সিলেটে বিনা দোষে ২২ বছর কারাবাস : অবশেষে জামিন
সুরমা টাইমস ডেস্কঃ সিলেটে বিনা বিচারে ২২ বছর কারাগারে থাকা ফজলু মিয়া ১৯৮ তম হাজিরার দিনে সহপাঠীর জিম্মায় জামিন পেয়েছেন। আজ বুধবার (১৪ অক্টোবর) সকাল ১১টায় সিলেট মুখ্য মহানগর হাকিম জহুরুল হক চৌধুরীর আদালতে এ জামিন দেয়া হয়।
এর আগে ফজলুর নিযুক্ত এডভোকেট জ্যোৎস্না ইসলাম তেতলী ইউনিয়নের সাবেক ইউপি সদস্য ও ফজলুর সহপাঠী কামাল উদ্দিন রাসেলের জিম্মায় জামিন আবেদন করেন।
বেসরকারী সংস্থা ব্লাস্টের সহায়তায় মামলার ধার্য তারিখে আইনজীবি জ্যাত্স্না ইসলাম ফজলু মিয়ার নীজ গ্রামের সাবেক ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য কামাল উদ্দিন রাসেলের জিম্মায় জামিন আবেদন করলে আদালত তাকে জামিন দেন।
১৯৯৩ সালের ১১ জুলাই সিলেট নগরীর কোর্ট পয়েন্ট থেকে মানসিক ভারসাম্যহীন অবস্থায় তাকে আটক পুলিশ। পরে পাগল আইন (মানসিক স্বাস্থ্য আইন) এর ১৩ ধারায় গেফতার দেখিয়ে তাকে জেল হাজতে প্রেরক করা হয়।
এরপর গত ২২ বছরে দুই ফজলু মিয়াকে আদালত জামিন দিলেও কোন নিকট আত্মিয় খোজে না পাওয়া সে মুক্তি পায়নি।
এডভোকেট জ্যোৎস্না ইসলাম জানান, ফজলু মিয়াকে আসামী হিসেবে নয় ভিকটিম হিসেবে বিচারকের কাছে তিনি উপস্থাপন করেছেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে সার্বিক বিষয় বিবেচনা করে বিচারক জামিন মঞ্জুর করেন। আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে উপস্থিত ছিলেন পিপি এডভোকেট সৈয়দ শামিম আহমেদ।
জিম্মাদার কামাল উদ্দিন রাসেল সিলেটটুডে টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ‘দক্ষিন সুরমার তেতলি এলাকার বাসিন্দা ফজলু মিয়াকে অনেক বছর খুঁজেছি। তিন বছর আগে জানতে পাই তিনি মারা গেছেন। এরপর খোঁজাখুজি বন্ধ করে দেই। গত দু’দিন ধরে বিভিন্ন গণমাধ্যমে ফজলুর সংবাদ প্রচার হলে তিনি জীবিত আছেন এ বিষয়ে অবগত হয়ে তার জামিনে আগ্রহী হই।’
ফজলু মিয়ার জীবনের মূল্যবান সময় যারা নষ্ট করেছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার আহ্বান জানান তিনি।
প্রসঙ্গত, কয়েকটি সংবাদ মাধ্যমে ফজলু মিয়ার অসাহায়ত্বের খবর প্রকাশ হলে এটি আলোচনায় উঠে আসে। বুধবার বিকেল ৫টায় ফজলু মিয়ার জিম্মাদার কামাল উদ্দিন রাসেল ও মুক্তিযোদ্ধা বাদশা মিয়াসহ গ্রামের লোকজন সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারের প্রধান ফটক থেকে তাকে গ্রহণ করবেন।