পা দিয়ে লিখে জিপিএ-৫!

pic-2_97295ডেস্ক রিপোর্টঃ জন্ম থেকেই দুই হাত ছিল না তার। তারপরও পা দিয়ে লিখে ২০১৫ সালের জেডিসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে জিপিএ-৫ পেয়েছে কলাপাড়া উপজেলার নীলগঞ্জ ইউনিয়নের উমেদপুর গ্রামের খলিলুর রহমানের প্রতিবন্ধী ছেলে মো. বেল্লাল হোসেন।
মা হোসনেয়ারা বেগম শিক্ষাজীবনের শুরু থেকেই পায়ের আঙুলের ফাঁকে চক, আবার কখনো পেন্সিল দিয়ে লেখা শিখিয়েছেন বেল্লালকে।
পিতা-মাতা ও শিক্ষকদের সহযোগিতায় উপজেলার উমেদপুর দাখিল মাদ্রাসা থেকে জেডিসি পরীক্ষায় অংশ নেয় বেল্লাল। পরীক্ষার খাতায় ডান পায়ের আঙ্গুল দিয়ে লিখেছে সে। অসাধ্যকে সাধন করে বেল্লাল আজ মেধাবীদের তালিকায় নাম লিখিয়েছে খুব গর্বের সাথে।
উমেদপুর মাদ্রাসা থেকে জিপিএ-৫ পাওয়া মো. জাবের মোল্লা বলেন, আমরা সুস্থ অবস্থায় হাত দিয়ে লিখে জিপিএ-৫ পেয়েছি। আর বেল্লালের একটি হাতও নেই, ও শুধু পা দিয়ে লিখে জিপিএ-৫ পেয়ে আমাদের সবাইকে অবাক করে দিয়েছে। তবে বেল্লাল প্রতিবন্ধী হলেও অনেক মেধাবী।
উমেদপুর দাখিল মাদ্রাসার সুপার মো. হাবিবুল্লাহ জানান, শারীরিক সক্ষমতা না থাকলেও বেল্লালের মেধা আছে। পা দিয়ে লিখে এবছর জেডিসি পরীক্ষায় সে জিপিএ-৫ পেয়েছে। এই মাদ্রাসা থেকে ৬১ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিয়ে সবাই পাস করেছে। তবে জিপিএ-৫ পেয়েছে মাত্র ১০ শিক্ষার্থী। তারমধ্যে বেল্লাল অন্যতম। প্রতিবন্ধী এই শিশুটি যাতে পা দিয়ে ভালোভাবে লিখতে পারে সে জন্য ক্লাসে একটি কাঠের আসন বানিয়ে দেয়া হয়েছে। সেটিতে বসে দেয়ালে পিঠ ঠেকিয়ে বেল্লাল লিখতে ও পড়তে পারে। বেল্লালের লেখাপড়ায় খুব আগ্রহ।বেল্লাল প্রতিবন্ধী হলেও সে আমাদের গর্ব।
বেল্লাল সাংবাদিকদের জানায়, লেখাপড়া যখন শুরু করি- তখন থেকেই একাএকা স্কুলে যাই।
স্কুলে যাওয়া-আসার সময় রাস্তায় পড়ে গিয়ে অনেকবার মাথাও ফাটিয়েছে বেল্লাল। তারপরও সে লেখাপড়া ছাড়েনি। সে একজন আদর্শ শিক্ষক হয়ে কম্পিউটারের মাধ্যমে শিক্ষাদান করাতে চায়।
বেল্লালের বাবা খলিলুর রহমান জানান, চার ছেলে-মেয়ের মধ্যে বেল্লাল সবার ছোট। গরিব হলেও সে বেল্লালকে লেখাপড়া করাতে চায়। বেল্লালের জন্য সে স্থায়ীভাবে কিছু সম্পত্তি করতে চায় যা দিয়ে ভবিষ্যতে সে চলতে পারবে। এজন্য বিত্তবানদের সহযোগিতা কামনা করেন বেল্লালের বাবা।