সিলেটের ১৭টিসহ ২৩৬ পৌরসভায় ভোট ৩০ ডিসেম্বর

indexসুরমা টাইমস ডেস্ক: সিলেট বিভাগের ১৭টিসহ দেশের ২৩৬ পৌরসভায় আগামী ৩০ ডিসেম্বর ভোটের দিন রেখে তফসিল ঘোষণা করতে যাচ্ছে নির্বাচন কমিশন। প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী রকিবউদ্দীন আহমদের নেতৃত্বে গতকাল সোমবার রাতে ইসির এক বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত হয়েছে। বৈঠকের পর নির্বাচন কমিশনার আবদুল মোবারক সাংবাদিকদের বলেন, ৩০ ডিসেম্বর ভোটের দিন ঠিক হয়েছে। আগামি কাল (আজ) সিইসি তফসিল ঘোষণা করবেন।ইসি কর্মকর্তারা জানান, মনোনয়নপত্র দাখিলের জন্য ৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় রাখা হতে পারে। ৫ ও ৬ ডিসেম্বর বাছাইয়ের পর প্রত্যাহারের শেষ সময় রাখা হচ্ছে ১৩ ডিসেম্বর। ফলে প্রচারের জন্য দুই সপ্তাহ সময় পাবেন প্রার্থীরা। তফসিল ঘোষণাকে সামনে রেখে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তাদেরকে প্রতিনিধি পাঠিয়ে আজ মঙ্গলবার বিজি প্রেস থেকে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করতেও নির্দেশনা পাঠানো হয়েছে।নির্বাচন কমিশন কার্যালয় সূত্র জানায়, সিলেট বিভাগের ১৯টি পৌরসভার মধ্যে ১৭টি পৌরসভায় ৩০ ডিসেম্বর নির্বাচন হবে। এগুলো হচ্ছে, সিলেট জেলার গোলাপগঞ্জ, বিয়ানীবাজার, কানাইঘাট, জকিগঞ্জ, মৌলভীবাজার জেলার মৌলভীবাজার সদর, কমলগঞ্জ, শ্রীমঙ্গল, বড়লেখা, সুনামগঞ্জ জেলার সুনামগঞ্জ সদর, ছাতক, জগন্নাথপুর, দিরাই ও হবিগঞ্জ জেলার হবিগঞ্জ সদর, নবীগঞ্জ, চুনারুঘাট, মাধবপুর ও শায়েস্তাগঞ্জ পৌরসভা। এগুলোতে নির্বাচনী কার্যক্রম পরিচালনার ক্ষেত্রে কোনো ধরণের আইনী জটিলতা নেই। তবে সিলেট জেলার বিয়ানীবাজারে মামলা সংক্রান্ত জটিলতা ও হবিগঞ্জ জেলার আজমিরীগঞ্জ পৌরসভায় সীমানা নির্ধারণ জটিলতার কারণে নির্বাচন এখই হচ্ছে না।স্থানীয় সরকার আইন সংশোধনের পর এবারই প্রথম পৌর নির্বাচনে মেয়র পদে রাজনৈতিক দলের নেতারা সংসদ নির্বাচনের মতো দলীয় প্রতীক নিয়ে ভোট চাইবেন। শুরুতে সব পদে নির্বাচন দলীয়ভাবে করার সিদ্ধান্ত নিয়ে আইন সংশোধন হলেও পরে কাউন্সিলরদের বাদ রেখে পুনর্বার সংস্কার আনা হয় আইনে। ফলে কাউন্সিলর পদে ভোট হবে আগের মতোই নির্দলীয়ভাবে। বর্তমানে বাংলাদেশে তিন শতাধিক পৌরসভা রয়েছে। এর মধ্যে ডিসেম্বরে ২৪০টির বর্তমান মেয়র-কাউন্সিলরদের মেয়াদ ডিসেম্বরে ফুরোচ্ছে। এর মধ্যে ২৩৬টিতে নির্বাচনের সিদ্ধান্ত হয়েছে। এসব পৌরসভায় মোট ভোটার ৭০ লাখের মতো বলে ইসি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। গড়ে প্রতি পৌরসভায় সাধারণ ওয়ার্ড ১১টি, সে হিসেবে নির্বাচন উপযোগী পৌরসভায় ওয়ার্ড থাকবে আড়াই হাজারের মতো।২৩৬ জন মেয়রের পাশাপাশি আড়াই হাজার সাধারণ কাউন্সিলর এবং আট শতাধিক সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর নির্বাচন করবেন ৭০ লাখ ভোটার।শুধু মেয়র পদে দলীয় প্রতীকে প্রার্থী হওয়ার সুযোগ রেখে সংশোধিত আইনের গেজেট শনিবার জারি হওয়ার পর পৌর নির্বাচনের বিধিমালা চূড়ান্ত করতে বসে ইসি। আগে একবার তা তৈরি করলেও তাতে কিছু পরিবর্তন আনা হয়েছে।প্রস্তাবিত বিধিমালা অনুযায়ী, মেয়র পদে দলীয় মনোনয়ন দেওয়ার জন্যে দলের সভাপতি বা সাধারণ সম্পাদক বা সম পর্যায়ের পদাধিকারী বা ক্ষমতাপ্রাপ্ত ব্যক্তির প্রত্যায়নের বিধান থাকবে। দলকে এক্ষেত্রে তফসিল ঘোষণার ৫ দিনের মধ্যে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে এবং ইসি সচিবালয়ে দলের ক্ষমতাপ্রাপ্ত ব্যক্তির নাম, পদবি ও নমুনা স্বাক্ষরসহ একটি চিঠি দিতে হবে।মেয়র পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার সুযোগ থাকছে সংসদ নির্বাচনের মতোই। তবে ১০০ ভোটারের সমর্থনযুক্ত তালিকা দেওয়ার বিধান রাখা হচ্ছে বিধিমালায়। স্বতন্ত্র প্রার্থীদের মনোনয়নপত্রের সমর্থন যাচাই করার জন্যে তালিকা থেকে দ্বৈবচয়নের ভিত্তিতে ৫ জনকে বাছাই করা হবে। পৌরসভা প্রতি ১ লাখ টাকা দলীয় ব্যয় রাখাসহ আইনের আলোকে মনোনয়নপত্র, প্রতীক ব্যবহারে প্রয়োজনীয় সব কিছু থাকছে বিধিমালায়।মন্ত্রী-এমপিসহ সরকারি-সুবিধাভোগী ব্যক্তিদের কোনো প্রার্থীর পক্ষে পৌর নির্বাচনী প্রচারে অংশ নেওয়ার সুযোগ রাখা হচ্ছে না। ইসি কর্মকর্তারা জানান, পৌর নির্বাচনে রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও জ্যেষ্ঠ জেলা নির্বাচন কর্মকর্তাদের দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে। তাদের সঙ্গে সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তাদের রাখা হচ্ছে।