ছাতকে কালবৈশাখির তান্ডবে বৃদ্ধা নিহত ॥ আহত ৩০ : শতাধিক ঘরবাড়ি বিধ্বস্থ
ডেস্ক রিপোর্টঃ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তীব্র কালবৈশাখি ঝড় বয়ে গেছে সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলার উপর দিয়ে। ঝড়ে বিধ্বস্থ হয়ে পড়েছে শতাধিক ঘরবাড়ি। ঘরের নিচে চাপা পড়ে নিহত হয়েছেন এক বৃদ্ধা। আহত হয়েছেন আরো অনন্ত ১০ জন। আহতদের স্থানীয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
ছাতক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আরিফুজ্জামান জানান, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬ টার দিকে ছাতকে কালবৈশাখি ঝড় শুরু হয়। প্রায় ঘন্টাব্যাপী এই ঝড়ে শতাধিক কাঁচা ও আধাপাকা বাড়ি ভেঙ্গে পড়েছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে উপজেলার চরমহল্লা ও দক্ষিণ খুরমা ইউনিয়ন।
তিন জানান, ঝড়ে ঘরের নিচে চাপা পড়ে আনোয়ারা বেগম (৫৫) নামে এক বৃদ্ধা মারা গেছেন। তিনি উপজেলার চরমহল্লা ইউনিয়নের মারফির চর গ্রামের আব্দুল খালেকের স্ত্রী। এছাড়া আরো অনন্ত ১০ জন আহত হয়েছেন বলে জানান ইউএনও। ঝড় থামলেও রাত ১১ টা পর্যন্ত উপজেলাজুড়ে বৃষ্টি অব্যাহত ছিলো।
উপজেলার চর মহল্লা, দক্ষিণ খুরমা, সদর, নোয়ারাই, ইসলামপুর ও জাউয়াবাজার ইউনিয়নের পাশাপাশি ছাতক পৌরসভার উপর দিয়ে বয়ে যায় ঝড়। তবে, উপজেলার খরিদীরচর ,আদলানি, পুড়াদানি, হরিচরণ,চরমাধব, হাসারুচর, নূরেরচক, টেডিয়ারপার, চুনারুচর, চরমহল্লাহ চেটিয়ারচর বাজার এলাকায় ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হয়। সন্ধ্যা ৬ টায় শুরু হয়ে মাত্র ২০ থেকে ২৫ মিনিটে লন্ডভন্ড হয়ে যায় পুরো এলাকা। শত শত ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছ্ ে। প্রায় ৮০ ভাগ কাঁচা ঘর নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে। গাছ-পালা উপড়ে পড়ে বিদ্যুত ও যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়ে। দোকান-পাটের চাল উড়িয়ে নিয়ে যাওয়ায় প্রচুর মালামাল নষ্ট হয়েছ্।ে এদিকে, চরমহল্লাহ ইউনিয়নের খরিদিচর গ্রামের আব্দুল হকের স্ত্রী আনোয়ারা বেগম (৫০) ঘর চাপা পড়ে নিহত হয়েছেন। ছাতক উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও ছাতক থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে ।
এছাড়া, দক্ষিণ খুরমা ইউনিয়নে মহিলা ও শিশু সহ আরো ৮ জন আহত হয়েছেন। আহতরা হচ্ছেন, স্বপ্ন বেগম (২৩), মারুফ মিয়া (৩০), মদরিস আলী(৬০), মানিক মিয়া (৩৫), সিরিয়া বেগম (৩০), সাইদুল ইসলাম (৮), নুরজাহান (৩৫), এস এ কাইয়ুম(৫৫)। এর মধ্যে ৩ জনকে কৈতক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অপর ৫ জন প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।
ছাতক উপজেলা চেয়ারম্যান অলিউর রহমান চৌধুরী বকুল গতরাতে জানান, খবর পেয়ে তিনি রাতে আনোয়ারা বেগমের বাড়িতে যান। এ সময় তিনি আনোয়ারার পরিবারের হাতে ২০ হাজার টাকা তুলে দেন। তিনি নিহতের পরিবারের সদস্যদের সমবেদনা জানান। তিনি জানান, ঘূর্ণিঝড়ে সেখানকার অনেক গ্রাম লন্ড ভন্ড হয়ে গেছে। তিনি জানান, ঘূর্ণিঝড়ে খরিদীরচর গ্রামের আব্দুল মতিনের একটি গাভির পেট কেটে গেছে। সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়কের জাউয়াবাজার অংশে শতাধিক গাছ উপড়ে পড়ে। এ কারণে যান চলাচল ব্যাহত হয়।
এদিকে, চর মহল্লা ইউনিয়নের নব নির্বাচিত চেয়ারম্যান আবুল হাসনাত ঝড়ে তার ইউনিয়নে ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হয়েছে বলে জানান।
ছাতক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আবু শাহাদাত মো. লাহিন দুর্গতদের দ্রুত সহায়তা দেয়ার দাবী জানিয়েছেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আরিফুজ্জামান জানান, ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে তিনি খবর নিচ্ছেন। আজ শুক্রবার সকালে তিনি ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শনে যাবেন। তাদের সহায়তার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান তিনি।