এসি ল্যান্ডের ‘মাটির কুঞ্জ’ বিশ্বনাথ ভূমি অফিসে নেই ভোগান্তি-দুর্নীতি

imagesবিশ্বনাথ প্রতিনিধি :: একটি মাটির কুঞ্জ পাল্টে দিয়েছে বিশ্বনাথের ভূমি অফিসের চিত্র। সেবার মান নিয়ে বেশ সন্তুষ্ট ওই জনপদের সাধারণ মানুষ। বিশ্বনাথ থেকে একজন সরকারী কর্মকর্তা চাইলে সততা ও দায়িত্বের প্রতি আন্তরিক হলে সরকারী সেবা অতি সহজেই যে জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়া যায়, তার বাস্তব প্রমাণ দেখালেন বিশ্বনাথ উপজেলার এ্যাসিল্যান্ড রুহুল আমীন।
সিলেটের প্রবাসী অধ্যুষিত বিশ্বনাথ উপজেলায় সেই রুহুল আমীন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) হিসেবে কাজে যোগ দিয়েছেন মাত্র ৫ মাস হয়েছে। অথচ কাজে যোগদানের কয়েক সপ্তাহ যেতে না যেতেই সরকারী সেবার মান বাড়াতে মাটির কুঞ্জ নির্মাণ করে উপজেলা ভূমি অফিসের সার্বিক চিত্র পাল্টে দিয়ে এক নজিরবিহীন দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন। যা অতীতে প্রবাসী অধ্যুষিত এই এলাকার জনগণ কল্পনাও করতে পারেননি।
বিশ্বনাথ উপজেলা ভূমি অফিসে সরকারী এমন সেবার মান নিয়ে বেশ সন্তুষ্ট এলাকার সাধারণ জনগণ ও প্রবাসীরা। এছাড়া সৃজনশীল মনের অধিকারী সরকারী এই কর্মকর্তার বিশ্বনাথকে নিয়ে রয়েছে নানান ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা। সময় ও সুযোগ পেলে ভূমি অফিসে একটি লাইব্রেরী, ভূমি খাত থেকে সরকারী রাজস্ব আয় বৃদ্ধির লক্ষ্যে ইউনিয়নে ইউনিয়নে ক্যাম্প-মেলা করার কথা রয়েছে বলে ভূমি অফিসের এক সিনিয়র কর্মকর্তা সাংবাদিকদের জানিয়েছেন।
সিলেটের প্রবাসী অধ্যুষিত এক জনপদ হচ্ছে বিশ্বনাথ। রাজনীতিসহ নানা কারণে গত প্রায় দু দশক এই জনপদ দেশে ও বিদেশে নানাভাবে আলোচিত হয়। এতে যেমন ইতিবাচক বিষয় ছিল ঠিক তেমনী নেতিবাচক বিষয়েরও কমতি ছিল না। সম্প্রতি এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে গত পাঁচ বছরে সরকার কেবল ভূমি থেকে প্রায় দুই কোটি টাকার রাজস্ব আদায় করেছে। এ কারণে এখানকার জায়গা জমির দাম আকাশ চুম্বি। কিন্তু উপজেলা ভূমি অফিস ও স্থানীয় তহশিল অফিস গুলোর সেবার মান নিয়ে এলাকাবাসীর অভিযোগের কমতি ছিলনা। তবে সম্প্রতি একজন রুহুল আমীন মাত্র কয়েক সপ্তাহে পাল্টে দিয়েছেন পুরো ভূমি অফিসের চেহারা। সেবা প্রার্থীদের বসার তৈরী করা হয়েছে সুদৃশ্য মাটির কুঞ্জ । বর্তমান উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) রুহুল আমীন নিজ অফিসে বসে ভোক্তভোগীদের নানা সমস্যার কথা শুনেন এবং তাৎক্ষণিকভাবে সমাধানের চেষ্টাও করেন। খোলা হয়েছে ফ্রন্ট ডেস্ক রেজিষ্টার। দীর্ঘ প্রায় ৮ বছর পর রুজু করা হয়েছে ৩টি উচ্ছেদ মামলা। এছাড়া ভূমি অফিসের প্রতিটি রুমে রুমে কর্মকর্তাদের নাম ,পদবী ও কার কোন দায়িত্ব সম্বলিত ডিজিটাল সাইন। ফুলের বাগান, সেবা প্রার্থীদের জন্য টয়লেট, অফিসের প্রবেশদ্বারের বারান্দায় লাগানো হয়েছে বিভিন্ন সেবা গ্রহনের গাইড লাইন। মোট কথা পুরাতন জরাজীর্ণ ভূমি অফিসে লেগেছে প্রাণের ছোঁয়া। এর পাশাপাশি বন্ধ হয়েছে কর্মকর্তা কর্মচারীদের অফিসের কাজে ফাঁকিবাজি। বরং ইদানিং অনেক কর্মকর্তা ও কর্মচারীর আচার ব্যবহার ও কাজে কর্মে আন্তরিকতার পরিচয় পাওয়া যায়। বন্ধ হয়ে গেছে ওপেন ঘুষ দূর্নীতির কারবার, দালালদের দৌরাত্ম্য এবং ফাইল গায়েবের ঘঠনা। বিশ্বনাথ উপজেলা ভূমি অফিসের এমন রুপ বিশ্বনাথবাসী দেখেনি কোন কালে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সময়ের মেধাবী শিক্ষার্থী ও বিশ্বনাথ উপজেলা ভূমি অফিসের প্রধান এই কর্মকর্তা রুহুল আমীন নিজের সৃজনশীল চিন্তাভাবনা দিয়ে বিশ্বনাথের গুরূত্বপূর্ণ এই অফিসের প্রতি প্রবাসী অধ্যুষিত ওই এলাকার সাধারণ মানুষের আস্থা যেমন অর্জন করতে সক্ষম হয়েছেন ,ঠিক তেমনী বহির্বিশ্বে সরকার ও দেশের ইমেজ বিপুলভাবে বাড়াতে ও সক্ষম হয়েছেন।