তনু ইস্যু ধামাচাপা দিতে নাজিম হত্যা: ইমরান

gonojagoron monchডেস্ক রিপোর্টঃ সেনানিবাস এলাকায় কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজের ছাত্রী সোহাগী জাহান তনু হত্যাকাণ্ড ধামাচাপা দিতেই জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র অনলাইন এক্টিভিস্ট নাজিমুদ্দিন সামাদকে খুন করা হয়েছে বলে সন্দেহ করছেন গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ইমরান এইচ সরকার।

সিলেটে গণজাগরণমঞ্চের আন্দোলনে যুক্ত থাকা নাজিমউদ্দিন সামাদের হত্যার প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার রাজধানীর শাহবাগে এক সমাবেশে নিজের এই সন্দেহের কথা প্রকাশ করেন ইমরান।

তিনি বলেন, দেশে অপরাধ ধামাচাপা দেওয়ার নতুন মডেল তৈরি হয়েছে।

তনু হত্যার প্রতিবাদে চলমান আন্দোলনের মধ্যেই বুধবার রাতে পুরান ঢাকার সুত্রাপূরে কুপিয়ে ও গুলি চালিয়ে হত্যা করা হয় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র নাজিমকে।

ইমরান বলেন, “শুধু নাজিমুদ্দিন সামাদই নন, কিছুদিন আগে খুন হয়েছেন মসজিদের মুয়াজ্জিন, ইমাম, মন্দিরের পুরোহিত, গির্জার যাজক। একটির পর একটি ঘটনা ঘটে চলছে।

দেশে গুম খুনের রাজনীতি চলছে উল্লেখ্য করে তিনি বলেন,
“সোহাগী জাহান তনুকে ধর্ষণের পর হত্যার প্রতিবাদে যখন সারাদেশের মানুষ সোচ্চার, তখনই এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়ে আগের খুন-ধর্ষণের ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করা হল।”

একের পর এক খুনের জন্য সরকারের নিষ্ক্রিয়তাকে দায়ী করে ইমরান বলেন, “আপনারা একদিন আনসারুল্লাহ, একদিন অমুক, একদিন তমুককে দায়ী করে ফাঁকা বুলি দিচ্ছেন, অপরাধীদের ধরায় কোনো আগ্রহ দেখাচ্ছেন না।

“তাই আমাদের সন্দেহ জাগে, এই হত্যার পেছনে এমন কেউ আছে, যে কারণে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কালো চশমা পরে আছে। তাই নাজিমুদ্দিন হত্যার দায় সরকারের উপরেই বর্তায়।”

“নাজিমুদ্দিন বঙ্গবন্ধুর আদর্শের কথা বলত। তারপরও রিজার্ভ লুট, তনু ধর্ষণ আর হত্যার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করায় তাকে খুন হতে হল।”

ওলামা লীগের বিরুদ্ধে নাজিমুদ্দিনের কথা বলার বিষয়টি উল্লেখ করে গণজাগরণের মুখপাত্র বলেন, “নাজিমুদ্দিন সরকারি দলের সাথে সংশ্লিষ্ট ছিলেন। তারপরও শুধু অন্যায়ের সাথে আপস না করায়, ওলামা লীগের বিরুদ্ধে বলায় তাকে খুন হতে হল।

ইমরান প্রশ্ন রেখেছেন, “ আমাদের সন্দেহ হয়, ক্ষমতায় আওয়ামী লীগ, না কি ওলামা লীগ?”

তনু, নাজিমুদ্দিনসহ সব হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে শুক্রবার বিকালে শাহবাগে সংহতি সমাবেশের কর্মসূচিও ঘোষণা করেন ইমরান।

সমাবেশে মঞ্চের সংগঠক মারুফ রসূল, উদীচীর সহসাধারণ সম্পাদক সঙ্গীতা ইমাম, ব্লগার বাকি বিল্লাহ, প্রকৌশলী শম্পা বসু, ভাস্কর রাশা বক্তব্য দেন।

বিক্ষোভ সমাবেশ শেষে একটি মশাল মিছিল বের করেন গণজাগরণ মঞ্চের নেতাকর্মীরা।

বুধবার ( ৬ এপ্রিল) রাত সাড়ে ৮টার পরে রাজধানীর সূত্রাপুর এলাকায় অজ্ঞাত দুর্বৃত্তদের চাপাতি ও গুলির আঘাতে নিহত হন নিজামুদ্দিন সামাদ। তাকে হত্যা করার সময় খুনিরা “আল্লাহু আকবর” বলে স্লোগান দেয় বলে এলাকাবাসি জানিয়েছিলেন। সামাদ প্রগতিশীল আন্দোলনের সাথে যুক্ত ছিলেন। সামাজিক যোগাযোগ মধ্যম ফেসবুকে ধর্মান্ধতার বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলেন তিনি।