কুলাউড়ার ঝিমাই পুঞ্জি ও ঝিমাই চা-বাগান সংক্রান্ত বিরোধের মানবিক সমাধান চেয়েছেন নাগরিক প্রতিনিধি দল

Jhimai Punjiমশাহিদ আহমদ, মৌলভীভাজারঃ খাসিয়া জনগোষ্টির জমি দখলসহ হয়রানীতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন মানবাধিকার কর্মী, শিক্ষকসহ সুশিল সমাজের একটি নাগরিক প্রতিনিধি দল। মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়া উপজেলার ঝিমাইপুঞ্জি সফর শেষে প্রতিনিধি দলটি বিভিন্ন গণমাধ্যমের কাছে এ উদ্বেগ প্রকাশ করেন। কুলাউড়া উপজেলার ঝিমাইপুঞ্জি ও ঝিমাই চা-বাগানের মধ্যকার বিরোধের মানবিক সমাধান চেয়ে প্রতিনিধি দল মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসকের সাথে দেখা করে তাঁদের মতামত উপস্থাপন করেছেন। এর আগে গত ৩০ জুন তারা ঝিমাইপুঞ্জির আদিবাসী এবং ঝিমাই চা-বাগান কর্তৃপক্ষের সাথে মতবিনিময় করেন। নাগরিক প্রতিনিধি দলে ছিলেন ঐক্য ন্যাপের সভাপতি ও প্রবীণ রাজনীতিবিদ পংকজ ভট্টাচার্য্য, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্ট্রি জিয়া উদ্দীন তারিক আলী, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক রাজীব মীর, গণমাধ্যমকর্মী নোমান চৌধুরী, জনসংহতি সমিতির সদস্য দীপায়ন খীসা, বাপা’র কেন্দ্রীয় সদস্য ফাদার যোসেফ গোমেজ, সিলেট বিভাগীয় আদিবাসী ফোরামের সভাপতি গৌরাঙ্গ পাত্র, আদিবাসী নেত্রী বাবলী তালাং, আদিবাসী ফোরাম নেতা রিপন বানাইক প্রমূখ। প্রতিনিধি দল সূত্রে জানা গেছে, আদিবাসী খাসিয়াদের গ্রাম ঝিমাই পুঞ্জি ও ঝিমাই চা-বাগানের মধ্যে ভূমি নিয়ে বিরোধ চলছে। ঝিমাই চা-বাগান কর্তৃপক্ষ চা-বাগান স¤প্রসারণের উদ্যোগ নিলে আদিবাসী খাসিয়াদের মধ্যে উচ্ছেদ আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে। ঝিমাইপুঞ্জির আদিবাসীরা মনে করছেন দীর্ঘদিন ধরে তাঁরা ঝিমাইপুঞ্জিতে বংশ পরম্পরায় বসবাস করে আসছেন। এখন ভোগদখল থেকে চা-বাগান কর্তৃপক্ষ তাঁদের উচ্ছেদ করে দিতে চাইছে। আদিবাসীদের আতঙ্ক কাটাতে ও এই বিরোধের একটি মানবিক সমাধানের লক্ষ্যে প্রতিনিধি দল ঝিমাইপুঞ্জির আদিবাসী, চা-বাগান কর্তৃপক্ষ ও জেলা প্রশাসকের সাথে মতবিনিময় করেছেন। ঐক্য ন্যাপের সভাপতি পংকজ ভট্টাচার্য বলেন, ‘আদিবাসী জনগোষ্ঠী প্রকৃতির মধ্যে বাস করেন। গাছের মধ্যে পান চাষ করেন। চা-বাগান স¤প্রসারণের নামে তাঁদের উচ্ছেদ করা হবে মনে করে তাঁদের মধ্যে আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে। ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি হয়েছে।’ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক রাজীব মীর বলেন, ‘আতঙ্কের কথা শুনে আমরা এসেছি। তবে পাল্টাপাল্টি কিছু না। এটা সমাধানের একটা সূত্র খোঁজতে এসেছি। বাগান স¤প্রসারণের নামে যেন তাঁরা উচ্ছেদ না হয়। সমাঝোতার মাধ্যমে প্রথাগত অধিকার নিয়ে তাঁরা থাকতে পারে। মানবিক দৃষ্টিভঙ্গীতে যেন আইনের প্রয়োগ হয়। কোনোরকম সংঘাত যাতে না হয় এজন্য সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। আমরা এর একটি মানবিক সমাধান চাইছি। এসে ভালোই হয়েছে।’ মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক মো. কামরুল হাসান বলেন, ‘প্রতিনিধি দল ঝিমাইপুঞ্জির ব্যাপারে কথাবার্তা বললেন। তাঁরা দূর থেকে একপক্ষের কথা শুনেছেন। বাস্তবতা শুনলেন। আমি প্রতিনিধি দলকে বলেছি উচ্ছেদ করলেতো ডিসিই করবে। এখন পর্যন্ত তাঁদেরকে তো কেউ উচ্ছেদের কথা বলেনি বা উচ্ছেদের নোটিশ দেয়নি। তাঁদের উচ্ছেদ আতঙ্কের কারণ নেই।’