ইউনিয়ন পরিষদ সচিবদের মানববন্ধন, দাবী না মানলে ২৮-২৯ ফেব্রুয়ারী কর্মবিরতি

আজ ১১ ফেব্রুয়ারী ২০১৬, ঢাকাস্থ জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে তিন দফা দাবীতে সারাদেশের ৪৫৭১টি ইউনিয়ন পরিষদ সচিবদের সংগঠন বাংলাদেশ ইউনিয়ন পরিষদ সেক্রেটারী সমিতি (বাপসা) মানবন্ধন কর্মসূচি পালন করেন। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মাসুদ পারভেজ ৩ দফা দাবী উত্থাপন করেন। দাবীসমূহ হচ্ছে, ১) ইউনিয়ন পরিষদ সচিবদের পদোন্নতি পূর্বক ১০ম গ্রেড স্কেলের মর্যাদা প্রদান। ২) বেতন, বোনাস, আনুতোষিক লামগ্রান্ট, শ্রান্তিবিনোদন ভাতাসহ যাবতীয় অর্থ শতভাগ সরকারি কোষাগার থেকে প্রদানের ব্যবস্থা করা। ৩) ইউনিয়ন পরিষদ কর্মচারীদের আর্থিক নিরাপত্তার লক্ষ্যে পেনশন ব্যবস্থা নিশ্চিতকরণ। তিনি বলেন, দাবী আদায় না হলে আগামী ২৮-২৯ ফেব্রুয়ারী ২০১৬ কর্মবিরতি পালন করবেন ইউনিয়ন পরিষদ সচিবরা এবং আগামী ৮ মার্চ ২০১৬ থেকে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনের লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি ঘোষণা করেন তিনি।

মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন বাপসা কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি শেখ হাবিবুর রহমান। বাপসা কেন্দ্রীয় কমিটির মহাসচিব মাসুদ পারভেজের সঞ্চলনায় বক্তব্য রাখেন বাপসা’র সাবেক সভাপতি রেজাউল করিম তুহিন, প্রেসিডিয়াম সদস্য আতিকুর রহমান, আব্দুল লতিফ মোল্লা, এজিএম মোহসিন রেজা, নজরুল ইসলাম, মাহবুব আলম মোল্লা, হাসানুর জামান, সুলতান আহমেদ মন্ডল, আব্দুল্লাহ আল আমিন, জাহাঙ্গীর হোসেন, নুরুল হুদা চৌধুরী, আনোয়ার হোসেন হেলাল, মিজানুর রহমান, সিরাজুল ইসলাম, সিদ্ধার্থ ব্যানার্জী, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব আশরাফ উদ্দিন বাবু, যুগ্ম মহাসচিব সোহরাব আলী, এ রশিদ আহমদ, মোতাহার হোসেন, শহিদুল ইসলাম, আতাউল করিম পিপলু, মিজানুর রহমান, ফেরদৌস আহমদ, সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মমিন, রফিকুল ইসলাম, রুহুল আমিন, অর্থ সম্পাদক কাজী তাজউদ্দিন, প্রচার সম্পাদক আবু বক্কর মানিক, খুলনার মরহুম সচিব ফেরদৌস আহমেদ বিধবা স্ত্রী হালিমা ফেরদৌস, কবির উদ্দিন, আবুল কালাম, আতাউর রহমান, জাকির হোসেন, হেলাল উদ্দিন, লিটন পাল, কিশোর সাংমা প্রমুখ।

বক্তরা বলেন, বাংলাদেশের স্থানীয় সরকার কাঠামোর মধ্যে ইউনিয়ন পরিষদ একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ এবং কার্যকর প্রশাসনিক ইউনিট। বর্তমানে সারা দেশে ৪৫৭১টি ইউনিয়ন পরিষদ বিদ্যমান আছে। বর্তমানে ইউনিয়ন পরিষদে প্রায় ৫ (পাঁচ) শতাধিক সচিব মুক্তিযোদ্ধা হিসাবে চাকুরীরত আছেন। ১৯৯৬ সালে বঙ্গবন্ধুর কন্যা বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকার গঠন করলে ১৯৯৮ সালে তৎসময়ের স্থানীয় সরকার মন্ত্রী এবং গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের প্রয়াত মহামান্য রাষ্ট্রপতি মোঃ জিল্লুর রহমান ইউনিয়ন পরিষদ সচিবদের জাতীয় মহাসম্মেলনে ইউনিয়ন পরিষদ সচিবদের বেতন-ভাতা ১০০% সরকারি তহবিল হতে প্রদান করার ঘোষণা করেন। এই মর্মে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত মোতাবেক একটি সার-সংক্ষেপ প্রণয়ন করে ২০০১ সালের ২৬ জুন তারিখে মহোদয়ের বরাবরে প্রেরণ করা হলে ইউনিয়ন পরিষদ সচিবদের বেতন-ভাতা সরকারি তহবিল হতে ১০০% প্রদান সম্পর্কিত সার-সংক্ষেপ অনুমোদন হওয়ার পরেও অর্থ মন্ত্রণালয় ঐ সময় বিশেষ বিবেচনা করে ১০০% এর পরিবর্তে ৭৫% বেতন, বোনাস ও আনুতোষিক ৫০% সরকারের কোষাগার থেকে প্রদান করে আসছে। অবশিষ্ট ২৫% বেতন, ৫০% উৎসব ভাতা এবং আনুতোষিক ভাতা ৫০% ইউপি এর নিজস্ব তহবিল যেমন-হাটবাজার, ১% সহ অন্যান্য তহবিল থেকে প্রদানের নির্দেশনা দেন। সেক্ষেত্রে ইউনিয়ন পরিষদের নিজস্ব হাটবাজার ও ১% থেকে যে আয় হয়, তাতে বেতনের অবশিষ্ট ২৫% এবং বোনাস ও আনুতোষিকের অবশিষ্ট ৫০% টাকা নিজস্ব তহবিলের আয় সংকুলান না হওয়ায় ইউপি সচিবদের অবসরকালীন আনুতোষিকের এবং নিয়মিত বেতনের অবশিষ্ট ২৫% মাসের পর মাস বকেয়া থাকে। ২০১০-২০১১ অর্থবছরে ইউনিয়ন পরিষদ সচিবদের বেতন-ভাতা খাতে ৬১কোটি, ৪৫লক্ষ, ৭৪ হাজার টাকা সরকার বরাদ্দ প্রদান করে আসছেন অথচ ১০০% বেতন ভাতা সরকারি তহবিল হতে প্রদান করতে বর্তমানে জাতীয় বেতন স্কেল অনুযায়ী সরকারের আনুমানিক ১৫০ কোটি টাকার প্রয়োজন হয়।

সংগঠনের সভাপতি জনাব হাবিবুর বলেন, উল্লেখিত দাবীসমূহ আগামী ৭ মার্চ ২০১৬ এর মধ্যে সংশ্লিষ্ট বিভাগ বাস্তবায়নের পদক্ষেপ নিবে বলে আমরা আশাবাদী। তবে উক্ত তারিখের মধ্যে সরকার সংশ্লিষ্ট দপ্তরের মাধ্যমে বাস্তবায়নের ব্যবস্থা না করলে সচিবগণ দাবী আদায়ে কঠোর থেকে কঠোর আন্দোলনে যেতে বাধ্য থাকবে। মানবন্ধন শেষে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের মাননীয় মন্ত্রীর মাধ্যমে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বরাবরে স্মারক লিপি প্রদান করেন।