র‌্যাবের তিন কর্মকর্তা গ্রেপ্তার নিয়ে রহস্য

RABসুরমা টাইমস ডেস্কঃ নারায়ণগঞ্জের বহুল আলোচিত সাত অপহরণ ও খুনের ঘটনায় র‌্যাবের সাবেক তিন কর্মকর্তা গ্রেপ্তার নিয়ে রহস্য চলছে। চাকরিচ্যুত লে. কর্নেল তারেক সাঈদ মাহমুদ ও মেজর আরিফ হোসেনকে গ্রেপ্তারের ব্যাপারে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনার একদিনের বেশি সময় পার হলেও এখনও তারা গ্রেপ্তার হননি।
অবশ্য পুলিশ জানিয়েছে, তাদের গ্রেপ্তারে প্রস্তুত পুলিশ। এখন যে কোন সময় তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হবে। ক্যান্টনমেন্ট থানার ওসি আতিকুর রহমান জানান, শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত সাবেক দুই কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তারের কোন নির্দেশনা দেয়া হয়নি।
‌র‌্যাব-১১ এর সাবেক অধিনায়ক লে. কর্নেল (অব.) তারেক সাঈদ মাহমুদ ও মেজর (অব.) আরিফ হোসেনের গ্রেপ্তার সংক্রান্ত প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের চিঠি বৃহস্পতিবার রাতে পাওয়ার কথা স্বীকার করেছেন নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার। বৃহস্পতিবার এ দুই সেনা কর্মকর্তাকে ফৌজদারি আইনে গ্রেপ্তারের অনুমতি দিয়ে চিঠি পাঠায় প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। অকালীন অবসরপ্রাপ্ত নৌবাহিনী কর্মকর্তা ও র‌্যাব নারায়ণগঞ্জ ক্যাম্পের সাবেক কোম্পানি কমান্ডার লে. কমান্ডার মাসুদ রানার চিঠি পায়নি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
তবে পুলিশ জানিয়েছে, মাসুদ রানা বর্তমানে নারায়ণগঞ্জে সপরিবারে বসবাস করছেন। ভাড়া বাসায় থেকে তিনি র‌্যাব-১১ এর দায়িত্ব পালন করতেন।
স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেন, গ্রেপ্তারের ব্যাপারে ডিএমপি কমিশনারসহ সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার ড. খন্দকার মহিদ উদ্দিন বলেন, র‌্যাবের সাবেক তিন কর্মকর্তার গ্রেপ্তারের চিঠি আমরা পেয়েছি। হাইকোর্টের আদেশ পালনে চেষ্টা করা হচ্ছে। এর মধ্যে তারেক সাঈদ ও আরিফ হোসেনকে গ্রেপ্তারে পুলিশ শিগগির অভিযান চালাবে। কখন গ্রেপ্তার করা হবে এমন প্রশ্নের জবাবে পুলিশ সুপার বলেন, আমরা আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিচ্ছি।
সূত্র জানায়, বৃহস্পতিবার রাতে চিঠি পাওয়ার পর পুলিশ সুপার পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনা দেন। পাশাপাশি ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশেরও সহায়তা চাওয়া হয়। সে মোতাবেক পুলিশ গ্রেপ্তার প্রস্তুতি শুরু করেছে।
সূত্র জানায়, তারেক সাঈদ ও আরিফ হোসেনের বাসা ক্যান্টনমেন্ট থানার আওতাধীন বলে ধারণা করা হয়েছিল। তবে ডিএমপি’র গুলশান বিভাগের একজন পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, ঐ দুই কর্মকর্তার বাসা কাফরুল এলাকার মধ্যে। তাদের যে কোন সময় কাফরুল থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হবে। সেখানে থেকে নারায়ণগঞ্জ পুলিশ তাদের নিয়ে যাবে।
নারায়ণগঞ্জের সাত খুনের ঘটনায় জড়িত বলে অভিযোগ ওঠার পর ঐ তিন কর্মকর্তাকে অবসর দেয়া হয়। ৬ মে সেনাবাহিনীর দু’জনকে অকালীন ও নৌবাহিনীর একজনকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়। ১১ মে এই তিন কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তারের নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট।
চট্টগ্রাম নৌ ঘাঁটি থেকে লে. কমান্ডার মাসুদ রানা নারায়ণগঞ্জে র‌্যাব-১১ এর কার্যালয়ে যোগদান করেন। নারায়ণগঞ্জে ভাড়া বাসায় তিনি সপরিবারে থাকেন। তবে তাকে নৌবাহিনী সদর দপ্তর থেকে বাধ্যতামূলক অবসর দেয়ার সময় তার কোন এলপিআর ছিল না। ফলে লে.কমান্ডার মাসুদ রানার সঙ্গে নৌ সদর দফতরের আর কোন সম্পর্ক নেই। এ কারণে মাসুদ রানাকে আটকের ব্যাপারের নৌ সদর দফতর থেকে সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের কাছে কোন চিঠি দেয়া হয়নি। মাসুদ রানার ব্যাপারে তথ্যের জন্য পুলিশ সদর দফতর পৃথক চিঠি পাঠালে বিষয়টি খতিয়ে দেখবে নৌ সদর দফতর।