দুই বছরেও চার্জশীট হয়নি সায়েম হত্যা মামলার, বিচার চাইলেন মা
ডেস্ক রিপোর্টঃ দীর্ঘ ২ বছরেও হয়নি চার্জশিট। হারিয়ে গেছে মামলার গুরুত্বপূর্ণ আলামত! অভিযুক্ত আসামিরা জামিনে বেরিয়ে বাদি পক্ষকে হত্যার হুমকি দিচ্ছে। এমনকি মামলার চার্জশিট থেকে আসামিদের বাদ দিতে চলছে পাঁয়তারা।
শনিবার সিলেট জেলা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এমন অভিযোগ এনে ছেলে হত্যার ন্যায়বিচার ও খুনিদের সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করেছেন সায়েমের মা শেফালী বেগম। তিনি দক্ষিণ সুরমা উপজেলার সিলাম ইউনিয়নের তেলিপাড়া গ্রামে মৃত শামীম আহমদ বাদলের স্ত্রী ও নির্মম হত্যাকা-ের শিকার সায়েম আহমদের মা।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ২০১৪ সালে ১ এপ্রিল রাতে দুর্বৃত্তরা সায়েমকে খুন করে খাদিমনগর ইউনিয়নের ধুপাগুল পয়েন্ট সংলগ্ন এলাকায় চা বাগানের খালে তার মরদেহ ফেলে যায়। পরদিন পুলিশ লাশ উদ্ধার করে। এ ঘটনায় নিহতের ভগ্নিপতি আব্দুল কাইয়ুম বাদি হয়ে এয়ারপোর্ট থানায় একটি হত্যা মামলা (নং-০২(৪)’১৪) দায়ের করেন।
সায়েম হত্যার ঘটনায় আমিনুল ইসলাম ডালিম, আব্দুল মজিদ ও মোয়াল্লিম আহমদকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাদেরকে আদালতে হাজির করে ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন করে পুলিশ। প্রথম অবস্থায় একদিন এবং পরে আরও দু’দিন রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালতের বিচারক। সর্বশেষ ২ মাস আগে আসামিরা উচ্চ আদালত থেকে তিন মাসের অন্তবর্তীকালীন জামিন নিয়ে জেল থেকে বেরিয়ে মামলা তুলে নিতে অব্যাহত হুমকি দিচ্ছে। এ কারণে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে আতঙ্কে রয়েছেন বাদিপক্ষ।
২০১৪ সালের ২৭ মার্চ আলোচিত এ মামলার ময়না তদন্ত প্রতিবেদন দেন ওসমানী মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের চিকিৎসক ডা. মোহাম্মদ রেদওয়ানুর রহমান। আলামতগুলোও জব্দ করে পুলিশ। এ অবস্থায় পর্যায়ক্রমে ৩ তদন্ত কর্মকর্তার হাত বদল হয়ে বর্তমানে মামলাটি তদন্ত করছেন এয়ারপোর্ট থানার পরিদর্শক (তদন্ত) নূরুল আলম। এরই মধ্যে মামলার আলামত হিসেবে হত্যাকা-ে ব্যবহৃত ছুরা ব্যতিত ঘাতকদের ফেলে যাওয়া দুই পায়ের জুতা, মোবাইল কললিস্টসহ গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি আলামত গায়েব করার অভিযোগ করেন সায়েমের মা। তার অভিযোগ পুলিশের আন্তরিকতা নিয়ে। মামলার তৃতীয় তদন্ত কর্মকর্তা এসআই রফিক তদন্তকাজ অনেকটা গুছিয়ে এনেছিলেন। ওই ৩ আসামিকে গ্রেফতারও করেছিলেন তিনি। হঠাৎ হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে এসআই রফিক মারা গেলে মোড়পাল্টে যায় তদন্তের।
লিখিত বক্তব্যে আরো বলা হয়, মূলত ভূমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে ২০০৯ সালের ২৮ নভেম্বর সকালে ঈদের নামাজ আদায় করে বাড়ি ফেরার পথে সায়েমের উপর হামলা করে ডালিম ও তার বাবা-ভাইয়েরা। তারা সায়েমকে কুপিয়ে জখম করে। ঘটনার দুইদিন পর ডালিম তার বাবা ও ভাইদের আসামি করে দক্ষিণ সুরমা থানায় মামলা (নং-২৩(১১)’০৯) দায়ের করে সায়েম। এরই জের ধরে সায়েমকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়।