সুষ্ঠু নির্বাচন হলে দেশের মানুষ আ.লীগকে জুতা মারবে
সুরমা টাইমস ডেস্কঃ বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া বলেছেন, ‘লুটপাট, দুর্নীতির বিচারের ভয়ে নিবার্চন দিতে ভয় পায় আওয়ামী লীগ। ক্ষমতাসীনরা এতো খুন-খারাবি, লুটপাট করছে সে কারণে মানুষের ভয়ে নিবার্চন দিতে চায় না। তারা জানে সুষ্ঠু নিবার্চন দিলে মানুষ কীভাবে প্রত্যাখ্যান করবে, সিটি করপোরেশন নিবার্চনে তা দেখিয়ে দিয়েছে। সুষ্ঠু নিবার্চন হলে মানুষ সত্যিকারের জবাব দেবে। তারাও জানে তাদের ভরাডুবি হবে। দেশের মানুষ তাদের জুতা মারবে।’
বৃহস্পতিবার রাজধানীর পূর্বাণী ইন্টারন্যাশনাল হোটেলে ইসলামী ঐক্যজোট আয়োজিত ইফতার পার্টিতে এসব কথা বলেন তিনি। এই ইফতার পার্টিতে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখছিলেন বেগম জিয়া।
মানবপাচারের ঘটনায় দেশের ভাবমূতি ক্ষুণ্ণ হচ্ছে এবং এতে আওয়ামী লীগের লোকেরা জড়িত রয়েছে বলে অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘শুধু ঢাকা শহর দিয়ে বিবেচনা করলে হবে না। আমরা যারা ঢাকা শহরে থাকি তারা কোনো রকম আছে। গ্রামের কথা চিন্তা করুন। তারা বিচার পাচ্ছে না। অসহায় জীবনযাপন করছেন। বিদেশ যাওয়ার চেষ্টা করছে। এয়ারপোর্ট থেকে যেতে না পেরে জাহাজে করে যেতে চেষ্টা করে। এখানেও আওয়ামী লীগের দালাল ও পুলিশ জড়িত রয়েছে। সাগরে ভাসছে, কোথাও জায়গায় পাচ্ছে না। বাংলাদেশেও তাদের জায়গা নেই। দেশের মানুষ বিদেশে গিয়ে মরছে।’
ইফতারের আগে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে খালেদা জিয়া বলেন, ‘বিদেশিরাও বলছে বাংলাদেশে গণতন্ত্র নেই, অতিদ্রুত আলোচনার মাধ্যমে একটি নির্দলীয় সরকারের অধীনে সবার কাছে গ্রহণযোগ্য নিবার্চনের ব্যবস্থা করার জন্য। কিন্তু ক্ষমতাসীনরা এত লুটপাট করেছে, মানুষের ভয়ে এখন নিবার্চন দিতে ভয় পায়।’
তিনি বলেন, ‘দেশ আজকে কারাগারে পরিণত হয়েছে। সাধারণ মানুষ, বিএনপি ও ২০ দলের নেতাকর্মীরা কারাগারে বন্দি। আর আওয়ামী লীগের লোকেরা যতই চুরিচামারি করুক, তারা বহাল তবিয়তে আছেন।’
তিনি আরো বলেন, ‘বিচারবিভাগ দলীয়করণ করা হয়েছে। সুবিচার পাওয়া যায় না। বিএনপি ও ২০ দলের নেতাকর্মীদের জেলে পুড়ে মরতে হয়। আওয়ামী লীগের লোকেরা ফ্রি থাকে তাদের জেলে দেয়া হয় না। আর তাদের মন্ত্রীরা লুটপাট করছে। তাদের এগুলো কী অপরাধ নয়? তারা আওয়ামী লীগের লোক বলে মাফ পেয়ে যায়।’
বিএনপিপ্রধান বলেন, ‘মহিলারা ঘরে বাইরে কোথাও নিরাপদ নয়। আমরা চাই দেশের মানুষ ভালো থাকুক, নিরাপদে থাকুক।’
ইসলামী ঐক্য জোটের চেয়ারম্যান মাওলানা আবদুল লতিফ নেজামীর সভাপতিত্বে দোয়া ও ইফতার মাহফিলে পাকিস্তানের ডেপুটি হাই কমিশনার সামিনা মেহতাব, জোট শরিকদের মধ্যে জামায়াতে ইসলামীর আমিনুল ইসলাম, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান কাজী জাফর আহমেদ, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা) শফিউল আলম প্রধান, কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ মুহাম্মদ ইব্রাহীম, বাংলাদেশ ন্যাপের চেয়ারম্যান জেবেল রহমান গানি, লেবার পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, মুসলিম লীগের সভাপতি এএইচএম কামরুজ্জামান, এনডিপি চেয়ারম্যান খোন্দকার গোলাম মোর্ত্তজা, ডেমোক্রেটিক লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইফুদ্দিন আহমেদ মনি প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়া লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব শাহদাৎ হোসেন সেলিম, বাংলাদেশ ন্যাপের মহাসচিব খন্দকার গোলাম মোস্তফা ভূইয়া, লেবার পার্টির মহাসচিব হামদুল্লাহ আল মেহেদী, এনডিপির মঞ্জুর হোসেন ঈসা, খেলাফত মজলিসের গোলাম আকবর প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
বিএনপির নেতাদের মধ্যে ইফতারে যোগ দেন- বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ড. আসাদুজ্জামান রিপন, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক খায়রুল কবির খোকন, সহ-দপ্তর সম্পাদক আসাদুল করিম শাহীন, মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক শিরিন সুলতানা প্রমুখ।
ইসলামী ঐক্য জোট নেতাদের মধ্যে অ্যাডভোকেট আবদুল লতিফ, মহাসচিব মুফতি ফয়জুল্লাহ, যুগ্ম সম্পাদক মুফতি মোহাম্মদ তৈয়্যব হোসোইনসহ দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
ইফতারের আগে টেবিলে টেবিলে ঘুরে নেতাকর্মীদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন খালেদা জিয়া। এছাড়া ইফতারের আগে দেশ ও জাতির কল্যাণ কামনা করে মোনাজাত করা হয়।