সুফিয়ান চাচাকে যে ভাবে দেখেছি…

Keya Chowdhury with Sufiyan Chowdhuryসিলেট আওয়ামীলীগ পরিবারে আজ, আমরা একজন অভিবাভক হারিয়েছি। আমাদের বর্ষীয়ান নেতা জনাব আব্দুস জহির চৌধুরী সুফিয়ান, সিলেটের প্রবীন রাজনীতিবিদ ও আওয়ামীলীগ ঘরোয়ানার সিলেটের রাজনীতির দূর্দিনের কাণ্ডারী। যার সবচেয়ে বড় পরিচয়, তিনি একজন সজ্জন ব্যক্তিত্ব ও পরিচ্ছন্ন চর্চার রাজনীতিবিদ ছিলেন। সিলেটের মহিলা এম.পি হবার বেশ আগে থেকেই সুফিয়ান চাচার সাথে আমার যোগাযোগ ছিল। বিশেষ করে, ভাষা আন্দোলনে সিলেটের ভূমিকা, মহান মুক্তিযুদ্ধে সিলেটবাসির ত্যাগ- এসকল বিষয়ে তার সমৃদ্ধ অভিজ্ঞতা প্রিয় মানিক ভাইয়ের মেয়ে হিসেবে সহসাই আমাকে তার কাছে যাবার ও তথ্য পাবার পথটি সুগম করেছে। এসব ক্ষেত্রে কখনই তাকে নিজেকে জাহির করা, বা অতিরঞ্জিত তথ্য প্রদানে অতিউৎসাহি হতে দেখি নি। ‘চেতনায় ৭১ হবিগঞ্জ’ এর একজন তথ্য সংগ্রহকারী হিসেবে সুফিয়ান চাচার বাসায় আমি যতবার গিয়েছি, সুফিয়ান চাচা এবং চাচির কাছ থেকে মহান মুক্তিযুদ্ধে আমার প্রয়াত পিতা কমান্ডেন্ট মানিক চৌধুরীর অনেক দূর্লভ ও অপ্রকাশিত তথ্য আমি তাদের দু’জনের কাছ থেকে জানতে পেরেছি। হবিগঞ্জ-সিলেট এর দায়িত্ব প্রাপ্ত মহিলা এম.পি হিসেবে দায়িত্ব নেবার পর, সিলেট জেলা পরিষদের প্রশাসক হিসেবে জনাব সুফিয়ান চৌধুরীর কাছ থেকে আমি যে সহযোগিতা পেয়েছি, এক কথায় তা অতুলনীয়। আওয়ামীলীগের একজন কর্মী হিসেবে সিলেট জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি জনাব আব্দুস জহির চৌধুরী সুফিয়ান সাহেবের সাথে আমার যতবার দেখা করার সুযোগ হয়েছে, ততবারই আমি বিস্ময়ের সাথে একটি বিষয় আবিস্কার করেছি সেটি হল, একজন আওয়ামীলীগের সিনিয়র বর্ষীয়ান নেতা ও মাঠ পর্যায়ের কর্মীর মাঝে ব্যাক্তি সম্পর্কের গভীর দৃঢ় সম্পর্ক। অর্থাৎ, সিলেট জেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি তার দলের প্রতিটি কর্মীকে যে ভাবে সন্মান এবং মূল্যায়ন করতেন, আন্তরিক ভালবাসার বন্ধনে যে ভাবে তিনি আবদ্ধ করতেন, তার মধ্য দিয়েই নেতা সুফিয়ান চৌধুরীর প্রতি কর্মীদলের আস্থা, শ্রদ্ধা, তথা বিশ্বাস স্থাপনে খুব বেশি সময় নিতে হত না আওয়ামীলীগ আদর্শের নেতাকর্মীকে। সিলেট জেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি জনাব আব্দুস জহির চৌধুরী সুফিয়ান তার গোটা জীবন দিয়ে একজন সজ্জন, নির্লোভ ও নিবেদিত রাজনীতিবিদ হিসেবে, আমাদের সামনে একটি সামনে একটি টেকসই অবস্থান তৈরি করে গেছেন। নিঃসন্দেহে, আজকে তার মৃত্যুর সংবাদে একজন সৎ, সজ্জন ও ভাল মানুষ হিসেবে দিকে দিকে সুফিয়ান চৌধুরীকে নিয়ে যে আলোচনা, তা নতুন প্রজন্মের কাছে একটি নতুন বার্তা বয়ে আনবে বলে, আমি বিশ্বাস করি। আমরা যেন ব্যাক্তি সুফিয়ান চৌধুরীর মহৎ গুনগুলি আদর্শ হিসেবে আমাদের জীবনে প্রতিষ্ঠিত করতে পারি। তবেই কর্মী হিসেবে, সিলেট জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আবদুস জহির চৌধুরী সুফিয়ানের প্রতি আমাদের প্রকৃত শ্রদ্ধা নিবেদন সার্থক হবে। আব্দুস জহির চৌধুরী সুফিয়ান চাচার বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করে, শুধু এইটুকুই বলি, ‘সুফিয়ান চাচা আপনি যেখানেই থাকুন, চিরশান্তি, বারতা ও আল্লাহর পূর্ন সন্তুষ্টিতে জান্নাতবাসি হোন’। আমিন।

এডভোকেট আমাতুল কিবরিয়া কেয়া চৌধুরী (এমপি)