এবার বগুড়ার শিয়া মসজিদে হামলা, মুয়াজ্জিন নিহত

Bogura_muajinডেস্ক রিপোর্টঃ বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার হরিপুরে শিয়া সম্প্রদায়ের একটি মসজিদে দুর্বৃত্তদের গুলিতে মসজিদের মুয়াজ্জিন মোয়াজ্জেম হোসেন নিহত হয়েছেন। হামলায় মসজিদের ইমামসহ আরো তিনজন মুসল্লি গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। বৃহস্পতিবার মাগরিবের নামাজ আদায়ের সময় এ হামলা হয় বলে পুলিশ জানিয়েছে। শিবগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আহসান হাবীব জানান, কয়েকজন দুর্বৃত্ত মসজিদের ভেতরে প্রবেশ করে এলোপাতাড়ি গুলি করে পালিয়ে যায়। এতে চার মুসল্লি আহত হন।
আহতদের রাতেই বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ ও হাপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে মসজিদের মুয়াজ্জিন মোয়াজ্জেম হোসেন মারা যান। গুলিবিদ্ধরা হলেন- মসজিদের ইমাম উপজেলার চককানু মধ্যপাড়ার মৃত মজিবুর রহমানের ছেলে মাওলানা শাহীনুর রহমান (৩৫), আলাদিপুরের খরু মণ্ডলের ছেলে তাহের মিস্ত্রী (৫৫) এবং একই এলাকার কুদু প্রামাণিকের ছেলে আফতাব আলী (৪২)। নিহত মোয়াজ্জেম হোসেন হরিপুর উত্তরপাড়ার মৃত বছির উদ্দিনের ছেলে।
মোয়াজ্জেমের চাচা উকিল মিয়া সাংবাদিকদের বলেন, যখন সবাই মাগরিবের নামাজের সেজদায় ছিল, তখনই হঠাৎ গুলি হয়। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী এক যুবক বলেন, তিনজন যুবক কোনো কিছু বুঝে উঠার আগেই এলোপাতাড়ি গুলি চালিয়ে প্রাচীর টপকে পালিয়ে যায়। এদের মধ্যে একজন টুপি-পাঞ্জাবি পরা এবং অন্য দু’জন চেক শার্ট ও প্যান্ট পরা ছিলেন বলে একাধিক প্রত্যক্ষদর্শী জানিয়েছেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার দিকে উপজেলার চককানু গ্রামের ওই শিয়া মসজিদে তিন-চারজন যুবক ঢুকে পড়েন। এ সময় মসজিদে নামাজ আদায় করছিলেন অন্তত ৪০ জন মুসল্লি। যুবকেরা মসজিদে ঢুকে প্রথমে প্রধান ফটকটি আটকে দেন। এরপর আগ্নেয়াস্ত্র বের করে নামাজরত লোকজনকে লক্ষ্য করে এলোপাতাড়ি গুলি ছুড়েন। গুলির শব্দ শুনে আশেপাশের লোকজন ছুটে আসলে হামলাকারী যুবকরা পালিয়ে যান।
বগুড়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আরিফুর রহমান মণ্ডল ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, খবর পেয়ে পুলিশ মসজিদটি ঘিরে রেখেছে। জড়িতদের ধরতে এলাকায় অভিযান চলছে। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে পয়েন্ট টু টু বোরের সাত রাউন্ড গুলির খোসা উদ্ধার করেছে। কারা এই হামলা চালিয়েছে, সে বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
গত ২৩ অক্টোবর মহররম উপলক্ষে ঢাকায় শিয়াদের তাজিয়া মিছিলের প্রস্তুতির সময় বোমা হামলার এক মাসের মধ্যে বগুড়ার শিবগঞ্জে এই হামলা হল। ওই হামলায় দু’জন নিহত হয়েছিলেন। মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক জঙ্গিগোষ্ঠী আইএস ওই হামলার দায়িত্ব স্বীকার করলেও সরকার তাদের এ দাবি নাকচ করে দেয়।
এদিকে, বুধবার রাতে রাজধানীর গাবতলী বেড়িবাঁধে পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত মাহফুজ ওরফে শাহাদাত ওরফে আলবানী (৩৫) হোসেনি দালানে হামলার ঘটনায় জড়িত ছিলেন বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) যুগ্ম-কমিশনার মনিরুল ইসলাম।
বৃহস্পতিবার এক প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি বলেন, আলবানী জেএমবির একটি অংশের সামরিক প্রধান ছিলেন। তিনি আশুলিয়ায় ব্যাংক ডাকাতি ও তল্লাশি চৌকিতে হামলা চালিয়ে পুলিশ হত্যার ঘটনাতেও জড়িত ছিলেন। একই চক্রের আরো পাঁচ জেএমবি সদস্যকে বুধবার রাতে আটকের কথাও জানান মনিরুল।