নবজাতকের নাম ‘সংঘর্ষ’ রাখলেন বিশ্বনাথের ওসি!
সুরমা টাইমস ডেস্কঃ বিশ্বনাথে সংঘর্ষে আহত অন্তঃসত্বা হাফসা বেগমের নবজাতকের নাম রাখা হয়েছে ‘সংঘর্ষ’। নামটি রেখে দিয়েছেন বিশ্বনাথ থানার ওসি। তবে, নবজাতকের পরিবার এই নাম গ্রহণ-বর্জন করেছেন কি না বা আকিকার সময় ভালো কোনো নাম রাখা হবে কিনা সেটি জানা যায়নি। এদিকে নেতিবাচক শব্দ নাম হিসেবে ব্যবহার না করার পরামর্শ দিয়েছেন এক শীর্ষ মুফতি (ইসলামি আইন বিশেষজ্ঞ)।
জানা গেছে, শনিবার দুপুরে বিশ্বনাথ উপজেলার রামপাশা গ্রামের অন্তঃসত্বা গৃহবধূ হাফসা বেগম প্রসব ব্যথা নিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হন। এরপর তার ভাই তুরন মিয়া চিকিৎসকদের ব্যবস্থাপত্র নিয়ে স্বাস্থ্য কমপ্রেক্স সংলগ্ন শাহনুর মিয়ার ফার্মেসি থেকে ওষুধ আনেন। শাহনুরের লোকজন ভুল ওষুধ দেয়ায় সেটি পাল্টে আনতে বলেন চিকিৎসকরা। ওষুধ বদলাতে গিয়ে ফার্মেসির মালিক শানুর মিয়ার সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয় তুরন মিয়ার। এ সময় শানুর মিয়ার লোকজন তুরণ মিয়াকে মারধর করেন। একপর্যায়ে শানুর মিয়া ও তার ভাইসহ কাদিপুর গ্রামের লোকজন হাসপাতাল অভ্যন্তরে গিয়ে হামলা চালান। হামলায় হাফসাসহ অন্য নারী রোগীরাও আহত হন। গুরুতর আহত হন অন্তঃসত্বা হাফসা। তার উপর কপাল ফেটে গড়াতে থাকে রক্ত। এই অবস্থায় সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতেল তাকে নিয়ে আসা হয়। এখানেই তার নবজাতক ছেলের জন্ম হয়। সংঘর্ষের পর ওসমানী হাসপাতালে হাফসা বেগমের ছেলে জন্মানোর খবর ছড়িয়ে পড়ে এলাকায়।
এদিকে, রামপাশা গ্রামের লোকজন ফিরে গিয়ে মসজিদে মাইকিং করলে ওই এলাকার লোকজন সংঘবদ্ধ হয়ে কাদিরপুরে আসেন। তখন দুই গ্রামের লোকজনের মধ্যে সংঘর্ষ বেধে যায়। এতে উভয়পক্ষের অর্ধশতাধিক আহত হন।
বিশ্বনাথ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম বলেন, ওরা অন্তঃসত্বা গৃহবধূর ওপর হামলা করেছে। ঘটনাটি শুনে খুবই খারাপ লেগেছিল। তিনি বলেন, অন্তঃসত্বা হাফসার গুরুতর অবস্থা নিয়ে চিন্তিত ছিলাম। একারণে ক্ষোভ নিয়ন্ত্রণ করতে পারেননি জানিয়ে বলেন, যখন শুনেছি তার সন্তান হয়েছে এবং তিনি সুস্থ আছেন, তখন আমি নিজে থেকেই নবজাতকের নাম রেখেছি সংঘর্ষ। কারণ সংঘর্ষের মধ্য দিয়েই পৃথিবীতে আগমন ঘটেছে তার।
এ ব্যাপারে সিলেটের শীর্ষ স্থানীয় মুফতি জামেয়া মাদানিয়া ইসলামি কাজির বাজার মাদরাসার শিক্ষাসচিব মাওলানা শফিুর রহমান বলেন, মুসলিম শিশুদের নাম রাখার ব্যাপারে ইসলামে দিকনির্দেশনা দেয়া আছে। সুন্দর ও অর্থবহ এবং ইতিবাচক নাম রাখতে বলা হয়েছে। রাসূল (সা.) এর যুগে যেসব সাহাবির নেতিবাচক ও খারাপঅর্থসূচক নাম ছিল সেগুলো পাল্টে অর্থবহ নাম রাখার দৃষ্টান্ত টেনে বলেন, নেতিবাচক নামের নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। তাই এই নবজাতকেরও সুন্দর ও অর্থবহ নাম রাখা উচিত।