বড়লেখায় এলজিইডির ২২৮ কিলোমিটার পাকা রাস্তার সোয়াশ’ কিলোমিটারই চলাচল অনুপযোগী

Barlekha-Road-1বিশ্বজিৎ রায়, কমলগঞ্জ প্রতিনিধি : মৌলভীবাজার জেলার বড়লেখা উপজেলার এলজিইডির (স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর) পাকা রাস্তার সিংহ ভাগই জনসাধারনের চলাচল অনুপযোগী। প্রতি চার বছর অন্তর গ্রামীণ পাকা রাস্তা সংস্কারের নিয়ম থাকলেও উপজেলায় এমন অনেক রাস্তা রয়েছে যা ১০/১৫ বছরেও সংস্কার ও মেরামত হয়নি। অযতœ-অবহেলা আর নির্মাণ কাজের শুরুতে নিম্নমানের কাজের ফলে এক/দেড় বছরের মধ্যে একেকটি রাস্তা খানাখন্দ, গর্ত আর ডোবায় পরিনত হয়। বেহাল এসব রাস্তায় চলাচল করতে গিয়ে প্রতিনিয়ত মারাত্মক দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন সকল শ্রেণী পেশার লোকজন। বিশেষ শিক্ষার্থী আর গুরুতর রোগীরা অন্তহীন সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন। নির্মাণ কাজে ঠিকাদাররা চরম অনিয়ম করলেও সংশ্লিষ্ট বিভাগ তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা না নেয়ায় একের পর পর নিম্ন মানের কাজ করে তারা আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছে। আর দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে জনসাধারনকে। উপজেলা এলজিইডি অফিস সুত্রে জানা গেছে, উপজেলার ১০টি ইউনিয়নে কাচা পাকা মিলিয়ে সর্বমোট ৭৯০ কিলোমিটার রাস্তা রয়েছে। এরমধ্যে মাত্র ২২৮ কিলোমিটার পাকা এবং ৫৫১ কিলোমিটার রাস্তা কাচা। ইট সলিং ৯৩ কিলোমিটার এবং আরসিসি রাস্তা রয়েছে মাত্র আড়াই কিলোমিটার। সরেজমিনে তালিমপুর ইউনিয়নের হাকালুকি হাওর রাস্তার শেষ অংশ, সদর ইউনিয়নের গ্রামতলা-ছোটলেখা চা বাগান (মোহাম্মদনগর) রাস্তা, উত্তর চৌমুহনী-জফরপুর রাস্তা, পাখিয়ালা চৌমুহনী-কানুনগোবাজার রাস্তা, বর্নি ইউনিয়নের সৎপুর-কাজিরবন্দ রাস্তা, বর্নি ইউনিয়ন অফিস রাস্তা, দাসেরবাজার ইউপির ঈদগাহবাজার-অহিরকুঞ্জি রাস্তা, ঈদগাহবাজার-নিজবাহাদুরপুর ইউপি অফিস রাস্তা, চান্দগ্রাম-মাইজগ্রাম রাস্তা, সুজাউল-সুনাইনদী রাস্তা, কাঠালতলী-তেরাকুড়ি রাস্তা, রতুলীবাজার সৈয়দ ইয়াকুব শাহ মাজার রাস্তা, রতুলীবাজার-হরিপুর রাস্তা, দক্ষিণভাগ টিলাবাজার-কামিলপুর রাস্তা, দক্ষিণভাগ-কলাজুরা, উত্তর শাহবাজপুর-কুমারসাইল রাস্তাসহ উপজেলার অন্তত ৩৬ টি রাস্তার বেহাল অবস্থার চিত্র লক্ষ্য করা গেছে। অনেক আগেই এসব রাস্তার পিচ উঠে গেছে। পাথর আর কংক্রিট উঠে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এসব রাস্তার কিছু অংশে যানবাহন চলাচলতো দুরের কথা পায়ে হেটেও চলাচল করা দুরুহ ব্যাপার। লোকজন বাধ্য হয়ে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে গিয়ে দুর্ঘটনায়ও পড়েন। নির্ভরযোগ্য সুত্র জানায়, উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তরের দুর্বল তদারকির কারনে ঠিকাদাররা নিম্নমানের কাজ করে পার পেয়ে যায়। এতে রাস্তার নির্মাণ কাজ শেষ না হতেই ভাঙ্গন দেখা দেয়। সম্প্রতি উপজেলার দক্ষিণভাগ (দঃ) ইউনিয়নের কলাজুরা-নিউ সমনবাগ চা বাগান রাস্তার মেরামত কাজে ঠিকাদার চরম অনিয়ম করায় কাজ শেষের তিনমাসের মধ্যেই এ রাস্তার বিভিন্ন স্থানের পিচ ও কংক্রিট উঠে গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। ভুক্তভোগীরা জানান, ঠিকাদার সিডিউল মোতাবেক কাজ করলে জনগনকে দুর্ভোগ পোহাতে হত না। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সুত্র জানায় উপজেলা প্রকৌশলীর কমিশন বাণিজ্যের কারনে ঠিকাদাররা নিম্ন মানের কাজ করেও পার পেয়ে যায়। কাজে চরম অনিয়ম করলেও তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমুলক কোন ব্যবস্থা নেয়া হয় না। উপজেলা প্রকৌশলী বিদ্যুৎ ভুষন পাল জানান, বরাদ্দ না থাকায় রাস্তাগুলোর সংস্কার কাজ বিলম্বিত হচ্ছে। তবে ইতিমধ্যে কয়েকটি রাস্তার সংস্কার কাজের টেন্ডার হয়েছে। কোন ঠিকাদার নিম্নমানের কাজ করে থাকলে তার জামানত আটকে দেয়া হবে।