আবারও কী বরখাস্ত হবেন মেয়র গউছ?
ডেস্ক রিপোর্টঃ ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনে পুনরায় হবিগঞ্জ পৌরসভার মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন গোলাম কিবরিয়া (জিকে) গউছ। এবার কারাবন্দি অবস্থায়ই মেয়র নির্বাচিত হন তিনি।
সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এএমএস কিবরিয়া হত্যা মামলার আসামী হয়ে গউছ বর্তমানে কারান্তরীন রয়েছেন। এই হত্যা মামলার এজাহারভূক্ত আসামী হওয়ার পর গত বছরের ৭ জানুয়ারি মেয়র পদ থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয় জিকে গউছকে। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের এক আদেশে বরখাস্ত করা হয় তাকে।
কিবরিয়া হত্যা মামলার অভিযোগ থেকে এখনো রেহাই পাননি জিকে গউছ। এই মামলার বিচারকাজ চলছে। এই হত্যা মামলার আসামী হয়ে গউছ রয়েছেন কারাগারে। এ অবস্থায় গত ৩০ ডিসেম্বর জিকে গউছ পুনরায় মেয়র নির্বাচিত হওয়ায় প্রশ্ন দেখা দিয়েছে, ফের কী বরখাস্ত হতে যাচ্ছেন গউছ?
যে হত্যা মামলার আসামী হওয়ার কারণে গত বছর তাকে বরখাস্ত করা হয়েছিলো সেই মামলায় গউছ এখনো আসামী। ফলে তিনি পুনরায় বরখাস্ত হতে পারেন বলে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন অনেকে।
তবে বিএনপির নেতা হওয়ার কারণে জিকে গউছ রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হতে পারেন বলে শঙ্কা বিএনপি নেতাদের। আর আইনজীবী বলছেন, এটি পুরোপুরিই সরকারের ইচ্ছা।
এ ব্যাপারে সিলেট জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি এমাদউল্লাহ শহীদুল ইসলাম শাহিন এই প্রতিনিধিকে বলেন, এই আইনটাই স্ববিরোধী। যে অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও একজনকে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সুযোগ দেওয়া হয় সেই একই অভিযোগের কারণে নির্বাচিত হলে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা যায়।
আইনে বলা আছে, সরকার ইচ্ছা করলে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করতে পারে। ফলে এবারও সরকার চাইলেই গউছকে বরখাস্ত করতে পারবে। এটা পুরো সরকারের ইচ্ছা। তবে আসামী হলেও আইন অনুযায়ী জিকে গউছ মেয়র হিসেবে শপথ নিতে পারবেন বলে জানান এই আইনজীবী।
এডভোকেট শাহীন বলেন, এই আইনের ফলে জনপ্রতিনিধিদের ভাগ্য আমলাদের উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে।
গত ৩০ জুন ১০ হাজার ৭৯৭ ভোট পেয়ে পুনরায় হবিগঞ্জ পৌরসভার মেয়র নির্বাচিত হন গউছ। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী মিজানুর রহমান মিজান পান ৯২৬৪ ভোট।
উল্লেখ্য, ২০১৪ সালে ৬ ডিসেম্বর কিবরিয়া হত্যা মামলার সম্পূরক চার্জশিট দাখিল করেন এই মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মেহরেুন্নেছা।
এরপর ২৮ ডিসেম্বর পৌর মেয়র জিকে গউছ হবিগঞ্জ জ্যেষ্ঠ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন জানালে আদালত তা নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেয়। এই মামলাটি এখন সিলেট দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন রয়েছে।
শাহ এ এম এস কিবরিয়া ২০০৫ সালের ২৭ জানুয়ারি হবিগঞ্জ সদর উপজেলার বৈদ্যের বাজারে ঈদ-পরবর্তী জনসভা শেষে বের হওয়ার পথে গ্রেনেড হামলার শিকার হন। গুরুতর আহত অবস্থায় চিকিৎসার জন্য ঢাকা নেয়ার পথে তিনি মারা যান। এ হামলায় কিবরিয়ার ভাতিজা শাহ মনজুরুল হুদা, আওয়ামী লীগের নেতা আবদুর রহিম, আবুল হোসেন ও সিদ্দিক আলী নিহত হন। মারাত্মক আহত হন শতাধিক ব্যক্তি।
এ ঘটনায় হবিগঞ্জ-১ আসনের বতর্মান সাংসদ আবদুল মজিদ খান বাদী হয়ে হত্যা ও বিস্ফোরক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে দুইটি মামলা করেন। আর গউছ কিবরিয়া হত্যা মামলার ৪র্থ চার্জশিটভুক্ত আসামি।