বাংলাদেশের গণতন্ত্র আজ সুপ্রতিষ্ঠিত : সিলেট সংবর্ধনার জবাবে অর্থমন্ত্রী
ডেস্ক রিপোর্টঃ রাষ্ট্রীয় সম্মাননা ‘স্বাধীনতা পদক’ পাওয়ায় সিলেট জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে দেওয়া গণসংবর্ধনার জবাবে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত এমপি বলেছেন, আজ আমাকে যে ভালবাসা দেখিয়েছেন তাতে আমি একান্তই অভিভূত। যা ভাষায় ভাষায় চিত্রায়িত করার সাধ্য আমার নেই।
তিনি বলেন, আমি সকলের প্রতি কৃতজ্ঞ। আমি যে আমিই হয়েছে সেটা তো এখানেই। আমার শক্তি এখানে, আমার বাড়ি এখানে। এখানে আমার সবকিছু। এ সমাজে আমি বড় হয়েছি। আপনারা যারা আমার প্রতি সম্মান দেখিয়েছেন, সেটা কোন অবস্থায় ভুলবার নয়। আমি বারবার আপনাদের কাছে ফিরে আসবো।
শনিবার সন্ধ্যায় সিলেটের রিকাবীবাজারস্থ কাজী নজরুল ইসলাম অডিটরিয়ামে তাকে গণসংবর্ধনা দেওয়া হয়। এসময় দেশের সার্বিক প্রেক্ষাপট তুলে ধরে মন্ত্রী বলেন, জাতিসংঘ ২০৩০ সালের মধ্যে পৃথিবী থেকে দারিদ্র দূর করার পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশে আগামী ২০২১ সালের মধ্যে দরিদ্রতার হার ১০ ভাগে নেমে আসবে।
তিনি বলেন, দারিদ্রসীমা ১০ থেকে ১১ শতাংশে নিয়ে আসতে পারলে দেশে দরিদ্রতা থাকবে না। কারণ, কিছু লোক সবসময় রাষ্ট্রের উপর নির্ভরশীল থাকে। এরা হচ্ছে বয়স্ক-বঞ্চিত ও প্রতিবন্ধি লোক।
অর্থমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে এখনো প্রায় ৩ কোটি লোক গরিব। দারিদ্র বিমোচনের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার সবধরণের উদ্যোগ নিচ্ছে। এরফলে ২০২১ সালে বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হবে এবং একই সাথে দারিদ্রও বিমোচন হবে।
এর কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেন, বাংলাদেশের মানুষ খুবই বুদ্ধিমান। বাংলাদেশে কৃষি জমি কমলেও সাধারণ কৃষকরা প্রখর বুদ্ধি ও দক্ষতার মাধ্যমে কৃষি বিপ্লব ঘটিয়েছে। দেশে এখন খাদ্য ঘাটতি নেই।
বাংলাদেশে গণতন্ত্র আজ সুপ্রতিষ্ঠিত উল্লেখ করে তিনি বলেন, গণতন্ত্রের প্রধান রক্ষাকবচ হচ্ছে নির্বাচন। সেই অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। শেখ হাসিনা এটি করে দিয়েছেন। এজন্য তাঁকে ধন্যবাদ দিতে হবে। নির্বাচনি যত সংস্কার হয়েছে সবগুলোর কৃতিত্ব শেখ হাসিনার বলেও মন্তব্য করেন মন্ত্রী।
আবুল মাল মুহিত বলেন, আমাদের সরকারের দ্বিতীয় কাজটি হচ্ছে মানবাধিকার ও শৃংখলা প্রতিষ্ঠা। একাজ কষ্টকর হলেও একদিন তা প্রতিষ্ঠিত হয়ে যাবে। এক্ষেত্রে সরকার অনেকটা সফলও হয়েছে।
তিনি বলেন, কিছুদিন আগেও দেশে জ্বালাওপোড়াও হয়েছে। কিন্তু আজ তা বিদায় করে দেওয়া হয়েছে। খালেদা জিয়া এই অস্থিতিশীলতার রাস্তা থেকে সরে এসেছেন। আমাদের উদ্দেশ্য সফল হয়েছে।
বাংলাদেশের স্বাধীনতার ইতিহাস উল্লেখ করতে গিয়ে প্রবীণ এই মন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু মানে বাংলাদেশ, বঙ্গবন্ধু মানেই বিজয়। তিনি সরকারি দায়িত্ব ছেড়ে দিয়ে আওয়ামী লীগকে তৃণমূল থেকে সংগঠিত করেছেন। যার ফলশ্রুতিতে তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতা এনে দিয়েছেন। ৯ মাস আমরা তার নামেই যুদ্ধ করেছি।
সিলেট সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের বর্তমান সভাপতি বদর উদ্দিন আহমদ কামরানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ, সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ইমরান আহমদ, জাতিসংঘস্থ বাংলাদেশ মিশনের সাবেক স্থায়ী প্রতিনিধি ড. একে আবদুল মোমেন।
জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শফিকুর রহমান চৌধুরীর পরিচালনায় এতে আরো বক্তব্য রাখেন ও উপস্থিত ছিলেন মহানগর সাধারণ সম্পাদক আসাদ উদ্দিন আহমদ, আওয়ামী যুবলীগের কেন্দ্রীয় প্রেসিডিয়াম সদস্য অর্থনীতিবিদ ড. আহমদ আল কবির, জাতীয় চা বোর্ডের চেয়ারম্যান সাবেক সচিব ড. একে মুবিন, ওসমানী মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ডা. মুর্শেদ আহমদ চৌধুরী, সিলেট জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট সামিউল আলম প্রমুখ।
শুরুতে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, মহিলা লীগ, ছাত্রলীগসহ বিভিন্ন অঙ্গসহযোগি সংগঠন, সামাজিক সংগঠন, পেশাজীবী সংগঠনের পক্ষ থেকে অর্থমন্ত্রীকে ফুল ও ক্রেস্ট দিয়ে সংবর্ধনা জানানো হয়।