রানা প্লাজা ট্র্যাজেডি : পুলিশকে ব্যবহার করে এ কেমন প্রতারণা !

sabinaসুরমা টাইমস ডেস্কঃ রানা প্লাজা ট্র্যাজেডিতে নিখোঁজ সাবিনার পরিবার প্রতারণার শিকার হয়েছেন। ভবন ধসের একবছর দুইদিন পর নিখোঁজ সাবিনা জীবিত আছে বলে একটি প্রতারক চক্র পুলিশের মাধ্যমে তার পরিবারের সাথে যোগাযোগ করে। মেয়েকে ফিরিয়ে আনার জন্য সাবিনার বাবা, চাচা, বোন ও ভগ্নিপতি সোমবার ঢাকায় পৌঁছে প্রতারণার বিষয়টি বুঝতে পারেন।
চৌগাছা থানার এএসআই আব্দুল কুদ্দুস হাওলাদার জানান, গত শনিবার রাতে কর্নেল মাসুদ হাসান পরিচয় দিয়ে জনৈক ব্যক্তি রানা প্লাজা ট্র্যাজেডির শিকার সাবিনা বেঁচে আছেন এবং সিএমএইচে চিকিত্সাধীন আছেন বলে জানান। এজন্য সাবিনার পরিবারকে তার সাথে যোগাযোগ করে দেয়ার জন্য বলেন। থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এ বিষয়ে তাকে দায়িত্ব দিলে তিনি চৌগাছা উপজেলার নারায়ণপুর ইউনিয়নের গুয়াতলী গ্রামের কৃষক সাবিনার পিতা মঈনউদ্দীন ও তার পরিবারের সাথে যোগাযোগ করেন। রবিবার সকালে সাবিনার পরিবার চৌগাছা থানায় আসলে তিনি ওই ব্যক্তির সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করে দেন। প্রতারক চক্রটি দ্রুত ঢাকায় যেয়ে দেখা করতে বলে। যাবার সময় ইউনিয়ন পরিষদ এবং উপজেলা প্রশাসনের প্রত্যয়নপত্র সাথে নিয়ে যেতে বলে।
ওই দিনই ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুষমা সুলতানা তাদের পরিচয় নিশ্চিত করে প্রত্যয়নপত্র প্রদান করেন। রাতেই তারা ঢাকায় রওনা হন। সোমবার ঢাকায় পৌঁছানোর পর থেকেই প্রতারক চক্রের ব্যবহূত নম্বর দুইটিই (০১৮১১-২৫৫৪৩২ ও ০১৯৫৫-৭৬৯৯১৮) বন্ধ পাওয়া যায়। গতকাল দিনভর চেষ্টার পর বিকাল ৪টায় একজন আত্মীয়ের মাধ্যমে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে যেয়ে সাবিনার পরিবার তার সন্ধান পেতে ব্যর্থ হন। সেনা সদস্য কর্পোরাল রুহুল আমীন পরিচয়দানকারী ওই আত্মীয় জানান, মেয়েকে নতুন করে ফিরে পাবার আশায় বুক বেঁধে থাকা সাবিনার বাবা ও পরিবারের অন্য সদস্যরা কাল সারাদিন শুধু চোখের পানিই ফেলেছেন। তিনি জানান, সোমবার রাতেই তারা যশোরে রওনা হবেন।
চৌগাছা থানার এএসআই আব্দুল কুদ্দুস হাওলাদার আরো জানান, পুলিশের ওপর ভর করে এ ধরনের প্রতারণার ঘটনা তিনি তার চাকরি জীবনে দেখেননি। চৌগাছা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুষমা সুলতানা জানান, সাবিনার বাবার কথা বিশ্বাস করে তিনি তার পরিচয় শনাক্তের প্রত্যয়ন দেন; কিন্তু আজই (সোমবার) জানতে পেরেছেন তারা প্রতারণার শিকার হয়েছেন।
প্রকাশিত খবরের প্রতিবাদ
এদিকে গতকাল “রানা প্লাজা ট্র্যাজেডি : এক বছর পর জানা গেল সাবিনা বেঁচে আছেন!” শীর্ষক খবরের প্রতিবাদ জানিয়েছে জাতীয় ফরেনসিক ডিএনএ প্রোফাইলিং ল্যাবরেটরী। গতকাল ল্যাব প্রধান অধ্যাপক ড. শরীফ আক্তারুজ্জামান স্বাক্ষরিত এক প্রতিবাদলিপিতে বলা হয়, ল্যাবরেটরীতে রানা প্লাজা দুর্ঘটনায় নিহত অশনাক্তকৃত ৩২২ জন শ্রমিকের ডিএনএ নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এর মাধ্যমে যে ২০৬ জনকে শনাক্ত করা হয়েছে তাদের তালিকায় কখনই সাবিনার নাম ছিল না। এ ধরনের খবর জনমনে বিভ্রান্তির সৃষ্টি করতে পারে এবং তাদের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করতে পারে বলে ল্যাব মনে করে। তথ্যসূত্রঃ বিডিইনডেক্স২৪