সরকার প্রধানই নির্বাচন বিধি ভঙ্গ করছে : মির্জা ফখরুল

বিএনপি চেয়ারপার্সনের গুলশান কার্যালয়ে ০৯/১২/২০১৫ইং সকাল ১১ টায় সাংবাদিক সম্মেলন করেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর

DSC_0654ডেস্ক রিপোর্টঃ দলীয়ভাবে মনোনায়ন দেওয়া প্রার্থীতা বাতিলের পর নিদিষ্ট সময়সীমা পার হওয়ার পরও আরেক ব্যাক্তিকে মনোনায়ন দিয়ে সরকার প্রধান নির্বাচনী বিধি ভঙ্গ করেছে বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি। বুধবার বেলা ১১টায় গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, নির্বাচন কমিশন সরকারের নিয়ন্ত্রনে আছে। নির্বাচন যে প্রহসনের দিকে যাচ্ছে বিএনপি চেয়ারপারসনের আশঙ্কাই প্রমানিত হতে যাচ্ছে। জনগণ নির্বাচনী ব্যবস্থার উপর আস্থা হারিয়ে ফেলেছে। এই সরকারের অধীনে কোন নির্বাচনই সুষ্ঠ হয় নাই। এই সরকারের অধীনে যেসব নির্বাচন হয়েছে তার সব গুলোর চিত্রই একই রকম। ৩ ডিসেম্বর প্রার্থীদের মনোয়নপত্র জমা নেওয়া শেষ দিন ছিল। ৬ তারিখ ছিল প্রার্থীদের মনোনায়ন পত্র যাচাই বাছাই। কিন্তু প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্বাচনী বিধি লংঘন করে ৭ ডিসেম্বর শরিয়তপুরে প্রার্থী পরির্বন করার আবেদন করেছেন তার সাক্ষরিত মনোনায়নপত্রে। এবং তিনি সির্বাচন কমিশনে একটি চিঠি দিয়ে প্রার্থী পরির্বন করার কথা বলেছেন। এটা সস্পূর্ন নির্বাচনী বিধির পরিপন্থি। তিনি বলেন, নির্বাচনী বিধিতে আছে কোন দলের চেয়ারপারসন, ভাইস চেয়ারম্যান, যুগ্ম মহাসচিব মনোনিত প্রার্থীর মনোনায়নে সাক্ষরিত করতে হবে। একই এলাকায় এক জনের বেশি প্রার্থী মনোনায়ন করা যাবে না। একাধিক প্রার্থী মনোনায়ন দিলে সব গুলো বাতিল হবে। বরগুনার বেতাগীতে সরকার দলীয় একাধিক প্রার্থী থাকলেও তাদেরকে বাতিল করা হয়নি। কারন নির্বাচন কমিশন সরকারের হাতে আছে। তিনি অভিযোগ করেন, শরীয়তপুর পৌরসভার আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী মো. রফিকুল ইসলামের প্রার্থীতা বাতিল হয়ে যায়। কিন্তু নির্দিষ্ট সময়সীমার পরও পরবর্তীতে সেখানে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার স্বাক্ষরিত মনোনয়ন পত্রে ফারুক আহেম্মেদ তালুকদারকে সমর্থন দেওয়ার করা বলে সংশ্লিষ্ট এলাকার রিটার্নিং অফিসারের কাছে চিঠি দেওয়া হয়। যা সম্পূর্ন অবৈধ ও বিধি পরিপন্থিভাবে। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন যে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে, সেখানে প্রার্থীর বৈধতা সম্পর্কে স্পষ্ট করে বিধি ১২-তে উল্লেখ করা আছে কোনো রাজনৈতিক দলের মেয়র প্রার্থীর ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট রাজনৈতিক দলের সভাপতি বা সাধারণ সম্পাদক বা সম পর্যায়ের পদাধিকারী বা তাহাদের নিকট হতে ক্ষমতাপ্রাপ্ত ব্যক্তি স্বাক্ষরিত এই মর্মে প্রত্যয়ণপত্র থাকে যে, উক্ত প্রার্থীকে উক্ত দল থেকে মনোনয়ণ দেওয়া হয়েছে। শর্ত থাকে যে, কোনো রাজনৈতিক দল কোনো পৌর সভায় মেয়র পদে একাধিক ব্যক্তিকে মনোনয়ন দিতে পারবে না। দিলে সংশ্লিষ্ট পৌর সভায় উক্ত দলের মনোনয়পত্র বাতিল বলে গন্য হবে।’ তিনি বলেন, ‘বাতিল হওয়া একটি মনোনয়ন পত্রের পর আরেকটিতে দুর্ভাগ্যজনকভাবে এই সইটা করছেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী। তিনি হচ্ছেন সরকারের প্রধান নির্বাহী। তাহলে নির্বাচন কতটা নিরপেক্ষ হতে পারে তা সহজেই অনুমেয়। মির্জা ফখরুল জানান, ফেনী জেলার বিএনপির সভাপতি এডভোকেট আবু তাহের এর বাসায় সরকারসমর্থিতরা হামলা চালিয়েছে। তার অপরাধ তিনি প্রার্থীতা ফেরত পেতে আপীল করেছেন। আমাদের নেতাকর্মীরা দলের অনেক প্রার্থীরা বাড়ি যেতে পারছেন না । এ পরিস্থিতিতে নির্বাচন কতটা স্বচ্ছ ও নিরপক্ষে হবে, সেটি সহজেই অনুমেয়। সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন, বিএনপির স্থায়ী কমিটর সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান, ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল নোমান, এয়ার ভাইস মার্শাল (অব.) আলতাফ হোসেন চৌধুরী, মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বীর বিক্রম, সেলিমা রহমান, যুগ্ম মহাসচিব মো. শাহজাহান, সহ দফতর সম্পাদক শামীমুর রহমান শামীম, আব্দুল লতিফ জনি, সহ প্রচার সম্পাদক ইমরান সালেহ প্রিন্স প্রমুখ।