রাজন হত্যা : ছেলেকে পুলিশের হাতে তুলে দিলেন বাবা

ছেলে তাজউদ্দিন আহমদ বাদলকে নিজে পুলিশের হাতে তুলে দিচ্ছেন তার বাবা সুলতান আহমদ
ছেলে তাজউদ্দিন আহমদ বাদলকে নিজে পুলিশের হাতে তুলে দিচ্ছেন তার বাবা সুলতান আহমদ

সুরমা টাইমস ডেস্কঃ শিশু সামিউর রহমান রাজন হত্যার সাথে সম্পৃক্ত থাকার দায়ে অভিযুক্ত তাজউদ্দিন আহমদ বাদল নামে এক যুবককে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছেন তার বাবা। বুধবার রাত ১০ টার দিকে কুমারগাওয়ের শেখপাড়া এলাকার বাসিন্দা সুলতান আহমদ এলাকাবাসীর সহযোগীতায় তার ছেলে বাদলকে পুলিশের হাতে তুলে দেন।
এরআগে এই হত্যা মামলার অন্যতম আসামী দারোয়ান ময়নাকে তার মা পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছিলেন। এছাড়া জনতা আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দেয় আরো ৪ আসামীকে।
এই হত্যা মামলায় ইতোমধ্যে আদালতে সাক্ষ্য দেওয়া ৪ আসামীর মধ্যে একাধিকজনের জবানবন্দিতে রাজন হত্যা সম্পৃক্ততায় বাদলের নাম উঠে আসে। সে পলিটেকনিক্যাল ইনষ্টিটিউটে পড়াশুনা করতো।
জানা যায়, জবানবন্দিতে তাজউদ্দিন আহমদ বাদলের নাম উঠে আসার পর পুলিশ শেখপাড়া এলাকায় গিয়ে বাদলকে পুলিশের হাতে তুলে দিতে অনুরোধ করেন। এরপ্রেক্ষিতে বুধবার সন্ধ্যায় বাদলের বাবা সুলতাম আহমদ বাড়িতে ডেকে নিয়ে আসেন। এসময় এলাকাবাসীর সহযোগীতায় তিনি নিজের ছেলেকে পুলিশের হাতে তুলে দেন।
জালালাবাদ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আখতার হোসেন শেখপাড়া এলাকায় গিয়ে বাদলকে গ্রেফতার করে নিয়ে আসেন। এসময় সড়কে বিপুল সংখ্যক জনতা জড়ো হয়। বাবা-ছেলের কান্নায় এক আবেঘময় পরিবেশের সৃষ্টি হয়।
বাবা সুলতান আহমদ অশ্রুসজল চোখে নিজের ছেলেকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়ার সময় ন্যায় বিচার প্রার্থনা করে বলেন, আমার ছেলে দোষি হলে তার শাস্তি হোক।
পুলিশ ভ্যানে ওঠার আগে বাবার পায়ে হাত দিয়ে সালাম করে বাদল নিজেকে নির্দোষ হিসেবে দাবি করে। পুলিশ গ্রেফতার করে নিয়ে যাওয়ার সময় বাদল জানায়, সে কুমারগাওয়ে মুহিত ও কামরুলের আরেক ভাই শামীমের মালিকানাধীন ওয়ার্কশপে কাজ করে।
রাজনকে হত্যার দিন সকাল ১১ টার দিকে সে ঘটনাস্থলে যায় উল্লেখ করে বাদল মিয়া জানায়, এসময় রজন প্রায় মৃত অবস্থায় পড়েছিলো। তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য ওয়ার্কশপে রাখা একটি মাইক্রেবাসের চাবি এনে দিতে কামরুল নির্দেশ দিলে চাবি এনে দেয় বাদল।
জালালাবাদ থানার ওসি আখতার হোসেন জানান, বাদলকে গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। আলোচিত এই হত্যাকান্ডের ঘটনার এ পর্যন্ত এক নারীসহ ১১ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এরমধ্যে মুহিত আলম, ময়না, দুলাল আহমদ, নুর মিয়া এবং প্রত্যক্ষদর্শী আজমত ও ফিরোজ আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেছে।
রাজন হত্যার প্রধান আসামী সৌদি আরবে আটক কামরুল ইসলামকেও ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।