিক্রি করেন। বৃষ্টিতে খোঁড়া অংশ দিয়ে মাটি ধসে পড়তে থাকে। কালীনগর গ্রামে টিলার উপর ও নিচে ২০-২৫টি বাড়িঘর ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় দেখা যায়। ওই গ্রামের বাসিন্দা কাতারপ্রবাসী রফিক মিয়া অভিযোগ করেন, এলাকার কিছু লোক টিলা কেটে মাটি বিক্রি করছেন। প্রায়ই রাতে ট্রাকে করে মাটি বিভিন্ন জায়গায় নিয়ে যাওয়া হয়। মাটিবহনকারী ট্রাকের চাপে গ্রামের পাকা সড়ক ও কালভার্ট ভেঙে পড়েছে। জায়ফরনগর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মজহর আলী বলেন, ভজিটিলার গুচ্ছগ্রাম, মনতৈল ও কালীনগর এলাকায় অন্তত ২০০ পরিবার ঝুঁকি নিয়ে বাস করছে। সম্প্রতি বৃষ্টিতে মাটি ধসে গুচ্ছগ্রামের ১৫-২০টি বসতঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। জায়ফরনগর ইউনিয়নের ভূমি সহকারী কর্মকর্তা মোহাম্মদ রকিব আহমদ বলেন, মাটি কেটে ও পাথর খুঁড়ে বিক্রি বের করায় ভজিটিলার এ অবস্থা হয়েছে। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে একাধিকবার প্রতিবেদন পাঠানো হয়েছে। জুড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ নাছির উল্যাহ খান মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, ভজিটিলায় ফাটলের তথ্যটি তাঁরা জানা নেই। খোঁজ নিয়ে এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।