৮০০ কোটি টাকা চুরি কোনো ঘটনাই না : এফবিসিসিআই সভাপতি
ডেস্ক রিপোর্ট :: ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের (এফবিসিসিআই) সভাপতি আবদুল মাতলুব আহমেদ দাবি করেছেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে টাকা চুরি করেছে ‘ছেঁচড়া চোররা।’ এ ঘটনায় অভিযুক্তরা ‘অত বড় চোর নয়।’ রোববার রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁওয়ে এক অনুষ্ঠান শেষে তিনি এ মন্তব্য করেন।
তিনি দাবি করেন, তাই রিজার্ভ থেকে ৮০০ কোটি টাকার বেশি হাতিয়ে নিতে পারেনি। যেখানে ২৮ বিলিয়ন ডলার কিংবা ২ হাজার ৮০০ কোটি ডলার রয়েছে, সেখানে ৮০০ কোটি টাকা নিয়ে যাওয়া কোনো ঘটনাই নয় বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
‘বাংলাদেশ ট্রেড পোর্টাল’ ওয়েবসাইট উদ্বোধন উপলক্ষে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে বক্তব্য শেষে সাংবাদিকদের এ সংক্রান্ত প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন। অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ছিলেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ। অন্যান্যের মধ্যে এ নুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন- বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব হেদায়েতুল্লাহ আল মামুন, প্রশাসনিক সচিব কাজী সালাউদ্দিন আকবর প্রমুখ।
এ প্রসঙ্গে মাতলুব আহমেদ আরও বলেন, আমি যেটা বলছি তা হল, ‘এটা কোনো বিষয় না। তিনি প্রশ্ন রেখেই বলেন, কয় টাকা গিয়েছে? ২৮ বিলিয়নই নিতে পারত না? ওটাতো নেয়নি। চুরির ঘটনাটি খতিয়ে দেখতে ইতিমধ্যে তদন্ত শুরু হয়ে গেছে। এমনও হতে পারে এখান থেকে কেউ কোড দিয়ে দিয়েছে। এখন তদন্ত চলছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে টাকা হাতিয়ে নেয়ার কারণে আর্থিক খাতে কী ধরনের প্রভাব পড়তে পারে- এমন প্রশ্নের জবাবে মাতলুব বলেন, বুঝতে হবে কতগুলো টাকা চুরি হয়েছে। আজ যদি সবার টাকা নিয়ে যেত, যদি ২৮ বিলিয়ন ডলারের মধ্যে ২৮ বিলিয়ন ডলারই নিয়ে যেত, তাহলে বুঝতাম আর্থিক খাতে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।’
বাংলাদেশ ব্যাংকের সব কম্পিউটারে ভারতের এক ব্যক্তির সফটওয়্যার ব্যবহার করা হচ্ছে- এটি কি ঝুঁকিপূর্ণ? এর জবাবে মাতলুব আহমেদ বলেন, ‘সফটওয়্যার একটি পার্ট মাত্র। কোড নম্বরটিই মূল। কেউ যদি তার কোড নম্বর বন্ধুকে দিয়ে দেয়। সে খুলতে পারবে। এখন এই কোড নম্বর ভাঙার জন্য অনেকে বসে আছে। এরা হ্যাকার। এই হ্যাকারদের থামানোর জন্য ফায়ারওয়ালের অনেকগুলা যন্ত্রপাতি রয়েছে। কেউ চেষ্টা করলেও হ্যাক করতে পারবে না। ওই সিস্টেমে আমাদের যেতে হবে। এখন এই দুর্ঘটনাটি বাংলাদেশ ব্যাংকে হওয়ার কারণে দেশব্যাপী সব ব্যাংকের পলিসি, সিকিউরিটি জোরদার হবে। ফলে ভবিষ্যতে আমাদের অনেক উপকার হবে।
এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, ‘আমি নিশ্চিত এটি আমাদের শাপেবর হবে। এখন এই দুর্ঘটনা ঘটার কারণে আমরা সবাই অ্যালার্ট (সতর্ক) হয়ে গেছি। দেশব্যাপী অ্যালার্ট হয়ে গেছে। এখন এটিএম বুথে যাওয়ার সময় তিনবার চিন্তা করব। আগে খোলা বুথে ঢুকে টাকা তুলে নিয়ে আসতেন, এখন আর তা করবেন না। লুকায়ে-ঝুকায়ে করবেন।’
এর আগে বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ আমদানি-রফতানিসংক্রান্ত তথ্য প্রাপ্তি সহজীকরণে ‘বাংলাদেশ ট্রেড পোর্টাল’ নামে নতুন ওয়েবসাইট উদ্বোধন করেন। এটি সরকারি উদ্যোগে ব্যবসা-বাণিজ্য তথ্য প্রদানের উদ্দেশে তৈরি প্রথম ওয়েবসাইট। বাংলা ও ইংরেজি মাধ্যমে ওয়েবসাইটটিতে তথ্য পাওয়া যাবে। ওয়েবসাইটি তদারকির বিষয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, শিগগির এফবিসিসিআইয়ের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক সইয়ের মাধ্যমে ওয়েবসাইটের যাত্রা শুরু হবে।