দেশ জুড়ে এ পর্যন্ত ১০ মেয়র প্রার্থী নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা
ডেস্ক রিপোর্টঃ সারা দেশে বিভিন্ন কেন্দ্র থেকে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ প্রার্থীদের ভোট ডাকাতি, এজেন্টদের কেন্দ্র থেকে বের করে দেয়া ও অনৈতিক প্রভাব বিস্তারের অভিযোগে এ পর্যন্ত ১০ মেয়র প্রার্থী নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন।
বুধবার লক্ষীপুর রায়পুর, টাঙ্গাগাইলের মধুপুর, চট্টগ্রামের সন্দিপ, রাঙ্গুনিয়া, রাউজান, রাজবাড়ীর পাংশায়, পটুয়াখালীর কূয়াকাট, জামালপুর, কুমিল্লার বড়ুরা, ফরিদপুরের নগরকান্দা, মুন্সিগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় মেয়র প্রার্থীরা ভোটবর্জন করেছেন বলে জানা গেছে।
এদিকে এমনও ঘটনার খবর রয়েছে যে, স্বতন্ত্র প্রার্থীরা নিজের ভোটটি পর্যন্ত দিতে পারেননি। সরকার সমর্থক প্রার্থীরা জালিয়াতি করে ভোট দিচ্ছেন।
জামালপুর: জামালপুর পৌরসভায় অনিয়মের অভিযোগ তুলে ভোট বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন জাতীয় পার্টির মেয়র প্রার্থী খন্দকার হাফিজুর রহমান বাদশা। বুধবার সকালে জামালপুর জেলা স্কুল কেন্দ্রে ভোট দিতে এসে তিনি এ ঘোষণা দন। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, জেলা স্কুল কেন্দ্রে আমি নিজের ভোটটিই দিতে পারিনি।
নড়াইল: ভোট কারচুপির অভিযোগ এনে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন নড়াইলের কালিয়া পৌরসভার বিএনপি সমর্থিত মেয়র পদপ্রার্থী এস এম ওয়াহিদুজ্জামান মিলু। বুধবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে তিনি এ ঘোষণা দেন। এর আগে কালিয়া পৌরসভার দুটি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ স্থগিত করেন রিটার্নিং কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন।
লক্ষ্মীপুর: লক্ষ্মীপুরের রায়পুর পৌরসভায় বিএনপির মেয়র প্রার্থী এবিএম জিলানী ভোট বর্জন করেছেন। সকাল সাড়ে ১০টায় সংবাদ সম্মেলন করে নির্বাচন থেকে সড়ে দাঁড়ান বিএনপি সমর্থিত মেয়র প্রার্থী এবিএম জিলানী।
টাঙ্গাইল: কারচুপি ও অনিয়মের অভিযোগ এনে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিলেন টাঙ্গাইলের মধুপুর পৌরসভার বিএনপি মনোনীত প্রার্থী সরকার শহীদুল ইসলাম শহীদ। সকাল সাড়ে ১১টার দিকে ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন তিনি।
চট্টগ্রাম: ভোটকেন্দ্র দখল ও জাল ভোট দেওয়ার প্রতিবাদে ভোট বর্জন করেছেন সন্দ্বীপ পৌরসভা নির্বাচনের বিএনপি সমর্থিত মেয়র প্রার্থী আজমত উল্লাহ বাহাদুর ও রাঙুনিয়ার বিএনপি প্রার্থী মো. হেলাল উদ্দিন খান।
বরগুনা: প্রশাসনের বিরুদ্ধে বিরূপ আচরণের অভিযোগ এনে বরগুনা সদর পৌরসভার আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী অ্যাডভোকেট কামরুল আহসান মহারাজ নির্বাচন বর্জন করেছেন।
১২টার দিকে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী অ্যাডভোকেট কামরুল আহসান মহারাজ প্রশাসনের বিরুদ্ধে বিরূপ আচরণ এবং বিদ্রোহী প্রার্থীর টাকা দিয়ে ভোট কিনে নেয়ার অভিযোগ এনে নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া: জেলার আখাউড়া পৌরসভার স্বতন্ত্র প্রার্থী মশিউর রহমান বাবুল (মোবাইল ফোন) ভোট কারচুরিপর অভিযোগে নির্বাচন বর্জন করেছেন। সকাল সোয়া ১০টার দিকে তিনি সাংবাদিকদের ডেকে এ ঘোষণা দেন। এছাড়া পৌনে ১২টার দিকে ওই পৌরসভার বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী হাজি মনতাজ মিয়া (ধানের শীষ) সাংবাদিকদের ডেকে ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন। তিনি অভিযোগ করেন, একমাত্র ৮নং ওয়ার্ড ছাড়া সব কেন্দ্র থেকে তার এজেন্টদের বের করে দেয়া হয়েছে। আওয়ামী লীগ নেতারা নিজেরা সিল মেরে ব্যালটবাক্সে ঢুকিয়ে দিচ্ছে। এ কারণে তিনি নির্বাচন বর্জন করেছেন।
রাজবাড়ি: রাজবাড়ি সদর পৌরসভার বিএনপি মেয়র প্রার্থী চাঁদ আলী খান অনিয়ম ও কারচুপির অভিযোগে ভোট বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি সকাল ১০টার দিকে এ ঘোষণা দেন।
যেসব কাউন্সিলর প্রার্থীর ভোট বর্জন:
বরিশাল: নলছিটি পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ডের তিন কাউন্সিলর প্রার্থী ভোট বর্জন করেছেন। ভোট শুরু হওয়ার ২ ঘণ্টার মাথায় তারা ভোট ঘোষণা দেন। প্রার্থীরা হলেন- মোশারেফ হোসেন (পাঞ্জাবি), দোলোয়ার হোসেন (উটপাখি) এবং আলতাফ হোসেন তালুকদার (ডালিম)।
এই তিন প্রার্থী অভিযোগ করেন- ক্ষমতাসীন দল মনোনীত প্রার্থী জামাল খানের (প্রতীক টেবিল লাইট) পক্ষে অবস্থান নিয়ে তাদের ভোটকেন্দ্রগুলোতে ঢুকতেই দেয়নি প্রিজাডিং অফিসাররা। উল্টো তাদের দেখিয়ে পিজাডিং অফিসাররা আরও জামাল খানের টেবিল লাইট প্রতীকের ব্যালটে সিল মেরে বক্সে ফেলেছেন।