কমলগঞ্জে চোরাই সেগুন গাছ বোঝাই ট্রাক আটকানার চেষ্টায় আহত-১
কমলগঞ্জ প্রতিনিধি : মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার আদমপুর বনবিট এলাকার কালেঞ্জী গ্রাম থেকে সেগুন গাছ কেটে ট্রাকে পরিবহন করে পাচারের অভিযোগ করেন এক ইউপি চেয়ারম্যান। চোরাই সেগুন বোঝাই ট্রাক আটকাতে গিয়ে এক গ্রামবাসী আহত হয়েছেন। গতকাল বুধবার (২০ জানুয়ারি) ভোর চারটায় এ ঘটনাটি ঘটে।
আদমপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাব্বির আহমদ ভূঁইয়া বুধবার অভিযোগ করে বলেন, মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১টার পর আদমপুর বনবিটের কালেঞ্জী গ্রামে সরকারী বনবিটে একটি বৃহদাকারের সেগুন গাছ কাটতে থাকে সংঘবদ্ধ গাছ চোর চক্র। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে তিনি কমলগঞ্জ উপজেলার রাজকান্দি বনরেঞ্জ কর্মকর্তা মালেকুজ্জামানকে মুঠোফোনে তথ্য দিয়ে গাছ চোরচক্রকে গাছসহ হাতে নাতে ধরার অনুরোধ জানান। তারপরও বন বিভাগের লোকজন এ ডাকে সাড়া দেয়নি। পরে ভোর রাত চারটার দিকে একটি ডায়না ট্রাকে বোঝাই করে সেগুন গাছের খন্ডাংশগুলো পাচার করা হয়। তিনি ইউপি চেয়ারম্যান হিসাবে গ্রামবাসীদের নিয়ে চোরাই সেগুন বোঝাই ট্রাকটি আটকানোর চেষ্টা করেন। এসময় ট্রাক আটাকনোর চেষ্টায় দ্রুত গতির ট্রাকের সামন থেকে আত্মরক্ষার্থে আধকানি গ্রামের আকবর আলী (২৫) নামের এক গ্রামবাসী আহত হয়েছে। ইউপি চেয়ারম্যান অভিযোগ করে আরও বলেন, আদমপুর বনবিট কর্মকর্তার জ্ঞাত সারেই একটি প্রভাবশালী গাছ চোর চক্র এ ঘটনাটি ঘটিয়েছে। তিনি আরও বলেন, সময় মত বন বিভাগের লোকজন আসলে কাটা গাছ, ট্রাকসহ গাছচোরদের আটক করা যেত। আহত আকবর আলী মুঠোফোনে এ প্রতিনিধিকে বলেন, সেগুন বোঝাই ট্রাকটি এত দ্রুত গতিতে আসছিল যে, তিনি লাফ দিয়ে না সড়লে তাকে পিষ্ট করে যেত।
তবে আদমপুর বনবিট কর্মকর্তা রবীন্দ্র কুমার সিংহ তার বনবিট থেকে একটি সেগুন গাছ রাতের আঁধারে কেটে পাচারের চেষ্টার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, খবর পেয়ে রাজকান্দি বনরেঞ্জ অফিসের একজন কর্মকর্তাসহ বনকর্মীরা পিকআপ নিয়ে এগিয়ে আসেন। পথিমধ্যে বনকর্মীদের পিক দেখে গাছ চোর চক্র কেটে নেওয়া সেগুন গাছের ৫টি খন্ডাংশ রাস্তায় ফেলে যায়। পাঁচ টি খন্ডাংশে আনুমানিক ১৯ ঘনফুট কাঠ হবে। এসব খন্ডাংশ উদ্ধার করে বনবিট কার্যালয়ে রেখে বন আইনে একটি মামলা করা হয়েছে বলেও বনবিট কর্মকর্তা জানান। তবে কাউকে গ্রেফতার করা যায়নি।
আদমপুর বনবিট কর্মকর্তা রবীন্দ্র কুমার সিংহ আরও বলেন, আদমপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তাকে জড়িয়ে যে অভিযোগ করেছেন তা সঠিক নয়। রাজকান্দি বনরেঞ্জ কর্মকর্তা মালেকুজ্জামান বলেন, ইউপি চেয়ারম্যানের দেওয়া খবর ছাড়াও নিজেরা খবর পেয়ে একজন কর্মকর্তা বনকর্মীদের নিয়ে ভোরে আদমপুর বনবিট এলাকায় যাবার সময় রাস্তায় পরিত্যক্তভাবে ফেলে যাওয়া সেগুনের খন্ডাংশ উদ্ধার করেছেন। বন বিভাগের গাড়ি দেখে গাছচোরচক্র কাটা গাছের খন্ডাংশগুলো রাস্তায় ফিলে খালি ট্রাক নিয়ে রাস্তা বদল করে পালিয়ে গেছে।