মাধবপুরে স্ত্রীর পরকিয়া দেখে ফেলায় স্বামীকে খুন!
সুরমা টাইমস ডেস্কঃ মাধবপুরে নূরুল ইসলাম হত্যা’র দায় স্বীকার করে স্ত্রী আম্বিয়া খাতুন হবিগঞ্জের বিচারিক আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। মঙ্গলবার বিকালে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই আব্দুল আউয়াল হবিগঞ্জের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কৌশিক আহম্মদের আদালতে হাজির করলে ঘাতক আম্বিয়া খুনের ঘটনা বর্ণনা দিয়ে জবানবন্দি দেন। এছাড়া আম্বিয়ার দুই সহকর্মী পোশাক শ্রমিক ও মামলার সাক্ষী শাহেনা আক্তার ও শাবেনাও আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন। মাধবপুর থানা’র পরিদর্শক (তদন্ত) কে.এম.আজমিরুজামান এর সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
আদালতে ঘাতক আম্বিয়া ও দুই সাক্ষীর বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, হবিগঞ্জ জেলার চুনারুঘাট উপজেলার হল হলিয়া গ্রামের মৃত আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে নূরুল ইসলাম (৩২) প্রথম স্ত্রী মারা যাওয়ার পর প্রায় ১০ বছর আগে উপজেলার সাদবপুর গ্রামের আম্বিয়া খাতুনকে বিয়ে করেন। এক মাস আগে আম্বিয়া স্বামীর সঙ্গে ঝগড়া করে মাধবপুর উপজেলার নোয়াপাড়াস্থ একটি পোশাক কারখানায় চাকুরী নেয়। কারখানার পাশে ইটাখোলা গ্রামের নূর মিয়ার বাড়ি ভাড়া নিয়ে আম্বিয়া কয়েকজন নারী শ্রমিককে নিয়ে বসবাস করতেন। সেখানেই অপর দুই ভাড়াটিয়া রিক্সাচালক ফারুক মিয়া ও রঙ্গু মিয়ার সঙ্গে আম্বিয়া পরকিয়ায় জড়িয়ে পড়েন।
গত রবিবার সন্ধ্যায় আম্বিয়ার স্বামী নুরুল ইসলাম নোয়াপাড়ায় তার ভাড়া বাসায় জাতীয় পরিচয়পত্র নিতে এসে রাত্রিযাপন করে। কিন্তু আম্বিয়া স্বামীর সঙ্গে না থেকে সহকর্মী শাহেনা, শাবেনা, রেজিয়া ও সালেহাকে নিয়ে পাশের একটি কক্ষে ঘুমাতে যায়। গভীর রাতে আম্বিয়া চুপিসারে প্রেমিক রিক্সাচালক ফারুক মিয়ার সঙ্গে অনৈতিক কাজে লিপ্ত হয়। স্বচক্ষে এ ঘটনা নুরুল ইসলাম দেখে চিৎকার-চেচামেচি শুরু করেন। তিনি ফারুক ও আম্বিয়ার সঙ্গে ঝগড়ায় লিপ্ত হন।
এক পর্যায়ে আম্বিয়া, ফারুক ও রঙ্গু মিযা মিলে কৌশলে নুরুল ইসলামকে ঘরে ঢুকিয়ে গলায় ওড়না পেচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। ভোর ৪টায় শাহেনা ও শাবেনা আম্বিয়াকে ঘরে না পেয়ে পার্শ্ববর্তী ঘরে গিয়ে নুরুল ইসলামের মৃত দেহ মেঝেতে পড়ে থাকতে দেখে। তারা আম্বিয়ার কাছে নুরুল ইসলামের মৃত্যুর কারণ জানতে চাইলে ফারুক ও রঙ্গু মিয়া হুমকি দিয়ে এ ব্যাপারে কথা না বলতে নিষেধ করে। বললে ক্ষতি হবে বলেও হুমকি দেয় তারা।
পরে ফারুক ও রঙ্গু মিলে রিক্সায় করে নুরুলের লাশ বাড়ির পশ্চিমে অর্ধ কিলোমিটার দূরে ফেলে রাখে। সোমবার সকালে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে। পুলিশ সন্দেহভাজন হিসেবে আম্বিয়াকে গ্রেফতার করে।