মাধবপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে : নানা সংকটে চিকিৎসা সেবা ব্যাহত

pic-madhabpur-haspatalহামিদুর রহমান,মাধবপুর থেকে ॥ হবিগঞ্জেন মাধবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেক্স’এ বেশ কয়েক বছর আগে ৫০ শয্যায় উন্নতি হলেও জনবল সংকটের কারনে হাসপাতালের চিকিৎসা সেবা ব্যাহত হচ্ছে। বাড়েনি সেবার মান। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক, নার্স, টেকনিশিয়ানসহ অনেকগুলো পদ শূন্য রয়েছে। হাসপাতালে ডাক্তারের ২১টি পদের মধ্যে ১৩ জন থাকলেও ২ জনকে সিভিল সার্জনের মৌখিক নির্দেশে জেলা সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। জনবল সংকটের অজুহাতে হাসপাতালের নতুন ভবনে শিশু ওয়ার্ড ও অপারেশন থিয়েটার চালু করা যাচ্ছে না। ফলে চিকিৎসা সেবা ব্যাহত হচ্ছে মারাতœক ভাবে। র্দীঘদিন ধরে মেডিকেল টেকনিশিয়ান (ল্যাব) ৩ জন, এক্সরে ১জন, ফার্মাসিষ্ট ২জন, নিরাপত্তা প্রহরী ১জন বাবুর্চি ১ জন, নার্স ৭ জনের পদ শূন্য রয়েছে। ল্যাব ও এক্স-রে বিভাগে কোন লোক না থাকায় এক্সরে, রক্ত, ইসিজিসহ বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা বাইরের ডায়গনষ্টিক থেকে করতে হয়। এছাড়া প্রধান সহকারী, হিসাব রক্ষক ও ক্যাশিয়ার ডেপুটেশনে জেলা সদরে অবস্থান করেন অথচ তারা বেতন নিচ্ছেন মাধবপুর স্বাস্থ্য কমপেক্স থেকে।
হাসপাতালে পানির লাইনে ক্রটি থাকায় বিশুদ্ধ পানি পাচ্ছে না রোগীরা। হাসপাতাল সুত্রে জানা গেছে জুনিয়র কনসালটেন্ট (সার্জারি) জুনিয়র কনসালটেন্ট (মেডিসিন) জুনিয়র কনসালটেন্ট (অ্যানেসথেসিয়া) জুনিয়র কনসালটেন্ট (শিশু) জুনিয়র কনসালটেন্ট (কার্ডিলজি) জুনিয়র কনসালটেন্ট (চক্ষু) জুনিয়র কনসালটেন্ট (ইএনটি) জুনিয়র কনসালটেন্ট (চর্ম ও যৌন) সহকারী সার্জন ৪ জন এবং ডেন্টাল সার্জন ১ জন পদ সহ ২১ টি পদের মধ্যে মাত্র ১৩ জন কর্মরত রয়েছে। শুন্য পদ রয়েছে ৮ টি। এর মধ্যে জুনিয়র কনসালটেন্ট শিশু, আশফাক আহাম্মেদ কাগজে পত্রে মাধবপুর হাসপাতালে কর্মরত থাকলেও তিনি শুধু বুধবার মাধবপুর হাসপাতালে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করে প্রতি মাসে এই হাসপাতাল থেকে বেতন সহ অন্যান্য সুবিধা ভোগ করছেন। হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে এতদিন দায়িত্ব পালন করলেও বর্তমানে ছুটিতে বিদেশ রয়েছেন। জুনিয়র কনসালটেন্ট শিশু ডাক্তার আশফাক আহাম্মেদ না থাকায় মাধবপুরে শিশু ওয়ার্ডটি আজ অবধি চালু করা সম্ভব হচ্ছে না। নতুন ভবন নির্মানের পর থেকে এখন পর্যন্ত শিশু ওয়ার্ডটি তালা বন্ধ রয়েছে। হাসপাতালে দাঁতের চিকিৎসার জন্য দামি যন্ত্রপাতি থাকলেও দন্ত চিকিৎসক না থাকায় এ গুলো এখন একটি খালি কক্ষে অযন্ত্রে অবহেলায় পড়ে রয়েছে। হাসপাতলে নার্সের পদ সংখ্যা ১৪ টি। এর মধ্যে কর্মরত রয়েছে ৭ জন। নার্স সংকটের কারনে নতুন ভবনে ওয়ার্ড চালু করা যাচ্ছে না। নতুন ভবনে গর্ভবতি মহিলাদের সিজার, অপরেশনের আধুনিক সুবিধা থাকা সত্ত্বেও সার্জরি ও অ্যানেসথেসিয়া ডাক্তার এবং নার্স না থাকায় অপারেশন থিয়েটার কক্ষটি কার্যত তালা বন্ধ রয়েছে। এতে করে এলাকার দরিদ্র ও অসহায় লোকজন সরকারি চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। মাধবপুর উপজেলা হাসপাতালটি বিজয়নগর, নাসিরনগর উপজেলার পার্শ্ববর্তী এলাকায় হওয়ায় প্রতিদিন এ হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে হাসপাতালের বহিঃ বিভাগে শত শত রোগী ভিড় জমায়। এ ছাড়া ঢাকা সিলেট মহাসড়কের নিকটে হাসপাতালটির অবস্থান হওয়ায় প্রতিদিনই সড়ক দূর্ঘটনার আহত রোগীরা এখানে চিকিৎসা নিতে আসেন। কিন্তু লোকবল ও অর্থপেডিক ডাক্তার না থাকায় সামান্য চিকিৎসা দিয়ে রোগীদের অন্যত্র প্রেরন করা হয় । হাসপাতালে নেই উন্নত মানের ঔষধ। রোগীদের বেশির ভাগ ঔষধ কিনতে হয় বাহির থেকে। বড় ধরনের কোন রোগী আসলেই প্রেরন করা হয় ব্রাক্ষণবাড়িয়া ও হবিগঞ্জে। এ ব্যাপরে জেলা সির্ভিল সার্জন ডাঃ নাসিরউদ্দিন ভূইয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন জনবল সংকটের বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করেছি। আশা করি এ সমস্যা দ্রুত নিরসন হবে।