অটোয়ায় ব্যতিক্রমী সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা

Ottawa001সদেরা সুজন সিবিএনএ কানাডা থেকে। গত শনিবার অটোয়ার কার্লটন ইউনিভার্সিটির কৈলাশ মিত্তাল থিয়েটারে স্থানীয় ‘ডালিয়া বাংলা মিউজিক স্কুল’এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। অটোয়ার সঙ্গীত শিল্পী ডালিয়া ইয়াসমীন স্কুলের উদ্যোক্তা।
পুরো অনুষ্ঠান জুড়ে ছিল শিশুদের কণ্ঠে দেশাত্ববোধক বিভিন্ন গান, রবীন্দ্রসঙ্গীত, নজরুলগীতি এবং তাদের শিক্ষাগুরু ডালিয়া ইয়াসমীনের নেতৃত্বে সারগাম, রাগ ভৈরবী ও রাগ ইমনযোগে কয়েকটি গানের অনবদ্য পরিবেশনা।
শুরুতেই শিশুশিল্পীরা সমবেত স্বরে পরিবেশন করে, “মহা বিশ্বে, মহাকাশে মহা কাল মাঝে”৷ এরপর একক ও দ্বৈত পরিবেশনায় ছিল এ্যলিসিয়া,সহীহ, আলিনা, ইশতি, ওয়াজিদ, সামির, সুমেরা ও সুহেরা, ইশতি-ওয়াজিদ, আলিনা-এ্যলিসিয়া এবং শ্রীলঙ্কার শিশু শিল্পী ভিয়া ।
এ্যালিসিয়া-আলিনা-ইশতি’র কণ্ঠে নজরুলের “দূর দ্বীপবাসিনী”র সুরে চমৎকার নৃত্য পরিবেশন করে দুই সহোদরা শিশুশিল্পী এলসা ও মুবিনা । ওয়াজিদ-সামির-এ্যালিসিয়া-ইশতি-আলিনা’র পরিবেশনায় “হৃদয় আমার নাচেরে আজিকে ময়ূরীর মতো নাচে রে…” গানটির সাথে ইশিতা খানের পরিচালনায় ময়ূরের নীলাভ রূপে চমৎকার নৃত্য পরিবেশন করে শিশুশিল্পী নুয়েশাহ, অহর্না ও প্রীতিকা ও শিশুশিল্পী রিয়া ।
গিয়াস ইকবাল সোহেলের স্ক্রিপ্টে কানাডায় জন্মগ্রহণকারী ও কখনও বাংলাদেশে যাবার সুযোগ পায়নি এমন শিশু সাবেরের প্রাঞ্জল বাংলায় উপস্থাপনা সবাইকে মুগ্ধ করে।
বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলের সাজ-পোশাকে সার্বিকভাবে বাংলাদেশকে তুলে ধরে গান পরিবেশন করে অটোয়ার বাংলা স্কুলের ছোট্ট শিশু জিনান, সামারা, আফ্রা, রুহান, বর্ষন, আরমান, অদ্রিব, সুহৃদ, উমাইমাহ, উমায়যাহ এবং যারাহ। এ পর্বের শেষ অংশে এ্যালিসিয়া-সহীহ-আলিনা-ইশতি-ওয়াজিদ-সামির-ভিয়া-সুহেরা-সুমেরা সমবেত কণ্ঠে গেয়ে ওঠে, “ও পৃথিবী এবার এসে, বাংলাদেশ নাও চিনে…. ও পৃথিবী তোমায় জানাই, স্বাগত এই দিনে।”
শিশুদের গানে বিমুদ্ধ দর্শক-শ্রোতাদের মুহূর্মুহ করতালিতে ভরে ওঠে পুরে অডিটোরিয়াম। দ্বিতীয় পর্বের আয়োজনে অংশ নেন শহরের পরিচিত শিল্পীরা। এই পর্বে নৃত্য পরিবেশন করেন, ইশিতা খান ও কারিনা দত্ত। আবৃত্তি করেন দেওয়ান মাহমুদ, শিল্পী রহমানও
মাকসুদ খান । অটোয়ার প্রথিতযশা শিল্পীবৃন্দ অং থুই সোয়াই, নার্গিস আক্তার রুবি, মাইনুল আহসান, সিতারা আহসান কঙ্কন, পিয়া ইসলাম এবং ডালিয়া ইয়াসমিন সঙ্গীত পরিবেশন করেন।এই পর্বের উপস্থাপনায় ছিলেন শিল্পী পিয়া ইসলাম।
ব্যারিস্টার রেজাউর রহমান, তার সহশিল্পী মি. টিটু এবং মি. ও মিসেস জামালি- কথিকার মাধ্যমে বাংলা সংস্কৃতি চর্চার অতীত ও বর্তমান ধারা-প্রবাহতুলে ধরেন।
আধুনিক ব্যান্ড সঙ্গীত পরিবেশন করেন উচ্ছাস ও আদিয়ান ও গিটারিস্ট/ কিবোর্ডিস্ট ও ভোকালিস্ট আরেফিন কবীর।।অটোয়া, মন্ট্রিয়্যাল, উইন্সরসহ আশপাশের শহরগুলো থেকে আগত বিপুল সংখ্যক সঙ্গীতপ্রেমী বাংলাদেশি দর্শক-শ্রোতা এ অনুষ্ঠানে যোগদান করেন। সপরিবারে উপস্থিত থেকে অনুষ্ঠান উপভোগ করেন কানাডায় নিযুক্ত বাংলাদেশের হাই কমিশনার কামরুল আহসান। শুভেচ্ছা বক্তব্যে ডালিয়া বাংলা মিউজিক স্কুলকে এ চমৎকার অনুষ্ঠান আয়োজনের জন্য ধন্যবাদ জানান বাংলাদেশের হাই কমিশনার।
অনুষ্ঠান পরিকল্পনা ও যন্ত্রসহ বিবিধ সহযোগিতায় ছিলেন, যথাক্রমে সার্বিক ব্যবস্থাপনায় গিয়াস ইকবাল সোহেল,মঞ্চসজ্জার পরিকল্পনায় ডালিয়া ইয়াসমীন, ডিজাইনে আসফিন হায়দার দিশা, স্লাইড এন্ড সাউন্ডে সাচি ইসলাম, স্টেজ সাউন্ড কো-অর্ডিনেশনে কাজী মাওলা বাদল, অক্টোপ্যাড ও তবলায় ছিলেন মেজবাহ ইসলাম অর্ঘ্য, কী-বোর্ডে রাজিন ওয়াসিউদ্দিন, বেইস গীটারে এ্যালিসিয়া ইকবাল।